দুই চিত্র
বর্ষা তবু ধান মরছে মাঠে
রা বর্ষা। অথচ বৃষ্টির দেখা নেই। বৃষ্টির জন্য আকাশে চেয়ে মালদহের হবিবপুর, বামনগোলা, গাজল ও পুরাতন মালদহ ব্লকের লক্ষাধিক চাষি। ওই চারটি ব্লকের বিঘা পর বিঘা জমির মাটি শুকিয়ে ফেটে গিয়েছে। বৃষ্টি না নামায় জমিতে ধান লাগাতে না পেরে চাষিদের কপালে হাত পড়েছে। যদিও কিছু চাষি জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন জলের অভাবে তাদের জমির ধান জমিতেই শুকিয়ে যেতে বসেছে। এদিকে সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও জমিতে ধান রোয়া না-হওয়ায় জেলা কৃষি আধিকারিকেরা উদ্বিগ্ন। কৃষি দফতরের জেলার উপ অধিকর্তা সজল ঘোষ বলেন, “জেলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হওয়া উচিত ছিল ৩৮০ মিলি। বৃষ্টি হয়েছে ২৮০ মিলিলিটার। ১০০ মিলি কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। জেলার চারটি ব্লক হবিবপুর , পুরাতন মালদহ, গাজল ও বামনগোলায় একদমই বৃষ্টিপাত হয়নি। ওই চারটি ব্লকের বেশির ভাগ জমির চাষ বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভরশীল। বৃষ্টি না-হওয়ায় ওই ৪টি ব্লকের ৭০ হাজার হেক্টর জমির মধ্য ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষবাদ হয়নি। এমনিতে দেরি হয়ে গিয়েছে।
বালুরঘাটে অমিত মোহান্তের তোলা ছবি।
৭-৮ দিনের মধ্য যদি বৃষ্টিপাত না হয়। তবে এই মরসুমে আর ওই চারটি ব্লকে আর ধান লাগানো যাবে না। এর ফলে এ বছর ব্যাপক ক্ষতি হবে। উপ অধিকর্তা বলেন, “বর্ষায় জেলার চারটি ব্লকে বৃষ্টি না হওয়ার জন্য যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, সেই রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।” হবিবপুরের বিডিও অভিজিত ঘোষ বলেন, “বৃষ্টির উপরই আমার এলাকার বেশির ভাগ এলাকার ফসল হয়। এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় বেশির ভাগ জমিতে এবার কেউ ধান লাগাতে পারেনি। ফলে এবার বহু চাষি, যাঁরা ধানের উপর নির্ভরশীল তাঁরা ক্ষতির মুখে পড়বেন।” মাধাইপুরের নজরুল শেখ এবার তাঁর ২ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন। কিন্তু বৃষ্টি না-হওয়ায় তাঁর জমির ধান শুকিয়ে যেতে বসেছে।
মালদহে ছবিটি তুলেছেন মনোজ মুখোপাধ্যায়
জমির ধান দেখিয়ে নজরুল বলেন, “মহাজনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ২ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম ধান উঠলে সংসারের সারা বছরের ভাত জোগাড় হয়ে যাবে। মহাজনের টাকা শোধ হয়ে যাবে। ভিনরাজ্যে কাজে যেতে হবে না। কিন্তু ১০ -১২ ইঞ্চি ধানগাছ হতেই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জলের অভাবে জমি ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছে। এখন যদি বৃষ্টি না হয় ২ বিঘার জমির ধান পুরোটাই নষ্ট হয়ে যাবে। কী ভাবে মহাজনের টাকা পরিশোধ করব বুঝতে পারছি না।” ভিন রাজ্যে কাজ করে মহাজনের টাকা পরিশোধ করতে হবে। নুরুল শেখের জমিতে ধান লাগাতে পারলেও আশেপাশে জমি খা খা করছে। ওই গ্রামের আবতাব আলি, সালমান শেখরা বলেন, “প্রতি বছর বৃষ্টি পর জমিতে হাল দিয়ে ধান লাগাই। এ বছর বৃষ্টির ভরসায় জমিতে হালই চালাতে পারলাম না। ধান কী ভাবে লাগাব। শুধু মাধাইপুর, হবিবপুরই নয় পুরাতন মালদহ , গাজলের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ এখন বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছেন। হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধীরেন মুরারি বলেন, “আমার এলাকার ১১ টা গ্রাম পঞ্চায়েতেই ভয়ঙ্কর অবস্থা। বৃষ্টির অভাবে প্রচুর চাষি জমিতে ধান লাগাতেই পারেননি। যাঁরা ধান লাগিয়েছিলেন, তাঁদের সেই ধানও জলের অভাবে মরে যাচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.