সরকারি তহবিলের টাকা থেকে বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দিল উত্তর দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বুধবার বিকেলে জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গৌতম ঘোষ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ওই নির্দেশ দেন। হাসপাতালে স্যালাইনের সঙ্কট দেখা দেওয়ায় মঙ্গলবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের স্টোররুম থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এক হাজার স্যালাইন সরবরাহ করা হয়েছে। এই স্যালাইন দিয়েই এদিন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্টোর রুমেও স্যালাইনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এদিন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা বৈঠক করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সরকারি সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সরকারি তহবিলের টাকায় বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দিতে বাধ্য হন। উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে ভিনরাজ্যের একটি ঠিকাদার সংস্থা স্যালাইনের সরবরাহের দায়িত্ব পেয়েছে। গত প্রায় একমাস ধরে ওই সংস্থা স্যালাইনের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে স্যালাইনের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। আশা করছি, আগামী সোমবারের মধ্যে সরকারিভাবে স্যালাইনের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ততদিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সরকারি তহবিলের টাকায় বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক পাশাং নরবু ভুটিয়া জানান, আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতার স্বাস্থ্যভবনে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিপ্লবকান্তি দাশগুপ্ত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের স্যালাইনের অভাবের কথা বিস্তারিতভাবে জানাবেন। পাশাপাশি, তিনি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের অবিলম্বে সরকারিভাবে স্যালাইনের সরবরাহ স্বাভাবিক করার আর্জি জানাবেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩০০ শয্যার রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রতি মাসে গড়ে ৩০ হাজার স্যালাইনের দরকার হয়। চিকিৎসাধীন প্রসূতি ও শিশু সহ প্রায় ৯০ শতাংশ রোগীকে প্রথম ওষুধ হিসাবে স্যালাইন দেওয়া হয়। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ১ হাজার স্যালাইনের প্রয়োজন হয়। গত একমাস ধরে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালে স্যালাইনের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় গত মঙ্গলবার হাসপাতালের স্টোর রুমে স্যালাইন ফুরিয়ে যায়। তার আগে গত দুদিন ধরে স্যালাইনের সঙ্কট দেখা দেওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই দুদিন জননী সুরক্ষা যোজনার মোট ৪ হাজার টাকার স্যালাইন বাইরে থেকে কিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখেন। হাসপাতাল সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “সরকারিভাবে স্যালাইনের সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত জেলা স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সরকারি তহবিলের টাকায় বাইরে থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী স্যালাইন কিনে চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তহবিলে টাকার অভাবের কথা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের জানিয়েছি।” তাঁরা জানিয়েছেন, টাকার কোনও অভাব হবে না। বৃহস্পতিবার থেকে বাইরে থেকেই স্যালাইন কিনে রোগীদের পরিষেবা দেওয়া হবে। হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষগ্য নারায়ণচন্দ্র পাল জানান, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের স্টোর রুম থেকে স্যালাইন সরবরাহ করায় হাসপাতালে বর্তমানে স্যালাইনের অভাব নেই। রোগীদের এদিন প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা বাইরে থেকে স্যালাইন কেনার নির্দেশ দেওয়ায় আশাকরছি, হাসপাতালে আর স্যালাইনের অভাব হবে না।” উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, স্যালাইন কেনার ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যাতে টাকার অভাব না হয় সেই দিকে নজর রাখা হয়েছে। |