শিল্পের মুখ থুবড়ে পড়া আর দেশের বৃদ্ধির হার ঢিমে হওয়ার প্রভাব স্টেট ব্যাঙ্কের হিসাবের খাতাতেও। এতটাই যে, প্রত্যাশা ছাপানো মুনাফার পরেও শুক্রবার এক ধাক্কায় ৮৪ টাকা নেমে গেল দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্কের শেয়ার দর। বাজার বন্ধের সময় ওই শেয়ারের দাম দাঁড়াল ১,৮৮৭.৯৫ টাকা।
এ দিন স্টেট ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, গত জুনে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে তাদের নিট অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের ১২,৪৩৫ কোটি থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০,৩২৪ কোটি টাকা। যা ব্যাঙ্কের মোট ঋণের ২.২২%। মোট অনাদায়ী ঋণ পৌঁছেছে ৪৭,১৫৬ কোটিতে। আর এই পরিসংখ্যানই ভয় ধরিয়েছে ব্যাঙ্কের শেয়ার কিনে রাখা মানুষের মনে। কারণ অনুৎপাদক সম্পদ বা অনাদায়ী ঋণ হল সেই সমস্ত ধার যা নির্দিষ্ট সময় পেরনোর পরও ফেরত পায়নি ব্যাঙ্ক। এমনকী আগামী দিনেও যে সেই ধার শোধ হবে, তার সম্ভাবনাও যথেষ্ট কম। ফলে এক অর্থে তাকে খরচের খাতায় তুলে দিয়েছে তারা। আগামী দিনে এর প্রভাবে দুর্বল হতে পারে ব্যাঙ্কের আর্থিক স্বাস্থ্য। এই আশঙ্কাতেই এ দিন তার শেয়ার বিক্রি করেছেন অনেকে। |
কিংফিশার এয়ারলাইন্স এবং এয়ার ইন্ডিয়া ধুঁকতে থাকা দুই বিমান সংস্থারই বিপুল অঙ্কের ঋণ রয়েছে স্টেট ব্যাঙ্কের কাছে। আগামী দিনে যা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। তার উপর জুনেই শিল্পোৎপাদন সরাসরি কমেছে ১.৮%। বর্ষার দেখা সে ভাবে না-মেলায় ঘোরালো সমস্যার মুখে কৃষিও। ফলে এই দুই ক্ষেত্র থেকেও বিপুল অঙ্কের ঋণ ফেরত না-পাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। যদিও ব্যাঙ্কের দাবি, অনাদায়ী ঋণের সমস্যা আগামী ত্রৈমাসিকে অনেকটাই মিটিয়ে ফেলবে তারা। অসুবিধা হবে না এই অর্থবর্ষে ১৬-১৮% ঋণ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতেও।
তবে ব্যাঙ্কের এই প্রতিশ্রুতি অন্তত এ দিন আশ্বস্ত করতে পারেনি লগ্নিকারীদের। যে কারণে নিট মুনাফা ১৩৭% বেড়ে ৩,৭৫২ কোটি টাকায় পৌঁছনোর পরেও ৪.২৬% নেমে গিয়েছে ব্যাঙ্কের শেয়ার দর। অবশ্য অ্যাঞ্জেল ব্রোকিংয়ের ব্যাঙ্কিং বিষয়ক গবেষণা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট বৈভব অগ্রবালের দাবি, “শুধু স্টেট ব্যাঙ্ক নয়। অনুৎপাদক সম্পদ বাড়তে পারে আরও কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেও। ফলে তাদেরও শেয়ার দর পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” |