ভবিতব্যের মোড় ঘুরিয়ে জীবনের জয়গান: অনন্য অস্কার
পা না থেকেও স্বপ্নের দৌড়ে ‘ব্লেড রানার’
ন্মের সময় দুই হাঁটুরই ফিবুলা হাড় ছিল না। শিশুটিকে বাঁচাতে তাই হাঁটুর নীচ থেকে দুই পা-ই বাদ দিতে হয়।
এর পরেও কি দৌড়নো সম্ভব? বিশেষ করে অলিম্পিকে?
দক্ষিণ আফ্রিকার অস্কার পিস্টোরিয়াস দেখালেন, সম্ভব। তিনি দৌড়চ্ছেন, কারণ তিনি দৌড়তে চেয়েছিলেন। একটাও পা না থাকা সত্ত্বেও। এবং অলিম্পিকে প্রথম এমন প্রতিযোগী হিসেবে। প্রতিবন্ধী, সুস্থ, অলিম্পিক, প্যারা অলিম্পিক এ সব ভেদাভেদে বিশ্বাস ছিল না তাঁর। বরং ভরসা ছিল স্বপ্নে। চেয়েছিলেন তাঁর পরিচয় হোক শুধুই অ্যাথলিট হিসেবে। সম্বল বলতে ছিল অদম্য ইচ্ছেশক্তি আর সংকল্প। আর কে না জানে, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়।
শরীরের সঙ্গে জুড়ে নিয়েছিলেন কার্বন ফাইবারের কৃত্রিম পা। তা দিয়েই প্রতিবন্ধীদের দুনিয়ায় ১০০, ২০০ ও ৪০০ মিটারে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। কিন্তু সে তো দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো! মূল অলিম্পিকে দৌড়ের স্বপ্নটা বুকের মধ্যে পুষে রেখেছিলেন ‘ব্লেড রানার’। লন্ডনটা অস্কারের কাছে সেই বহু দিনের ইচ্ছেপূরণের অলিম্পিক। ৪০০ মিটার দৌড়ের সেমিফাইনালে পৌঁছেছিলেন। দৌড়ন ৪*৪০০ মিটার রিলের ফাইনালেও। অস্কারের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও দল অবশ্য জেতেনি।
রিলে দলের ফাইনালে দৌড়ের ছাড়পত্র জুটেছে অদ্ভুত ভাবে। গত বৃহস্পতিবার প্রথম রাউন্ডে কেনিয়ার রানারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকার রিলে দলের সদস্য অফটেনসে মোগাওয়ানে। হাত থেকে ব্যাটন ছিটকে যায় তাঁর। এর পরেই ব্যাটন নিয়ে দৌড়ের কথা ছিল অস্কারের।
সে দিন মাথায় হাত দিয়ে ট্র্যাক ছেড়েছিলেন অস্কার। বুকে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা। কিন্তু কপালে যদি থাকে, তা হলে ফাইনালে ওঠা রুখবে কে? বিচারকরা রায় দেন, অন্যায় ভাবে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে মোগাওয়ানেকে। তাই ফাইনালে নামার সুযোগ দেওয়া হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বসিত অস্কার টুইট করেন, “হ্যাঁ, দৌড়ব। আমরা ফাইনালে!”

• জন্ম থেকেই দুই হাঁটুর নীচের ফিবুলা অস্থি ছিল না। ১১ মাস বয়সে অস্ত্রোপচার, দু’পা হাঁটুর নীচ থেকে বাদ।
• কার্বন ফাইবারের ট্রান্সটিবিয়াল কৃত্রিম পায়ে দৌড়।
• ২০০৪ আথেন্স প্যারা অলিম্পিকে ১টি সোনা ও ১টি ব্রোঞ্জ, ২০০৮ বেজিং প্যারা অলিম্পিকে ৩টি সোনা।
• ২০০৭ থেকে যোগ দিচ্ছেন শারীরিক ভাবে সক্ষম প্রতিদ্বন্দ্বীদের রেসে।
• ২০১২ অলিম্পিকে দৌড়েছেন ৪০০ মিটার সেমিফাইনালে, ৪x৪০০ মিটার রিলের ফাইনালে।

দেখেশুনে মনে হচ্ছিল, রিলে নন, দৌড়চ্ছেন হার্ডল রেসে। একের পর এক বাধা। তার শেষটা যদি হয় কেনিয়ার রানারের সঙ্গে ধাক্কায় মোগাওয়ানের হাত থেকে ব্যাটন ছিটকে যাওয়া, তা হলে আগেরগুলো ছিল অস্কারের নিজস্ব লড়াই। যে সব টপকে মাত্র গত সপ্তাহে অলিম্পিকে রিলে রেসে অংশ নেওয়ার চূড়ান্ত ছাড়পত্র পান অস্কার। তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া, “আমার কেরিয়ারে এটা অন্যতম সেরা ঘটনা।” ফাইনালে উঠে বলেন, “অলিম্পিক ফাইনালে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার বিরল সুযোগ পাচ্ছি আমি।”
সুস্থ-স্বাভাবিকদের সঙ্গে অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার ছাড়পত্র পেতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি অস্কারকে। ২০০৭-এ অ্যাথলেটিক্সের আন্তর্জাতিক নিয়ামক সংস্থা তাঁর সব রকম দৌড়ে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ করে দেয়। জার্মানির নামী ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা করে রায় দেয়, কার্বন ফাইবারের পা ব্যবহার করে ট্র্যাকে স্বাভাবিক অ্যাথলিটদের চেয়ে বেশি সুবিধে পেয়ে যাচ্ছেন অস্কার। তাঁর গতি বেড়ে যাচ্ছে।
সত্যিই কৃত্রিম পা অস্কারকে বাড়তি সুবিধে দিচ্ছে কি না, তা নিয়ে গবেষণা কম হয়নি। কিন্তু হতাশায় ডুবে গেলেও লড়াই ছাড়েননি অস্কার। প্রতিবাদ করে বলেছেন, “কোনও ভাবেই আমি বাড়তি সুবিধে নিচ্ছি না।’’ খেলাধুলোর ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ মঞ্চ লুসানের আদালতে আবেদন করেন অস্কার। সঙ্গে ছিলেন একঝাঁক আইন বিশেষজ্ঞ। অবশেষে মেলে সুবিচার। প্রমাণ হয়ে যায়, কোনও ভাবেই রেসের ট্র্যাকে বাড়তি সুবিধে নিচ্ছেন না দক্ষিণ আফ্রিকার এই অ্যাথলিট।
শেষমেশ নিয়ামক সংস্থার রায়ে অলিম্পিকে নামার সুযোগ এবং তার পর, ইতিহাস।

আজ
৫০ কিমি হাঁটা
• বসন্ত বাহাদুর রানা (দুপুর ১-৩০)
হকি
• ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা (দুপুর ১-০০)
কুস্তি
• যোগেশ্বর দত্ত (বিকেল ৫-৩০)
গত কাল
কুস্তি
• রেপেশাজ রাউন্ড থেকে বিদায় অমিত কুমারের।
• প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নরসিংহ পঞ্চম যাদবের।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.