বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ঈশ্বর কণার দুই সন্ধানীকে
পেয়ে উচ্ছ্বসিত রায়গঞ্জ

শ্বর কণা তথা ‘হিগস-বোসন’ কণার অস্তিত্ব প্রমাণে ঠিক কী ভাবে গবেষণার কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল জেনিভায় সার্ন-এর গবেষণাগারে সুদূর রায়গঞ্জের এক দল ছাত্রছাত্রীর কাছে তা কতটা আকর্ষণীয় হবে? সন্দেহ ছিল সুচন্দ্রা দত্ত ও সুবীর সরকারের। বাস্তবে দেখা গেল, দেড় ঘন্টার স্লাইড শো, ভিডিও ফুটেজ দেখে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত ছাত্রছাত্রীরা। এমনকী, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। শনিবার রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের হলঘরে সকলের উদ্দীপনা দেখে খুশি সুচন্দ্রা দেবী। এই কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্রী তিনি। সুচন্দ্রা দেবী ও তাঁর স্বামী সুবীরবাবু দুজনেই সার্নের গবেষণাগারে হিগস-বোসন কণার অনুসন্ধানের পেছনে কলকাতার সাহা ইনিস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের যে পাঁচ জন নিরন্তর গবেষণা চালিয়েছিলেন তাঁদেরই অন্যতম এই দু’জন।
নিজের কলেজে সংবর্ধনা নিতে হাজির হলেও তা নিছক আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি সুচন্দ্রাদেবী। এ দিন রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের হলঘরে আয়োজিত প্রায় দু ঘন্টার একটি সেমিনারে তাঁরা তাঁদের নিজস্ব ল্যাপটপ ও প্রোজেক্টরের মাধ্যমে শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের বোঝানোর চেষ্টা করেন এই গবেষণার কথা। সুবীরবাবু জানান, দীর্ঘ চার দশক ধরে বিশ্বের প্রায় তিন হাজার বিজ্ঞানী কী ভাবে হিগস-বোসনের অস্তিত্ব প্রমাণের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। তবে আবিষ্কার হওয়া ওই কণা বোসন গ্রুপের হলেও তা ‘হিগস-বোসন’-ই কিনা সেই ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা অবশ্য একশো ভাগ নিশ্চিত নন। তবে সেটিকে হিগস-বোসন ধরে নিয়েই নতুন করে গবেষণা শুরু হয়েছে।
সুচন্দ্রা দত্তকে সংবর্ধনা। ছবি: তরুণ দেবনাথ
কলেজ সূত্রে খবর, মালদহের বাসিন্দা সুচন্দ্রাদেবী ১৯৮৭ সালে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হন। এর পরে পিএইচডি শেষ করে তিনি পদার্থবিদ্যার সিলিকন ট্র্যাকারের কাজ শিখতে পিসায় পাড়ি দেন। সেখানে সফল হয়ে ১৯৯৩ সালে তিনি সার্নের গবেষক দলের সদস্য হয়ে ঈশ্বর কণার খোঁজে গবেষণা শুরু করেন। গত ৪ জুলাই সার্ন ঘোষণা করে, পাওয়া গিয়েছে, যা তাঁরা খুঁজছিলেন। দিনটি ছিল যেন বিজ্ঞানের ঈশ্বরদর্শনের মতো। শনিবারের সেমিনারে সে দিনের কথাই তুলে ধরলেন বিজ্ঞানী দম্পতি। শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়ারা হাজির ছিলেন সেখানে। বিজ্ঞানী দম্পত্তি তাঁদের নানা প্রশ্নের উত্তরও সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দেন। তাঁরা জানান, এই আবিষ্কারের ফলে বিশ্বের তথ্য-প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত খুলে যাওয়ার পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নও সম্ভব হবে।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেবাশিস বিশ্বাস ও টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক মিলন রায় বলেন, “সুচন্দ্রাদেবী রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী। সুবীরবাবু জলপাইগুড়ি এসি কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। তাঁরা দুজনেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়াশুনা করেছেন। হিগস-বোসন বা ঈশ্বর কণার সন্ধানে তাঁদের গবেষণা সার্থক হওয়ায় রায়গঞ্জ কলেজ কর্তৃপক্ষ গর্বিত। সুচন্দ্রাদেবী কলেজের মুখ সারা বিশ্বে উজ্বল করেছেন। তাঁদের সংবর্ধনা দিতে পেরে আমরাও খুশি।”
প্রায় তিন দশক পর নিজের কলেজে ফিরে এসে খুশি সুচন্দ্রাদেবীও। তিনি বললেন, “আমাদের কলেজে শিক্ষার পরিকাঠামো খুবই ভাল। শহরের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের বিজ্ঞান চর্চায় আগ্রহ দেখে আমরা সত্যিই গর্বিত।”

ভ্রম সংশোধন




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.