|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু... |
পায়ের সেই বেড়ি |
মুসলিম মহিলা বিল কতটা সুবিচার করে’ (১৪-৬) শীর্ষক পত্রের উত্তরে মানসকুমার রায়চৌধুরী ‘পায়ে তো এখনও সেই বেড়ি’ (১৬-৭) শীর্ষক পত্রে মুসলিম ব্যক্তিগত আইন সম্পর্কে এবং এখনও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কেন চালু করা গেল না, সে সম্পর্কে যে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন, তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ। এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি তিন তালাক প্রথার যে তথাকথিত ‘সংশোধন’ হয়েছে, সেটা তিনি উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছেন। তাই সেটা উল্লেখ করছি। মুসলিম আইনের সর্বাপেক্ষা সমালোচিত প্রথা তিন তালাক আগে একসঙ্গে ‘তালাক, তালাক, তালাক’ বলেই সম্পূর্ণ করা যেত। এখন ব্যবস্থা হয়েছে প্রতি বার ‘তালাক’ পুনরুচ্চারণের আগে এক মাস সময় নিতে হবে। অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় উচ্চারণের মধ্যে এক মাস এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয়ের মধ্যে আরও এক মাস। অর্থাৎ মোট দু’মাস সময় নিয়ে তালাক হবে। |
|
অনেকেই বলছেন, এতে এই প্রথা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে স্বামীর হাতে-পায়ে ধরে তাঁর দয়া উদ্রেকের জন্য দু’মাস সময় পাওয়া ছাড়া আর কোনও লাভ হল কি? এখনও স্বামীর হাতে সম্পূর্ণ একতরফা অধিকারই রইল। কেউ কেউ বলছেন, পশ্চিমের দেশগুলিতে যখন এখন ‘নো ফল্ট ডিভোর্স’ (অর্থাৎ প্রতিপক্ষের দোষ না-দেখিয়ে একতরফা ডিভোর্স চালু হয়েছে, তখন তিন তালাক ব্যবস্থাকেই বা সমালোচনা কেন? দুটোর মধ্যে তফাত হল, প্রথমত নো ফল্ট ডিভোর্সের অধিকার স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই। এবং দ্বিতীয়ত, তাঁদের কারও স্বার্থ যাতে ক্ষুণ্ণ না-হয় এবং পরিবারের জন্য দু’জনের পরিশ্রমই যাতে স্বীকৃতি পায়, তার জন্য ডিভোর্সের পর বিবাহিত জীবনে জমানো সম্পত্তি দু’জনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। তিন তালাকের ক্ষেত্রে তার প্রশ্নই নেই।
সুস্মিতা ভট্টাচার্য। কলকাতা-২৬
|
ক্যান্সার চিকিৎসা |
ক্যান্সারের নয়া চিকিৎসা’ (৭-৭) প্রতিবেদন অনুযায়ী কলকাতার ক্যান্সার চিকিৎসকদের একটা অংশ জানিয়েছেন যে, সোরিনাম থেরাপিতে সুস্থ হওয়া রোগীরা সকলেই পাশাপাশি ভাবে প্রচলিত ক্যান্সার চিকিৎসা করানোয় রোগীদের রোগমুক্তির মূল কারণ কোনটি তা নিয়ে দ্বিধা রয়েছে। এই প্রসঙ্গে আমি জানাতে চাইছি, সোরিনাম থেরাপির উপর বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের (পাকস্থলী, ফুসফুস, খাদ্যনালী, কোলন প্রভৃতি) চিকিৎসা সংক্রান্ত যে সমস্ত ক্লিনিকাল ট্রায়াল আমি সম্পন্ন করেছি, সেই সমস্ত রোগীর কেউই প্রচলিত চিকিৎসা করেননি। গবেষণা চলাকালীন ট্রায়ালে নথিভুক্ত কোনও রোগী কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি ইত্যাদি করালে তিনি সংশ্লিষ্ট ক্লিনিকাল ট্রায়াল থেকে বিরত থেকেছেন বলে গণ্য করা হয়েছে। উপরোক্ত সমস্ত গবেষণা বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম আন্তর্জাতিক ক্যান্সার সম্মেলনগুলিতে (যেমন, ২০১০ এবং ২০১২ সালে শিকাগোতে আমেরিকান সোসাইটি অব ক্লিনিকাল অঙ্কোলজির বার্ষিক সম্মেলন) উপস্থাপনা করা হয়েছে এবং বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক ক্যান্সার জার্নালগুলিতে (যেমন, জার্নাল অব ক্লিনিকাল অঙ্কোলজি) প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং, এই সমস্ত রোগীর রোগমুক্তির কারণ যে শুধুমাত্র সোরিনাম থেরাপি তা প্রমাণিত। প্রসঙ্গত, সোরিনাম থেরাপি সংক্রান্ত এই সমস্ত গবেষণা বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা সংস্থার নিরপেক্ষ ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ কমিটি ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখেছে। তাদের মধ্যে আছে দিল্লির জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি, পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের সংগঠন আমেরিকান সোসাইটি অব ক্লিনিকাল অঙ্কোলজি ইত্যাদি।
