কলা গাছের ছালের তন্তু দিয়ে নানা কাজের জিনিস তৈরি করে কলকাতাকে তাক লাগিয়ে দিল পাত্রসায়রের দুই স্কুলছাত্র। শুধু তাই নয়, বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামে রাজ্য যুব কল্যাণ দফতর আয়োজিত ‘রাজ্য ছাত্র-যুব বিজ্ঞান মেলা-২০১২’-তে মাধ্যমিক স্তরের প্রতিযোগিতায় এই কৃতিত্বের হাত ধরে ওই দুই মেধাবী প্রথম পুরস্কার ছিনিয়ে আনল। হদলনারায়ণপুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণির দুই কৃতী ছাত্র উৎপল ঘোষ ও শৌভিক মণ্ডলকে নিয়ে স্কুলের শিক্ষক ও পড়ুয়ারা বুধবার শোভাযাত্রা করে গ্রাম প্রদক্ষিণ করে।
হদলনারায়ণপুর হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক অচলকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “কলা গাছের ছাল থেকে কী ভাবে সুতো তৈরি করে নানা হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরি করা যায় তার একটি মডেল তৈরি করেছে আমাদের স্কুলের দশম শ্রেণির ফার্স্ট বয় উৎপল ঘোষ ও সেকেন্ড বয় শৌভিক মণ্ডল। তাদের সেই মডেল এ বার ছাত্র-যুব বিজ্ঞান মেলায় মাধ্যমিক স্তরের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এই পুরস্কার আমাদের স্কুলের ছাত্রদের আরও ভাল কাজ করতে উৎসাহী করবে। ওদের এই সাফল্যে আমরা গর্বিত। ট্রফির পাশাপাশি দুই ছাত্র ৫০০০ টাকা করে পুরস্কার পেয়েছে।” |
দুই ছাত্রকে ঘিরে সহপাঠী ও শিক্ষকদের উচ্ছ্বাস। ছবি: শুভ্র মিত্র। |
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের জন্ম সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে ২-৪ অগস্ট কলকাতার গুরুসদয় রোডের বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামে ওই প্রতিযোগিতা হয়। এই মডেল তৈরির ভাবনা এল কী ভাবে? উৎপল ও শৌভিকের কথায়, “কলাগাছের ছাল ছাড়ালেই তন্তু বেরোতে দেখতাম। তখনই ওই সুতো (তন্তু) পাকিয়ে দড়ি করার চিন্তাভাবনা মাথায় আসে। ওই দড়ি লাটাই দিয়ে পাকিয়ে টুপি, মাদুর, মহিলাদের হাতব্যাগ, কার্পেট তৈরি করি।” এই কাজে ওদের সাহায্য করেছেন স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অমিতকুমার গোস্বামী, জ্যোতিপ্রকাশ বর এবং কর্মশিক্ষার শিক্ষক স্বপনকুমার মুদি। বিশ্বজুড়ে উষ্ণায়ন নিয়ে যখন সকলেই উদ্বিগ্ন, সেই সময়ে প্রকৃতি বান্ধব এই হস্তশিল্পের নয়া মডেলই এ বারের ছাত্র-যুব বিজ্ঞান মেলায় সকলের নজর কেড়েছে। প্রধানশিক্ষক জানান, স্বনিযুক্তি প্রকল্পে এই মডেলটি যথেষ্ট সম্ভাবনাপূর্ণ বলে আইআইটি-র বিশেষজ্ঞরাও ওই প্রতিযোগিতায় জানিয়েছেন।
উৎপল-শৌভিক ও তাদের ট্রফি নিয়ে বুধবার সকালে শোভাযাত্রা সহকারে গ্রাম পরিক্রমা করেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়ারা। পরে স্কুলে একটি অনুষ্ঠানও হয়। |