প্রয়াণ
১৯৪২-এ যখন সমগ্র ভারতবর্ষ অগস্ট আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল, সেই সময় তার প্রভাব পড়েছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটেও। বালুরঘাটে অগস্ট আন্দোলন দ্রুত বিস্তার লাভ করে। সরোজরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বরঞ্জন সেন, রাধামোহন মহন্ত, কানু সেন প্রমুখের সঙ্গে পুলিনবিহারী দাশগুপ্ত ডাঙ্গির ঘাট থেকে দশ হাজার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বালুরঘাটে ট্রেজারি অভিযান করেন। বালুরঘাট ট্রেজারির ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড থেকে ব্রিটিশ পতাকা ইউনিয়ন জ্যাক নামিয়ে ভারতের পতাকা উত্তোলন করেন। সে দিনের সেই আন্দোলনে পুলিনবিহারীর ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। তিনি ব্রিটিশ পুলিশের আইন অমান্য করেছিলেন এবং প্রকাশ্যে ব্রিটিশের বিরোধিতা করেছিলেন।
রোগশয্যায় পুলিনবিহারী দাশগুপ্তের ছবিটি তুলেছেন সমিত ঘোষ
’৪২-এর ১৪ সেপ্টেম্বর ট্রেজারি অভিযানের পর সকলে আত্মগোপন করেন এবং পর দিন অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর সদর থেকে পুলিশ এসে বাড়ি বাড়ি তল্লাসি শুরু করে। সঙ্গে চলে অত্যাচার ও ধরপাকড়। গ্রেফতার হন পুলিনবিহারী দাশগুপ্তের বৃদ্ধ পিতামাতা। পুলিনবিহারীর নামে পুলিশ পাঁচ হাজার টাকার হুলিয়া ঘোষণা করে। পুলিনবিহারী ছিলেন গুপ্ত সমিতির সক্রিয় সদস্য। তিনি পরে ঢাকায় ধরা পড়েন। স্বাধীনতার লড়াইয়ে ব্রিটিশ পুলিশের শৃঙ্খল তিনি হাসিমুখে মেনে নেন।
বালুরঘাট হাইস্কুলের এক জন আদর্শ শিক্ষকও ছিলেন পুলিনবিহারী। ছাত্রদের মধ্যে স্বাধীনতার বার্তা ছড়িয়ে দেন। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। শেষ বয়সে এসে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের সেই স্মৃতি অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছিল। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রয়াত হন। বয়স হয়েছিল ৯৪।

প্রমথেশ্বর জিউ
ছবি: বৃন্দাবন ঘোষ
মারনাই জমিদার বাড়ির শিবমন্দিরটি প্রমথেশ্বর জিউ নামে পরিচিত। শোনা যায়, মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা জমিদার শশিভূষণ পালচৌধুরী অত্যন্ত একরোখা পুরুষ ছিলেন। গ্রামের নুনিয়া বাড়ির ভূতেশ্বর জিউ প্রতিষ্ঠার ঠিক এক বছর পর ১৩২৬ বঙ্গাব্দের চৈত্র সংক্রান্তিতে নিজ বাসভবনে গড়ে তুলেছিলেন প্রমথেশ্বর জিউ মন্দির। সেই আমলে মন্দির গড়তে খরচ হয়েছিল আশি হাজার টাকা।
মন্দিরে নয়টি চূড়া ছিল। চূড়ায় ছিল একটি রুপোর ছাতা। চূড়াগুলোর কারুকার্য সূক্ষ্ম। মন্দিরের মেঝে ছিল শ্বেতপাথরের তৈরি। সেখানেই একটি শিবের মূর্তি প্রতিষ্ঠিত ছিল। বর্তমানে মন্দিরে শুধু শিবলিঙ্গ রয়েছে।
দক্ষিণমুখী ওই মন্দিরের মূল প্রবেশ দরজার সামনে এক সময় সুবিশাল ঘণ্টা ঝুলতো। ওই ঘণ্টা রোজ সকাল-সন্ধ্যায় বেজে উঠলে আশপাশের লোকজন মন্দিরে আসতেন। দুপুরে বহু মানুষ প্রসাদ পেতেন। এক সময় মন্দিরের নামে পাঁচশো বিঘা জমি ছিল। বর্তমানে মন্দিরটির জরাজীর্ণ অবস্থা। এ দিক সে দিক ভেঙে ভেঙে পড়ছে। জমিদারি নেই। তাই আর পুজোর সেই ঘটাও নেই।

