শেষ পর্যন্ত টনক নড়ল। তবে একটি প্রাণের বিনিময়ে।
বার্নপুরে ইস্কো আবাসনগুলির ব্যাপারে সবিস্তার তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠাল পুলিশ। সব তথ্য হাতে পেলে জবরদখল হয়ে থাকা বা ফাঁকা পড়ে থাকা আবাসনগুলি চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। তাতে সেগুলিতে কোনও অসামাজিক কাজকর্ম হলে তা বন্ধ করা যাবে বলে পুলিশের দাবি। ইস্কো কর্তৃপক্ষ জানান, এ ব্যাপারে পুলিশকে সব রকম সাহায্য করা হবে।
গত বুধবার ইস্কোর একটি ফাঁকা আবাসনের পিছনে নর্দমা থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী পুষ্পা ঠাকুরের দেহ উদ্ধার হয়। তার গলায় ছিল ধারালো অস্ত্রের কোপ। তার আগের দিন স্কুলে পরীক্ষা দিতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি পুষ্পা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, খুনের আগে তার উপরে শারীরিক অত্যাচার চালানো হয়। তাঁদের আরও অভিযোগ, ওই ফাঁকা আবাসনে নিয়মিত অসামাজিক কাজকর্ম হয়। শুধু ওই একটি নয়, ইস্কোর এমন বহু জবরদখল করে রাখা আবাসন আছে যেখানে সমাজবিরোধী কাজ-কারবার হয়।
আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পশ্চিম) সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ইস্কো আবাসন কলোনিগুলির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নজরে রাখতে সবিস্তার তথ্য তাঁদের হাতে থাকা দরকার। এডিসিপি বলেন, “আমরা ইস্কো কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে আবাসনগুলির ব্যাপারে তথ্য চেয়েছি।” ইস্কোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্কর কুমার বলেন, “চিঠি এখনও আমাদের হাতে আসেনি। তবে পুলিশের সঙ্গে সব রকম সাহায্য করা হবে।” ইস্কো সূত্রে জানা গিয়েছে, বার্নপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় সাত হাজার আবাসন আছে। তার মধ্যে সাড়ে ছ’হাজার আবাসন খাতায়-কলমে শ্রমিক-কর্মীদের নামে বণ্টন করা হয়েছে। বাকি আবাসনগুলি মেরামতি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু বার্নপুরে ইস্কো আবাসনই নয়, শিল্পাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইসিএল এবং কুলটির সেল গ্রোথ কারখানার আবাসনগুলিরও সবিস্তার তথ্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চাওয়া হবে। এডিসিপি সুব্রতবাবু জানান, প্রাথমিক খোঁজখবর করে তাঁরা জেনেছেন, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি নিজেদের নামে একাধিক আবাসন নিয়ে রেখেছেন। একটিতে নিজে থাকছেন, অন্যগুলি ভাড়া দিচ্ছেন বহিরাগতদের। তিনি বলেন, “এই ধরনের আবাসনগুলি থেকে বহিরাগতদের সরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব। আবাসন জবরদখলের ক্ষেত্রে আমরাই বহিরাগতদের সরিয়ে দেব।”
সেল গ্রোথ ডিভিশনের কুলটি কারখানার ডিজিএম কৃষ্ণকান্ত তিওয়ারি জানান, কুলটির আবাসনগুলি দখলমুক্ত করতে ‘লিজ’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করে আবেদনপত্রও নেওয়া হচ্ছে। ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা ইতিমধ্যেই আবাসন থেকে জবরদখল উচ্ছেদ শুরু করেছেন। |