তালা কংগ্রেসের, ভাঙলেন শ্রমিকরা
কারখানা বন্ধ হলে খাব কী, প্রশ্ন ওঁদের
কারখানা পাকাপাকি বন্ধ হয়ে গেলে পেটে লাথি পড়বে, এই আশঙ্কা থেকে কারখানার গেটে কংগ্রেসের লাগিয়ে দেওয়া তালা ভেঙে ফেললেন শ্রমিকেরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়ার আনাড়ার ঘটনা। বরাত না থাকায় চার মাস ধরে রেলের স্লিপার তৈরির ওই বেসরকারি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ ছিল। শ্রমিকেরা ছিলেন ‘লে-অফ’-এ (আধা বেতন পাচ্ছিলেন)। জুলাইয়ে রেলের বরাত মিলেছে। উৎপাদনও হচ্ছিল। কিন্তু কিছু দাবিদাওয়ার ভিত্তিতে গত বুধবার থেকে স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীরা কারখানার প্রশাসনিক ভবন ও শ্রমিকদের মেসের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন। এর ফলে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি সংশয় দেখা দেয় শ্রমিক-কর্মীদের জুলাই মাসের বেতন দেওয়াকে ঘিরে। মেস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মীদের দৈনিক খাবারও দেওয়া যাচ্ছিল না।
শ্রমিকেরা বুঝতে পারছিলেন, উৎপাদন পুরোদমে শুরু না হলে বরাত ফের বাতিল হতে পারে। রুজিতে টান পড়ার আশঙ্কা থেকেই এ দিন শতাধিক শ্রমিক কারখানার গেট ও মেসের তালা ভেঙে দেন। ওই কারখানার শ্রমিক তথা শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র নেতা শেখ শাহজাদা বলেন, “তুচ্ছ কারণে কংগ্রেস কারখানা বন্ধ করে দিয়েছিল। তাঁরা জুলাইয়ের বেতন পাচ্ছিলেন না। বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা তালা ভেঙেছেন।”
শ্রমিকদের একাংশের বক্তব্য, “অনেক দিন পরে রেলের বরাত আসায় আমরা আবার আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু কংগ্রেসের আন্দোলন তা ভেস্তে দিচ্ছিল। চার মাস পরে পুরো বেতনও পেতাম। কিন্তু অফিসারেরা বলছিলেন, ‘আমরা অফিসেই ঢুকতে পারছি না! বেতন হবে কী করে?’ তা ছাড়া, সময়ে স্লিপার সরবরাহ না করতে পারলে বরাত বাতিল হবে। সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ করে দিতে পারেন। তখন খাব কী?”
১২ বছর ধরে চলা এই কারখানায় দু’শোরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন। শ্রমিকদের মজুরি-সহ অন্য সুবিধা বৃদ্ধি ও স্থানীয় কর্মসংস্থানের দাবিতে কংগ্রেস কর্মীরা বুধবার স্মারকলিপি দিতে যান। আগাম জানিয়েও জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন না, এই অভিযোগে তাঁরা কারখানায় তালা ঝোলান। সমস্যা মেটাতে কর্তৃপক্ষ রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক প্রণব বিশ্বাসের দ্বারস্থ হন।
আদ্রা রেল-শহরের কাছেই আনাড়া অঞ্চলটি পাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের অর্ন্তগত। সিপিএমের কাছ থেকে গত বছর এই কেন্দ্রের দখল নিয়েছে কংগ্রেস। স্থানীয় রাজনীতির পর্যবেক্ষদের মতে, এই কারখানাতেও প্রভাব বাড়াতে কংগ্রেস এমন আন্দোলনে নেমেছে। যদিও দলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতোর মন্তব্য, “কোনও অবস্থায় কারখানা বন্ধ করে আন্দোলন করা যাবে না। স্থানীয় অঞ্চল কমিটিকে কারখানা খোলার জন্য সহযোগিতা করার নির্দেশ দেব।”
সেই ‘সহযোগিতা’র ভরসায় না থেকে শ্রমিকরা এ দিন নিজেরাই তালা ভেঙেছেন। অস্বস্তিতে পড়ে স্থানীয় কংগ্রেস নেতা বিপ্লব দেওঘরিয়ার অভিযোগ, “কর্তৃপক্ষ বহিরাগত দুষ্কৃতীদের দিয়ে তালা ভাঙিয়েছে।” কারখানার জিএম গৌতম ভৌমিক অবশ্য বলেন, “বহিরাগত কিছু লোক নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে কারখানা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদ করেছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.