রাসচক্র
কোচবিহারের রাস উৎসবে মদনমোহন মন্দির প্রাঙ্গণে যে রাসচক্রটি ঘুরিয়ে ভক্তরা পুণ্য অর্জন করেন, সেটির নির্মাতা আলতাফ মিঞা। তিন পুরুষ ধরে তাঁরা বানিয়ে আসছেন এই রাসচক্র। আলতাফ মিঞার ঠাকুর্দা পানমামুদ মিঞা কোচবিহার মহারাজের আমলে প্রথম রাসচক্রটি তৈরি করেছিলেন। তাঁর অবর্তমানে আলতাফের বাবা আজিজ মিঞা রাসচক্র তৈরির দায়িত্ব পান। বর্তমানে রাসচক্র তৈরির কাজে লিপ্ত আলতাফ।
রাস উৎসবে নিষ্ঠার সঙ্গে মাসখানেক ধরে তিনি তৈরি করেন সুউচ্চ এই মঞ্চ। ৩২টি দেবদেবীর ছবি সম্বলিত রাসচক্রটি অনেকটা মহরমের তাজিয়ার মতো। উৎসবে কোচবিহার যখন সেজে ওঠে, তখন আলতাফ খোঁজেন একটা নিশ্চিন্ত আয়ের পথ। ‘রানি বাগান’-এর সামান্য আয়ের অস্থায়ী কর্মী তিনি। কোনও মতে পাঁচ জনের অভাবের সংসার চালান। তবু ঐতিহ্যকে তিনি কিছুতেই হারাতে চান না। তাই ছেলে আমিনুরকে তৈরি করছেন রাসচক্র তৈরির শিল্পী হিসেবে।

কবিতার আসর
কফি হাউসের আড্ডার মতোই মাঝে মাঝে জমে ওঠে সান্ধ্য কবিতার আসর। স্বরচিত কবিতা পাঠ আর প্রাণখোলা আড্ডার সঙ্গে কখনও চা, কফি, আবার কখনও গরম খিচুড়ি। ইসলামপুর বাস টার্মিনাস থেকে পায়ে হাঁটা পথে জাতীয় সড়ক ধরে রায়গঞ্জের দিকে একটু এগোলেই ডান হাতে ‘স্বাদ বদল’ রেস্টুরেন্ট। কবি, সাহিত্যিকদের আলাদা জগৎ। প্রতি মাসে এখানে বসে কবিতার আড্ডা। ব্যতিক্রমী এই রেস্টুরেন্টের সব কিছুই আলাদা। সাধারণ খদ্দেরদের মেনু কার্ডের পাশাপাশি দেওয়া হয় ম্যাগাজিন, চোখ বোলান বা পড়ার জন্য হাতে হাতে পৌঁছে যায় সেগুলো। দিনভর হালকা সুরে বাজে রবীন্দ্রনাথের গান। রয়েছে রেস্টুরেন্টেরই লিটল ম্যাগের স্টল। নবীন কবি থেকে শুরু করে বর্ষীয়ান কবিদের আনাগোনা এখানে। নিয়মিত বসে রবিবারের সাহিত্য আড্ডা এবং ইস্টিকুটুম আয়োজিত কবিতার আড্ডাও।


উত্তরের কড়চা
এবিপি প্রাঃ লিমিটেড,
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড
শিলিগুড়ি ৭৩৪৪০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.