স্কুলে ছাত্রদের মারধরের অভিযোগ শিলিগুড়িতে
স্কুলে ছাত্রদের মারধর যাতে না-করায় হয় সেই ব্যাপারে স্পষ্ট সরকারি নির্দেশ রয়েছে। তার পরেও শিলিগুড়ির দুটি স্কুলে ছাত্রদের মারধর করার অভিযোগ উঠল। একটি ঘটনা ঘটেছে গত ২৫ ও ২৬ জুলাই নিউ জলপাইগুড়ির একটি আবাসিক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার শিলিগুড়ির ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ ভারত নগর শহিদ কলোনি প্রাথমিক স্কুলে। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র তনয় বর্মনকে স্কুলে এক শিক্ষক এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর বেল্ট দিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ। তনয়ের অভিভাবকেরা এই ব্যাপারে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করার পরে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। অন্যদিকে, অভিভাবকেরা ওই ছাত্রকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে এনেছেন অন্য স্কুলে ভর্তি করাবেন বলে। তনয়ের মা মল্লিকা দেবী বলেন, “মায়ানমারে স্বামী কাজ করেন। সুশিক্ষা দেব বলে এখানে ভর্তি করেছিলাম। যা ঘটেছে তাতে এখানে রাখার সাহস পেলাম না। ছেলেকে মায়ানমারেই কোনও স্কুলে ভর্তি করে দেব।”
অন্যদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে টিফিনের ছুটির সময়ে দক্ষিণ ভারতনগর শহিদ কলোনি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা-সহ তিন শিক্ষক মিলে স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির তিন ছাত্রকে বেত ও লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটান বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় প্রশান্ত মণ্ডল নামে এক ছাত্রের শ্বাসকষ্ট হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষিকেরা মিলেই আলট্রাসোনোগ্রাফি করানোর পরে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসা করান। অন্য দু’জনেরও প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ওই স্কুলে ছুটে যান স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ নন্দী এবং জেলা শিক্ষা দফতরের সার্কেল ইন্সপেক্টর রাজীব চক্রবর্তী। বলেন, “অভিযুক্ত তিন শিক্ষককেই শোকজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, যেখানে স্কুলে মারধর করতে বারণ করা হয়েছে তার পরেও কেন এমন অভিযোগ উঠছে তা তিন শিক্ষককেই প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে মারধরের কারণ জানাতে হবে।”
মারধরের কথা স্বীকার করলেও প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা স্মৃতিকণা নন্দ রায় বলেন, “ওই তিন ছাত্রই ভীষণ দুষ্টু। ওদের জন্য আজ সুস্মিতা সাউত নামে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ষাঁড়ের ধাক্কায় জখম হয়। তাতে উত্তেজনার বশে একটু বেশি মারধর করে ফেলা হয়েছে। সেই জন্য আমরাই চিকিৎসার ব্যবস্থা করি।” তবে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জয় সোনি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র তনয়কে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “ছাত্রটি দুরন্ত প্রকৃতির। বাবা-মা বাড়িতে শাসন করতে না-পারায় আমাদের হস্টেলে পাঠান। দু’বার পালানোর চেষ্টা করে। মারধরের ঘটনা ঘটেনি। কেন অভিভাবকেরা এমন অভিযোগ করেছেন সেটা আমাদের কাছেও স্পষ্ট নয়।”
প্রাথমিক স্কুলে মারধরের ঘটনার পরে জেলা কংগ্রেস নেতা বিকাশ সরকার ওই তিন শিক্ষক-শিক্ষিকার বদলি দাবি করেন। তিনি বলেন, “মারধর করে যাদের ছাত্রদের শৃঙ্খলা শেখাতে হয় তাঁদের এই স্কুলে চাকরি করার দরকার নেই। সেটা সার্কেল ইন্সপেক্টরকে জানিয়েছি।” এলাকার কাউন্সিলর তথা ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান জয়দীপ নন্দীও বলেন, “মারধরের ঘটনা নিন্দনীয়। স্কুলে বৈঠক করে পরবর্তী পদক্ষেপ হবে।” শিলিগুড়ি গার্জিয়ান ফোরামের কর্মকর্তা সন্দীপন ভট্টাচার্য ইংরেজি মাধম স্কুলের মারধরের অভিযোগের নিন্দা করেন। তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ করতে পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.