সেপ্টেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে শ্রীলঙ্কার মাঠে এটাই ছিল ভারতের শেষ টি-টোয়েন্টি। নিউজিল্যান্ড সিরিজে অবশ্য ঘরের মাঠে আরও দুটো ম্যাচ পাওয়া যাবে। কিন্তু বিশ্বকাপ যেখানে হবে, সেখানে টুর্নামেন্টের মাসখানেক আগে নিজেদের দেখে নেওয়ার সুযোগটা খুব জরুরি ব্যাপার।
ম্যাচটায় ভারত যত না জিতল, তার চেয়ে বেশি করে হারল শ্রীলঙ্কা। টিমটার ব্যাটিং বড্ড নড়বড়ে। সঙ্গকারার না থাকাটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে গিয়েছে। হাসতে হাসতে জিতল ভারত। আরও ভাল লাগল দিন্দার তিন ওভারে ১৯ রান দিয়ে চার উইকেট। তা-ও প্রথম ওভারে ১২ রান দেওয়ার পরে। টিমে তো থাকবেই, এর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম দল থেকে ওকে বাদ দেওয়া কঠিন। ১৩৫ থেকে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে দুর্দান্ত বোলিং করছে ও। বিশ্বকাপের টিকিট কনফার্মড। ইরফানের সঙ্গে শুরুতে উমেশ যাদবের বদলে দিন্দাকে দিয়ে শুরু করানোর কথা ভাবতে পারে ধোনি। |
প্রথম দলে মনোজ ও দিন্দা দু’জনেই ছিল, মনোজের দুর্ভাগ্য ব্যাটিংটা পেল না। কিন্তু দু’জনের প্রথম দলে থাকাটা বাংলা ক্রিকেটের পক্ষে খুব ভাল লক্ষণ। যে কোনও সময় পাঁচটা ওয়ান ডে খেলার পরে হঠাৎ করে ফর্ম্যাট বদল একেবারেই সোজা নয়। কারণ একটা ওয়ান ডে-তে যে ভাবে খেলতে হয়, টি-টোয়েন্টিতে তা পুরোপুরি অন্য রকম হয়ে যায়। সে দিক দিয়ে দেখলে ভাল ভাবেই নিজেদের বদলে ফেলল ধোনির টিম। কিন্তু আমার প্রশ্ন, এই ম্যাচ জিতে গেলেও উপমহাদেশের উইকেটে ১৭০-১৮০ রান কিন্তু করতে হবে। সেখানে ভারত করল তিন উইকেটে ১৫৫। তার চেয়ে ১৭৫-৮ স্কোর হলে বরং খুশি হতাম। হাতে যখন উইকেট রয়েইছে, আর একটু ঝুঁকি নিতে পারত ভারত। অজিঙ্ক রাহানে বহুদিন পর খেলছে। ও একটু স্লো খেলেছে, মানা যায়। কিন্তু রায়না বা ধোনি আরও আক্রমণাত্মক হতে পারত। বিশেষত উইকেটে যখন কিছুই ছিল না।
মিডল অর্ডারে রায়না, ধোনি, মনোজ থাকলেও আমার মনে হচ্ছে বিশ্বকাপ টিমে কিন্তু আর একজন অভিজ্ঞ ফিনিশার দরকার। রায়না বা ধোনি রোজ রোজ জেতাবে না। এখানে আমার বাজি হল রবীন্দ্র জাডেজা। শ্রীলঙ্কার উইকেটে ওর বোলিংটাও কাজে দেবে। রোহিত শর্মাকে বাদ দিয়েও ওকে নেওয়া যায়। কেন যে রোহিতের প্রতিভা নিয়ে এত কথা বলা হচ্ছে, বোঝা কঠিন। প্রতিভার ফুটে বেরোতে কি পাঁচ বছর লাগে? অনেক হয়েছে, এ বার ওর বাদ পড়ার সময় হয়েছে।
সোজাসুজি বলা যাক, টি-টোয়েন্টি টিম হিসেবে ভারত এ বার বিশ্বকাপ জয়ের দাবিদার। ব্যাটিং বা বোলিং তো ভালই, ফিল্ডিং সাইড হিসেবেও এই টিম অন্য অনেকের চেয়ে এগিয়ে থাকবে। এই যে শ্রীলঙ্কায় টিমটা খেলে এল, সেটা ওই সময় খুব কাজে দেবে। ভারত তো এখন বছরে একবার শ্রীলঙ্কা যায়ই। কারণ আপনি জানেন পরিবেশটা কী রকম হবে। মাঠ কী রকম, হোটেল কী রকম, কিউরেটর কে। ভারতীয় রেস্তোরাঁ কোথায়, নেট বোলারদের মুখগুলো কী রকম। এতে কী হয়, মনের অজান্তে একটা ধারণা তৈরি হয় যে এটা তো আমার বাড়ির মতো। সেটা পারফরম্যান্সে খুব ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ১৫৫-৩ (কোহলি ৬৮, রায়না ৩৪ নটআউট), শ্রীলঙ্কা ১১৬ অলআউট (দিন্দা ৪-১৯, ইরফান ৩-২৭)। |