এক কিশোরীকে ‘তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা’ এবং ‘শ্লীলতাহানি’ রুখতে গিয়ে হামলাকারীদের হাঁসুয়ায় জখম হলেন তার বাবা ও মাসি। সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মালদহের ইংরেজবাজার থানার বাগবাড়ি এলাকার ঘটনা। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই ছাত্রীর বাবা এবং মাসি ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু পুলিশের দাবি, ওই দু’জনের রক্তাক্ত অবস্থা দেখেই তাঁদের আগে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরে অবশ্য পুলিশ অভিযোগ নেয়।
ওই মেয়েটির বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি। মাথায় ৬টি সেলাই নিয়ে তিনি এখন মালদহ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। মেয়েটির মাসির মাথাতেও ৫টি সেলাই পড়েছে।
পুরাতন মালদহের গৌড়ঘোষ হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির বছর চোদ্দোর ওই ছাত্রীর বাড়ি মঙ্গলবাড়িতে।
তার মাসির বাড়ি ইংরেজবাজার
থানার বাগবাড়িতে। সোমবার মাসির বাড়িতে মনসা পুজো ছিল। সে জন্য ওই ছাত্রী সেখানে গিয়েছিল। তার মা জানান, সোমবার সন্ধ্যা থেকেই পুজোর আয়োজন চলছিল। তাঁর অভিযোগ, “রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ আচমকা এলাকার তিন যুবক মদ্যপ অবস্থায় বাড়ির ভিতরে ঢুকে মেয়ের হাত ধরে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ওরা শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করছিল। বাধা দিতে গেলে হাঁসুয়া দিয়ে ওরা আমার স্বামীকে কোপায়। ওরা আমার দিদির মাথাতেও হাঁসুয়ার কোপ মারে।” ছাত্রীটির মা বলেন, “ওই হামলার মধ্যে আমি
কোনও মতে মেয়েকে নিয়ে বাড়ির ভিতরে একটা ঘরে ঢুকিয়ে দরজা আটকে দিই। চিৎকার শুরু করি। তাতেই ওরা পালায়। ওই ছেলেগুলো কেন এমন হামলা করল, বুঝতে পারছি না।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত তিন জনের বিরুদ্ধে নানা সময় নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। তবে তারা কেউ পুলিশের খাতায় নাম থাকা দুষ্কৃতী নয়।
মেয়েটির মাসির ক্ষোভ, “হামলার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ইংরেজবাজার থানায় গিয়েছিলাম অভিযোগ জানাতে। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার হাসপাতালে যেতে বলে আমাদের থানা থেকে বার করে দেন।” ঘটনা জেনে হস্তক্ষেপ করেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি। তাঁর দাবি, “ঘটনাটা জেনে আমি এ দিন থানায় গিয়েছিলাম। তার পরেই পুলিশ অভিযোগ নিয়েছে।”
তবে মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল জানিয়েছেন, “ওই ছাত্রীর বাবা ও মাসি যখন থানায় গিয়েছিলেন, তখন তাঁদের শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল। কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার তাঁদের মালদহ মেডিক্যালে চিকিৎসা করিয়ে থানায় অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। ওই ছাত্রীর মায়ের কাছ থেকে অভিযোগ নিয়ে দুষ্কৃতীদের ধরতে পুলিশ ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করে দিয়েছে।” |