মোবাইল ফোনে ‘সুপার-ইম্পোজ’ করা পাঁচ মাথাওয়ালা একটি সাপের ছবি ছিল। ওই সাপ বিক্রির লোভ দেখিয়ে গ্রামের লোকের কাছ থেকে টাকা আদায়ের ফন্দি এঁটেছিল কয়েক জন। গ্রামবাসীদের তৎপরতায় ধরা পড়ে গিয়েছে স্থানীয় দুই বাসিন্দা-সহ ১৫ জন। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গার মাটিকুমড়ো গ্রামে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের এক জন নিজেকে ‘আইপিএস অফিসার’ পরিচয় দিয়েছিলেন। তদন্তে নেমে জানা যায়, সঞ্জিত চক্রবর্তী নামে ওই ব্যক্তি জিআরপি-র অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর ছিলেন। কিছু দিন আগে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় তাঁকে। ওই ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ভুয়ো পরিচয়পত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে দু’টি গাড়ি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে তক্ষক ধরে দিতে পারলে লক্ষ লক্ষ টাকা দেওয়া পাওয়া যাবে বলে গুজব ছড়িয়েছে। তক্ষক ধরতে বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়েছে গ্রামে। গ্রামের মানুষও অনেকে তক্ষক খুঁজতে মেতেছেন রাত-দিন। |
এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ দু’টি গাড়িতে করে দেগঙ্গার মাটিকুমড়ো গ্রামে আসেন বহিরাগত কয়েক জন। গ্রামেরই দুই বাসিন্দা সালাউদ্দিন মণ্ডল এবং হালিম মণ্ডলের সঙ্গে তাঁদের দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলতে দেখা যায়। গ্রামবাসীদের সন্দেহ হওয়ায় ঘিরে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তাঁরা। স্থানীয় মানুষের দাবি, বহিরাগতেরা জানান তাঁরা সরকারি কর্মচারী। তক্ষক ধরতে এসেছেন। ‘আইপিএস অফিসার’ পরিচয় দিয়ে একটি পরিচয়পত্রও দেখান সঞ্জিত। এমনকী কাজে ‘বাধা দিলে’ গ্রামের লোকের ‘হাজতবাস’ হতে পারে বলেও হুমকি দেন। এতেও সন্দেহ নিরসন হয়নি গ্রামের লোকের। তাঁরা খবর দেন পুলিশকে। দেগঙ্গার ওসি শান্তিনাথ পাঁজা সকলকে থানায় নিয়ে যান। প্রতারণার অভিযোগে ১৫ জনকে পরে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের এক কর্তা। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় চৌরাশি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, গত কয়েক মাস ধরেই সালাউদ্দিন ও হালিমের বাড়িতে বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা বেড়েছে। লোক ঠকানোর ব্যবসা ফাঁদার চেষ্টা হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ। |