অ্যাথলেটিক্সের ট্র্যাকে এক জোড়া অলিম্পিক-অভিষেক। উসেইন বোল্টের দু’শো মিটার সেমিফাইনালের দিনেও যা আলাদা করে নজর কাড়ল গোটা বিশ্বের। প্রথমটা একুশের এক তরুণীর, যাঁর নামের সঙ্গে অবিচ্ছ্বেদ্য ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে ‘বিতর্কিত’ শব্দটা। দ্বিতীয় জন ইতিহাস গড়লেন আরব দুনিয়ার রক্ষণশীলতার পর্দা সরিয়ে বেরিয়ে আসা প্রথম সৌদি মহিলা ট্র্যাক অ্যাথলিট হিসাবে।
প্রথম জন, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাস্টর সেমায়া, আজ ৮০০ মিটারে নিজের হিটে দ্বিতীয় হয়ে সেমিফাইনালে গেলেন। দ্বিতীয় জন, সৌদি আরবের উনিশ বছরের মেয়ে সারা আত্তার ৮০০ মিটারে নিজের হিটে শেষতম হয়েও কুড়িয়ে নিলেন গোটা স্টেডিয়ামের স্বতঃস্ফূর্ত অভিনন্দন। হিটে প্রথম হওয়া কিনিয়ার মেয়ের থেকে পাক্কা তেতাল্লিশ সেকেন্ড পরে আত্তার যখন রেস শেষ করেন, উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দেন দর্শকাসনে থাকা প্রত্যেকে। সারার মা আমেরিকান। থাকেনও যুক্তরাষ্ট্রে। তাই সৌদি আরবে অনেকের কাছেই তিনি বহিরাগত। রেসের শেষে সারা কিন্তু বলেছেন, “সৌদি আরবের মেয়েদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারা অসাধারণ অভিজ্ঞতা। আমি বিশ্বাস করি সৌদি সমাজে মেয়েদের জন্য এই রেসটা একটা পরিবর্তন নিয়ে আসবে। খেলাধুলোয় মেয়েদের আগ্রহ বাড়বে। হয়তো পরের অলিম্পিকে আমার দেশের আরও মেয়ে আসবে!” |
সারা আত্তার। ৮০০ মিটারের হিটে। ছবি: রয়টার্স |
সারার অলিম্পিক আজই শেষ হল। সেমায়ার ক্ষেত্রে শুরু হল নিজেকে প্রমাণ করার কঠিন লড়াই। অলিম্পিক যে তাঁর কাছে শুধু একটা প্রতিযোগিতার মঞ্চ নয়! গত তিন বছরের বহু লাঞ্ছনার জবাব দেওয়ার মঞ্চও!
সেমায়া আজ হিটের পর বলেন, “কৌশল অনুযায়ী দৌড়েছি। চেয়েছিলাম রেসটা দ্রুতগতির হোক।” গত অক্টোবর থেকে সেমায়ার নতুন কোচ আটশো মিটার কিংবদন্তি, মোজাম্বিকের মারিয়া মুটোলা। আর সে জন্যই সেমায়ার রণকৌশলে চমক থাকবেই বলে চলছে জল্পনা। সেমায়া নিজে অবশ্য বলছেন, “পদকের লড়াইয়ে থাকতে হলে আমাকে দু’মিনিটের নীচে দৌড়তে হবে।” আজ হিটে ২ মিনিট ০০.৭১ সেকেন্ড সময় নেন।
২০০৯ বার্লিন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতার পর দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়ের অবিশ্বাস্য উন্নতি এবং পুরুষালী চেহারা, দুই নিয়েই বিতর্কের ঝড় বয়ে গিয়েছিল। ডোপ পরীক্ষার পাশে লিঙ্গ-নির্ধারণ পরীক্ষাও দিতে হয় বারবার। বিধ্বস্ত, অপমানিত, সেমায়ার পরের বড় ধাক্কা ছিল লিঙ্গ-বিতর্কের নিরসন না হওয়া পর্যন্ত মাঝে এগারো মাস ট্র্যাক থেকে নির্বাসিত থাকা। ২০১০-এ সেই নির্বাসন উঠে যায়। তবে নতুন সমস্যা হয় পিঠের ব্যথা। যা নিয়েই শেষ বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে রুপো জিতেছেন। অলিম্পিক উদ্বোধনে দক্ষিণ আফ্রিকার পতাকা বাহক এ বার অলিম্পিকে কী করেন, সেটা দেখতে মুখিয়ে বিশ্ব।
|
শনিবার সোনার সামনে ব্রাজিল
সংবাদসংস্থা • লন্ডন |
অলিম্পিকের মঞ্চ থেকে ফুটবলে প্রথম সোনা জেতার সুযোগ ব্রাজিলের সামনে। শনিবার সোনা আর মানো মেনজেসের ছেলেদের মাঝে দাঁড়িয়ে শুধু মেক্সিকো। যারা এই প্রথম অলিম্পিক ফাইনালে উঠেছে। পাঁচ বারের বিশ্বকাপ জয়ী দেশ ১৯৮৮ সোল গেমসে রুপো জেতার চব্বিশ বছর পর আবার আলিম্পিক ফাইনালে ব্রাজিল। সোলে রোমারিও-বেবেতোরা যা পারেননি, সেটা এ বার কি পারবেন মেনজেসের ছেলেরা? প্রশ্নটার উত্তরে ব্রাজিল কোচ বলেছেন, “এত দিন পরে আবার ফাইনালে ওঠাটাই বলে দেয় এই দলটা কতটা পরিশ্রমী। ছেলেরা জানে এমন সুযোগ সহজে আসে না। সোনা জেতার এত কাছে এসে খালি হাতে পিরতে চায় না ওরা।” সোমিফাইনালে জোড়া গোল করা স্ট্রাইকার লিয়ান্দ্রো দামিয়াওয়ের গলাতেও প্রত্যয়। বলেছেন, “আমরা ব্রাজিল। আর এখানে সোনা জিততেই এসেছি।” তবে রোমুলো এবং দামিয়াওয়ের গোলে সেমিফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৩-০ হারানো সত্ত্বেও ম্যাচের শুরুটা ভাল হয়ি ব্রাজিলের। সোনার ম্যাচের আগে সেটা নিশ্চয়ই ভাবাচ্ছে মেনজেসকে। |