পরিশেষে জানাতে চাই, সোরিনাম থেরাপিতে ব্যবহৃত এবং হোমিওপ্যাথিতে ব্যবহৃত সোরিনাম ওষুধ দুটি পুরোপুরি এক নয়। তাদের উৎপাদন এবং প্রস্তুত প্রণালীর মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।
অরদীপ চট্টোপাধ্যায়। ক্যান্সার গবেষক, ক্রিটিকাল ক্যান্সার ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ সেন্টার, কলকাতা-৪৮
|
সচেতনতা না এলে কন্যাভ্রূণ হত্যা চলবে |
কন্যাভ্রূণ হত্যা প্রসঙ্গে (২৬-৬) নিবন্ধটি সময়োপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ। বহুমাত্রিক আলোচনার শেষে চটজলদি কোনও সমাধান না-পেয়ে একমাত্রিক দাওয়াই বেছে নিয়েছেন নিবন্ধকার। আলোচনার গভীরে তিনিও চান, মানুষের ভিতর থেকেই আসুক সচেতনতা। অসহায় মানুষের মতোই ডাক দিয়েছেন, ‘আজকেই কিছু করতেই হবে সুতরাং...। ডাক্তারদের উপর নিয়মিত নজরদারি কমাতে পারে নির্বিচার কন্যাভ্রূণ হত্যা। বড় সোজাসাপটা সমাধান। কিছু ডাক্তার কন্যাভ্রূণ হত্যা করেন। সত্যিই লরি, ভ্যানের মাথায় গ্রামে গ্রামে পৌঁছায় পোর্টেবল আলট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন। এই শতাব্দীর বড় এক আবিষ্কারের অপব্যবহার হয় এখানে-ওখানে।
১৯৯৪ সাল থেকে পি সি পি এন ডি টি অ্যাক্ট রয়েছে। প্রায় দু’দশক পার হতে চলেছে। আইন বলবৎ করা এবং তার পর শাস্তির ব্যবস্থা তথৈবচ। যে কোনও সমাজেই যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার চেষ্টায় সদিচ্ছা থাকে, তা হলে সেই সমাজ ধীরে সুশৃঙ্খল হয়ে ওঠে। দুঃখের বিষয়, আমাদের দেশে দিস্তা দিস্তা লিখিত আইন, কিন্তু আইনের প্রয়োগ বড় বিচ্ছিন্ন। সদিচ্ছার অভাবও বড় প্রকট। আইন প্রয়োগকারীরা বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখান। অর্থ, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি, আইনের উপরে ওঠে।
এই গভীর ভাবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কন্যাভ্রূণ হত্যা নারী-অবমাননার বৃহৎ চিত্রের একটি দিক মাত্র। কন্যাসন্তানের অবহেলা চলে জীবনভর। কন্যাভ্রূণ হত্যা, অপুষ্টি, অশিক্ষা, বাল্যবিবাহ, নারীপাচার, পণঘটিত হত্যা ইত্যাদি ইত্যাদি...। নিবন্ধকারের উদ্বেগকে যথাযোগ্য মূল্য ও সম্মান দিয়েও বলা যায় যে, উপযুক্ত আইনের প্রয়োগ ও সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ পাশাপাশি চালাতেই হবে। তাই-ই যথার্থ ভাবনা।
সুকুমার বারিক। কলকাতা-২৯
|
স্ট্যাম্প পেপার |
দীর্ঘ কাল নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার নিয়ে চলে আসছে দুর্নীতি। দশ টাকার স্ট্যাম্প পেপার কুড়ি বা তিরিশ টাকায় কিনতে হয়। আবার ব্যাকডেট-এ নিতে গেলে দুশো টাকা থেকে হাজার টাকা দিতে হয়। ভেন্ডাররা সারা বছর কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করে। সরকার নীরব। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ, স্ট্যাম্প পেপার সরাসরি ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরের মাধ্যমে বিক্রি করা হোক। এতে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হবে।
স্বপন কুমার মন্ডল। কলকাতা-২৭ |
|
|
|
|
|