দু’টি ব্লক অফিস ছাড়াও বেশ কয়েকটি সরকারি দফতর, স্কুল, কলেজ যেতে ভরসা ১১ কিলোমিটার লম্বা একটি রাস্তা। সেই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করে কৃষ্ণনগর, কাটোয়া, বোলপুর, গুসকরা, আসানসোল, দুর্গাপুর-সহ বেশ কিছু রুটের বাস। অথচ নানা জায়গায় পিচ উঠে বিপজ্জনক দশা গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তার। তৈরি হয়েছে বড় বড় খানা-খন্দ। বাসিন্দাদের দাবি, প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও হাল ফেরেনি। গলসি ১ বিডিও নিরঞ্জন কর অবশ্য আশ্বাস দেন, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানানো হবে।
জাতীয় সড়ক থেকে বুদবুদ হয়ে গুসকরা যাওয়ার এই রাস্তার উপরে নির্ভরশীল গলসি ১ ও আউশগ্রামের দুটি ব্লকের কয়েক হাজার বাসিন্দা। নানা রুটের বাস ছাড়াও দৈনিক বহু লরি, গাড়ি, মোটরবাইকও যাতায়াত করে এই রাস্তা দিয়ে। মানকরে দু’টি উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ, গ্রন্থাগার, হাসপাতাল, পঞ্চায়েত অফিস, ভূমি সংস্কার অফিস রয়েছে। তা ছাড়া গলসি ১ ব্লক অফিস ও আউশগ্রাম ২ ব্লক অফিস যাওয়ার জন্যও এটিই একমাত্র রাস্তা। অভিরামপুরের বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী হিমাংশু মণ্ডল বলেন, “ওই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত মোটরবাইকে চড়ে যাতায়াত করি। বুক ধুকপুক করে।” |
স্থানীয় বাসিন্দা উমাপ্রসাদ ধর, বিনোদ মণ্ডলদের কথায়, “এক নজর দেখলেই মনে হয়, রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য। অথচ আশ্চর্যের বিষয়, প্রশাসনের আধিকারিকেরা তা বুঝতে পারেন না।” তাঁরা জানান, বৃষ্টি নামলে খানখন্দে জল জমে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। দিনের আলোয় তবু দেখেশুনে চলাচল করা যায়। কিন্তু রাতের অন্ধকারে তা-ও সম্ভব নয়। যত শীঘ্র সম্ভব রাস্তাটির আমূল সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বুদবুদের ব্যবসায়ী প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তার এই অবস্থার জন্য ব্যবসাও মার খাচ্ছে। দ্রুত এই রাস্তাটির সংস্কার হলে সবাই উপকৃত হবেন।”
বাসিন্দারা জানান, বছর তিনেক আগে এক বার রাস্তাটি মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পর থেকে রাস্তা পুরোপুরি সংস্কারের কোনও কাজ হয়নি। কোনও রকমে তাপ্পি দিয়ে কাজ চলছে। প্রতিবাদে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বেশ কয়েক দফা আন্দোলন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। মানকরের কংগ্রেস নেতা জয়গোপাল দে জানান, তাঁরা বেশ কয়েক বার প্রশাসনের কাছে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসন বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও কোনও কাজ হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁর দাবি, “এই রাস্তায় যদি কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটে তার দায় কিন্তু প্রশাসনকেই নিতে হবে।” তিনি আরও জানান, জুলাই মাসেই তাঁরা ব্লক অফিসে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন। তখন বিডিও নিরঞ্জন কর আংশিক রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাস্তার কোনও অংশেই সংস্কারের কাজ হয়নি বলে দাবি জয়গোপালবাবুর।
প্রদেশ তৃণমূল কমিটির সদস্য তথা স্থানীয় বাসিন্দা পরেশচন্দ্র পালও জানান, রাস্তাটির মেরামতি হওয়া খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। শীঘ্রই বুদবুদ পঞ্চায়েতের তরফে আংশিক সারাইয়ের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও জানান, দুর্গাপুজোর পরেই রাস্তাটি পূর্ণ সংস্কার করা হবে। গলসি ১ বিডিও নীরঞ্জন কর জানান, এই মুহূর্তে রাস্তা পুরোপুরি সংস্কার করা সম্ভব নয়। তবে গর্তগুলি বুজিয়ে ফেলার আশ্বাস দেন তিনি। সম্পূর্ণ রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে।” |