এ যেন ‘কিউরিয়াস কেস অফ বেঞ্জামিন বাটনের’ পুনরাবৃত্তি। তবে সিনেমার পর্দা ছাড়িয়ে এ বার বাস্তবেই খোঁজ মিলল সেই বেঞ্জামিনের। বা ঠিক করে বললে দুই বেঞ্জামিন ভাইয়ের। লন্ডনের বাসিন্দা দুই সহোদর ৩৯ বছরের ম্যাথু এবং ৪২ বছরের মাইকেল ক্লার্ক নিজের কাজের জগতে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎই গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে অদ্ভুত আচরণ করতে থাকেন মাইকেল। কথায় কথায় হাসতে শুরু করছিলেন তিনি। কোনও কথার গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না। কিছু বললে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। এই আচরণের জন্য ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর প্রাক্তন কর্মী মাইকেলেকে কাজ থেকে বের করে দেওয়া হয়। মাইকেলের উদ্বিগ্ন বাবা-মা তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে এমআরআই স্ক্যানে জানা যায়, ‘টার্মিনাল লিউকোডিসট্রফি’ নামে এক বিরল জিনগত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মাইকেলের মস্তিষ্কের বয়স এখন দশ বছরের বালকের মতো। এই রোগে মানুষের মস্তিষ্ক, স্নায়ু এবং মেরুদণ্ড আক্রান্ত হয়। সাধারণত সদ্যোজাতদের মধ্যে এই রোগ দেখা যায়। লন্ডনের স্নায়ু বিষেশজ্ঞ লিন্ডা কার্থির কথায়, “বিশ্বে প্রতি তিনশো কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র এক জনের এই রোগ দেখা যায়।” ফলে খুব কমই জানা গিয়েছে এই রোগের বিষয়ে। নেই কোনও ওষুধও। এর পরে ম্যাথুকেও পরীক্ষা করে দেখেন চিকিৎসকেরা। দেখা যায়, এই একই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তিনিও। কিছু দিন পরে মাইকেলের মতো ম্যাথুর আচরণেও একই রকম অস্বাভাবিকতা লক্ষ করা যায়। কাজ চলে যায় তাঁরও। মাইকেলদের বাবা ৬৩ বছরের অ্যান্টনি জানালেন, কাজ হারিয়ে মাইকেল সারা দিন বাড়ির মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর কথায় কথায় বোকার মতো হাসছে। আর ম্যাথু কোথাও বেড়াতে গেলেই খেলনার দোকানে ঢুকে হরেক রকমের ট্রেন আর পুতুল কিনছে। না কিনে দিলে বায়না ধরছে। হতাশ অ্যান্টনির কথায়, “ভেবেছিলাম অবসরের পর আমি আর আমার স্ত্রী স্পেনে ছুটি কাটাতে যাব। কিন্তু এখন ওদের ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। শুধু ভাবছি আমাদের মৃত্যুর পরে ওদের কী হবে?” |