মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কয়েক লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠেছে সমিতির সম্পাদকের বিরুদ্ধে। সমিতির চেয়ারম্যান সহ বেশ কিছু সদস্য ওই অভিযোগ তুলেছেন। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির ঘটনা। সম্পাদকের বিরুদ্ধে নৌকা, স্পিড বোট বিক্রি করে টাকা নয়ছয়ের পাশাপাশি জলাশয় লিজের টাকা তছরুপের অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছে মালদহ জেলা মৎস্য দফতর। ওই ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন সমিতির অন্তত তিনশো মৎস্যজীবী পরিবার। জেলা মৎস্য দফতরের আধিকারিক (সাধারণ) অসিত সাহা বলেন, “দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে কিছু অনিয়ম নজরে এসেছে। তদন্তের কাজ শেষ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকা ও দৌলতনগরের মৎস্যজীবীদের নিয়ে ১৯৭১ সালে ভালুকা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি গড়ে ওঠে। সদস্য সংখ্যা ২৮০ জন। সমিতির সম্পাদকের নাম প্রকাশ মহালদার। চেয়ারম্যান হরি মহালদার। সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অধিকাংশ জলাশয় ওই সমিতি লিজে নেয়। পরে সেগুলি সমিতির সদস্যদের মাছ চাষের জন্য সাব-লিজ দেওয়া হয়। সমিতির চেয়ারম্যান সহ সদস্যদের একাংশের অভিযোগ, সম্পাদক সমিতির সদস্যদের জলাশয়গুলি লিজ না দিয়ে বেশি টাকায় বাইরের লোকজনকে লিজে দিয়েছেন। কিন্তু টাকার হিসেব দিচ্ছেন না। দু’বছর ধরে সমিতির অডিট হয় না বলেও অভিয়োগ উঠেছে। সমিতির অধীনে থাকা একটি নৌকা ও একটি স্পিড বোট গোপনে সম্পাদক বিক্রি করেছেন বলে জানান সমিতির চেয়ারম্যান।
সমিতির সদস্যদের একাংশের অভিয়োগ, ভালুকায় ১৫ কাঠা জমি আছে সমিতির। সেখানে অফিস ঘর রয়েছে। কিন্তু সরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেলেও সেখানে দরজা-জানলা তৈরি না করে টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সদস্যরা। তাঁদের অধীনে জলাশয় না থাকায় মাছ চাষ করতে পারছেন না। টিকে থাকতে বিকল্প পেশায় চলে যেতে হচ্ছে। সমিতির চেয়ারম্যান হরি মহালদার ও ম্যানেজার সঞ্জয় মহালদার বলেন, “কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সম্পাদক ইচ্ছে মতো সমিতি চালাচ্ছেন। গোপনে সভা করে যা খুশি করছেন। জলাশয় সাব-লিজ দিয়ে পাওয়া কয়েক লক্ষ টাকার হিসেব নেই। হিসেব চাইলে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে প্রশাসনের কর্তাদের ঘটনার কথা জানানো হয়েছে।” যদিও চেয়ারম্যানের অভিযোগ অস্বীকার করেন সমিতির সম্পাদক প্রকাশ মহালদার। তিনি বলেন, “টাকা তছরুপের ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। নৌকা, স্পিড বোট সবই আছে। সদস্যদের একাংশ আমাকে বিপাকে ফেলতে ওই ষড়যন্ত্র করছেন।” |