একলব্য স্কুলে লক্ষাধিক টাকা বকেয়া, ক্ষোভ
ঙ্গলমহলের আদিবাসী আবাসিক স্কুল। স্কুল ও পড়ুয়াদের সমস্ত খরচ বহন করে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার। বছর দেড়েক আগে এমনই এক স্কুলে কয়েক লক্ষ টাকার সামগ্রী সরবরাহ করে বিপাকে পড়েছেন ঝাড়গ্রামের ১০ ব্যবসায়ী। কিছু পদ্ধতিগত ভুলের জন্য রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর থেকে আজও বকেয়া টাকা পাননি তাঁরা। প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ জানিয়েও কাজ না হওয়ায় আগামী দিনে ওই আবাসিক স্কুলে মালপত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ঝাড়গ্রাম শহরের সত্যবান পল্লি এলাকায় রয়েছে রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর পরিচালিত ‘ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়’। শুধুমাত্র আদিবাসী পড়ুয়াদের এই আবাসিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের পোশাক, বই-খাতা ও থাকা-খাওয়া বাবদ যাবতীয় খরচ বহন করে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। দীর্ঘদিন ধরেই স্কুল ও হস্টেলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহের বরাত পেয়ে আসছেন ঝাড়গ্রামের জনা দশেক ব্যবসায়ী।
তারই মধ্যে একটি শিক্ষা-সরঞ্জাম সরবরাহকারী সংস্থা ২০১০ ও ২০১১ সালে ঝাড়গ্রামের ওই স্কুলে দু’লক্ষ সত্তর হাজার টাকার বইপত্র ও গবেষণাগারের সরঞ্জাম সরবরাহ করেছিল। সংস্থাটির কর্ণধার সুকুমার পৈড়ার অভিযোগ, “বকেয়া টাকার কানাকড়িও পাইনি। ফলে সরবরাহ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। লক্ষাধিক টাকা বকেয়া থাকায় ব্যবসার পুঁজিতে টান পড়ছে।” ওই সময়েই আর এক সরবরাহকারী দেবাশিস মহাপাত্র প্রায় নব্বই হাজার টাকার পোশাক ও শয্যাসামগ্রী সরবরাহ করলেও সেই টাকা পাননি। পড়ুয়াদের জলখাবার, খাতা, খেলার পোশাক ও খেলার সরঞ্জাম সরবরাহ বাবদ দু’লক্ষ তেরো হাজার টাকা পাননি সরবরাহকারী দেবশঙ্কর কুণ্ডু। ওই সময়ে ষাট হাজার টাকার জ্বালানি-কাঠ সরবরাহ করেছিলেন বিশ্বরূপ মাহাতো। তিনিও টাকা পাননি। স্কুলের প্রশ্নপত্র এবং বিভিন্ন ফর্ম ছাপানো বাবদ কুড়ি হাজার টাকা পাননি অরবিন্দ মাহাতো। পরে অবশ্য বিভিন্ন সময়ে ওই স্কুলে সামগ্রী সরবরাহ করে, তার টাকা পেয়ে গিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সুকুমারবাবু, দেবাশিসবাবুদের বক্তব্য, “গত এক বছর ধরে আমাদের ঘোরানো হচ্ছে। কিন্তু কী কারণে ওই নির্দিষ্ট সময়ের বিলের টাকা আটকে রাখা হয়েছে, তা খোলসা করে জানানো হচ্ছে না।” ইতিমধ্যে মাসখানেক আগে অবসর নিয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক ফটিকচন্দ্র ঘোষ। স্কুলের সহ-শিক্ষক সুব্রত মুখোপাধ্যায় এখন ওই পদের দায়িত্বে রয়েছেন। সুব্রতবাবু বলেন, “জনা দশেক সরবরাহকারীর টাকা বকেয়া রয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখেছি ওই সময়ে তাঁদের সরবরাহ করা সামগ্রীর খতিয়ান স্কুলের স্টক-বুকে উল্লেখ আছে।” তাহলে কেন বিলের টাকা মেটানো হয়নি? সুব্রতবাবুর জবাব, “বিলের টাকা মেটায় অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর। বিষয়টি দফতরের জেলা আধিকারিককে জানিয়েছি।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ২০১০-১১ সালে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের তৎকালীন জেলা আধিকারিক জ্যোর্তিময় তাঁতি-র মৌখিক নির্দেশে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষকের লিখিত চাহিদাপত্র (রিক্যুইজিশন-লেটার) জারি করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলি নেওয়া হয়েছিল। জ্যোর্তিময়বাবু গত বছর অনত্র বদলি হয়ে গিয়েছেন। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের বর্তমান জেলা আধিকারিক শান্তনু দাসের বক্তব্য, “আধিকারিকের লিখিত নির্দেশ ছাড়াই সম্ভবত স্কুলের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক চাহিদাপত্রটি জারি করেছিলেন। সেই কারণেই জটিলতা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.