উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রীতিমতো উৎসাহ নিয়ে ভোট দিলেন সাংসদরা। অঙ্কের হিসেবে নিশ্চিতই ছিল ইউপিএ প্রার্থী হামিদ আনসারির জয়। ২৫২ ভোটের ব্যবধানে এনডিএ প্রার্থী যশোবন্ত সিংহকে হারিয়ে দিয়েছেন তিনি। আনসারিই দ্বিতীয় উপরাষ্ট্রপতি যিনি পুনর্নিবাচিত হলেন। আগে পর পর দু’বার উপরাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন এস কে রাধাকৃষ্ণন।
উপ-রাষ্ট্রপতি ভোটের রিটার্নিং অফিসার টি কে বিশ্বনাথন জানিয়েছেন, মোট ৭৩৬টি ভোট পড়েছিল। তার মধ্যে ৪৯০টি পেয়েছেন আনসারি। যশোবন্ত পেয়েছেন ২৩৮টি ভোট। ৮টি ভোট বাতিল হয়েছে।
দুপুর ১টার মধ্যেই ভোট দিতে চলে আসেন বেশির ভাগ সাংসদ। সকাল দশটা নাগাদ আসেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, ইউপিএ সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ও রাহুল গাঁধী। তার পরেও অবশ্য তারকার ঘাটতি হয়নি। দুপুরের মধ্যেই চলে আসেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলির মতো শীর্ষ বিজেপি নেতারা। হাজিরা দেন মুলায়ম সিংহ যাদব, মায়াবতীও। |
সাংসদ হিসেবে এই প্রথম ভোট দিলেন সচিন তেন্ডুলকর ও রেখা। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি রাজ্যসভার এই দুই মনোনীত সদস্য। কিন্তু, আজ ভোট দিতে ঠিক সময়ে পৌঁছে যান তাঁরা। প্রথমে সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী রাজীব শুক্লের বাড়িতে যান সচিন ও রেখা। পরে তাঁরা রাজীবের সঙ্গেই সংসদে আসেন। আগামী কাল শুরু হচ্ছে সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন। সচিন ও রেখা জানিয়েছেন, কাল তাঁরা সংসদে আসবেন। রাজীব শুক্লের বক্তব্য, সচিন নিজের সংসদীয় দায়িত্ব ভালই বোঝেন। তিনি ঠিক সময়ে দায়িত্ব পালন করবেন।
রাষ্ট্রপতি ভোটকে কেন্দ্র করে ভাঙন ধরেছিল এনডিএ জোটে। কিন্তু, যশোবন্ত সিংহকে সমর্থন করেছে এনডিএ-র সব শরিকই। সেই সঙ্গে তাঁকে সমর্থন করেছে জয়ললিতার এডিএমকে। বিজেপি নেতা অনন্ত কুমার বলেছেন, “উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীর জেতার সম্ভাবনা তো সংখ্যার নিরিখে ছিলই না। তবু প্রত্যাশার থেকে ১৪টি ভোট বেশি পেয়েছি। সেটিও তো আমাদের কৃতিত্ব!”
হামিদ আনসারির পিছনে ইউপিএ জোট ছাড়াও রয়েছে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি ও বেশ কয়েকটি বাম দলের সমর্থন। ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তেলুগু দেশম, বিজু জনতা দল এবং আরএসপি।
এক সময়ে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন আনসারি। প্রাক্তন এই কূটনীতিক কাজ করেছেন জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবেও। ২০০৭ সালে উপরাষ্ট্রপতি পদে তাঁর নাম প্রস্তাব করেন বামেরা। ইউপিএ জোটও তাঁকে সমর্থন করায় অনেকেই অবাক হয়েছিলেন।
রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসেবে যথেষ্টই ভাল কাজ করেছেন আনসারি। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি পদে তাঁর নামও বিবেচনার তালিকায় রেখেছিলেন সনিয়া গাঁধী। কিন্তু, রাজনীতির খেলায় রাষ্ট্রপতি ভবন এ যাত্রা অধরা থেকে গিয়েছে আনসারির কাছে। |