টুকরো খবর
চিকিৎসককে ‘মার’
প্রহৃত চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় জড়িতকে গ্রেফতারের দাবিতে পরিষেবা বন্ধ করে বিক্ষোভে দেখালেন অন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকমীরা। ঘটনাটি বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। সোমবার সকালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিক্ষোভের জেরে প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা পরিষেবা বন্ধ থাকে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় হাসপাতালে আসা রোগীদের। এ দিকে, চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় অভিযোগের তির ছুঁড়েছেন তৃণমুলের এক গোষ্ঠী অন্য এক গোষ্ঠীর দিকে। যদিও এ ব্যাপারে লিখিত ভাবে অভিযোগ হয়নি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে মারধর করেন। প্রহৃত চিকিৎসক প্রসূন ভট্টাচার্য বিষ্ণুপুর মহকুমা হাস্পাতালে চিকিৎসাধীন। তৃণমূলের জয়পুর ব্লক কার্যকরী সভাপতি দিলীপ খাঁ-র দাবি, “ব্লক যুব সভাপতি ইয়ামিন শেখের ছেলে সফিকুল শেখ জোর করে ডাক্তারবাবুর কাছে নিজের একটি ‘ইনজুরি রিপোর্ট’ চায়। না দেওয়াতেই সে ঘুষি মেরে ডাক্তারবাবুর নাক ফাটিয়ে দেয়।” প্রসূনবাবু বলেন, “একজন এখুনি ইনজুরি রিপোর্ট দেওয়ার দাবি করে আমার নাকে ঘুষি মারে।” সহমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিষ্ণুপুর) সুভাষচন্দ্র সাহা বলেন, “বিএমওএইচকে বিষয়টি পুলিশকে জানাতে বলেছি। পরিষেবা বন্ধ ছিল কিনা খোঁজ নেব।” ইয়ামিন শেখের পাল্টা দাবি, “ছেলে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিল। ওই চিকিৎসকই মেরেছেন।” পুলিশ জানায়, কোনও পক্ষ অভিযোগ করেনি।

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ
গর্ভপাত ও বন্ধ্যাকরণ করাতে গিয়ে রোগিণী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। সোমবার শিলিগুড়ির ডাবগ্রাম এলাকায় পুরসভার মাতৃসদনে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই রোগিণী আশা বর্মন। বাড়ি ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে। তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আশাদেবীর স্বামী পেশায় ভ্যান চালক উত্তমবাবু বলেন, “চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি।” মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “মাতৃসদনে গাফিলতি হয়ে থাকলে পুরসভার তরফে ওই মহিলার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হবে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা আশাদেবী গত শনিবার গর্ভপাত ও বন্ধ্যাকরণ করাতে মাতৃসদনে আসেন। নিয়ম মেনে প্রথমে গর্ভপাত করানো হয়। বন্ধ্যাকরণের চিকিৎসাও হয়। উত্তমবাবুর অভিযোগ, চিকিৎসক ভুল অস্ত্রোপচার করে কিছুটা বেশি কাটাছেঁড়া করেছেন বলে পরিবারের লোকেরা কাছে শনিবারই স্বীকার করেন। এখন রোগিণী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় এ দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দায় এড়াতে চাইছেন। গোলমাল হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুরসভার ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা, স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী মাতৃসদনে যান। দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক অর্ণববাবু বলেন, “যে অভিযোগ পরিবারের লোকেরা তুলছেন তা ঠিক নয়। রোগী স্থিতিশীল। ভাল চিকিৎসার জন্য তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।” আশাদেবীর মা দ্রৌপদী বর্মন, দিদি উষা সরকারদের অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের সময় ভুল বশত বেশি কাটাছেঁড়া হয়েছে বলে চিকিৎসক স্বীকার করেছিলেন। রবিবার তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও কী হয়েছে স্পষ্ট করে কিছু বলছিলেন না। গত ১৩ জুলাই ফাঁসিদেওয়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বন্ধ্যাকরণ করাতে অস্ত্রোপচারের সময় সুমতি বিশ্বাস নামে এক মহিলার বৃহদন্ত্রে ফুটো করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করা হয়। রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যকে পরিবারের লোকেরা অভিযোগ জানালে চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়। তিনি এখনও সুস্থ হননি।

ওষুধ সমস্যা
সাপে ছোবল মারার ওষুধের অভাব। যার জেরে রোগীদের অন্যত্র রেফার করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই সমস্যা পুরুলিয়া জেলা জুড়ে। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের ভাঁড়ারে কয়েকটি ওই ওষুধ (অ্যান্টি ভেনাম সিরাম) থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এই রোগীরা হাসপাতালে এলে ঠিক মতো পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়, কার্যত তা স্বীকার করে নিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সোমবার বরাবাজারের রাঙামাটি গ্রামের বাসিন্দা জ্যোৎস্না রায় নামে এক প্রৌঢ়াকে সদর হাসপাতালে আনা হয়। মুক্তা রায় বলেন, “রবিবার রাতে জেঠিমার বাঁ কাঁধের নীচে সাপ ছোবল মারে। ভোর ৪টে নাগাদ জেঠিমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। আনার পরে হাসপাতাল থেকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তার পরে বাইরে থেকে কিনে আনতে বলা হয়।” তাঁর কথায়, “একাধিক দোকানে ঘুরেও ওই ওষুধ পাইনি। বিকেলের দিকে জেঠিমার অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় নার্সদের জানাই। তাঁরা অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন।” হাসপাতাল সুপার সুরেশ দাস বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে প্রয়োজনের তুলনায় এই ওষুধ কম আসছে। খোলা বাজারেও পাওয়া যাচ্ছে না।” হাসপাতাল সূত্রে খবর, একজন সাপে ছোবল মারা রোগীর জন্য গড়ে ৩০ থেকে ৩৫টি ওই ওষুধ প্রয়োজন সেখানে সোমবার দফতর থেকে মাত্র ৮টি পাওয়া গিয়েছে। এতটা ভয়াবহ না হলেও প্রায় একই ছবি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও। সিএমওএইচ স্বপনকুমার ঝরিয়াত বলেন, “পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় কম ওই ওষুধ কম রয়েছে। তবে ব্লকগুলিতে এই ওষুধ নেই এমন খবর নেই। শীঘ্রই যোগান তা চলে আসবে।”

হাসপাতালের সমস্যা মেটাতে উদ্যোগ, বৈঠক
হাসপাতালে গরহাজির চিকিৎসকদের ফিরিয়ে এনে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালের পরিষেবা স্বাভাবিক করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। সোমবার মাথাভাঙা মহকুমা শাসকের দফতরে আয়োজিত বৈঠকে ওই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার চিকিৎসার গাফিলতিতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। ওই দিন ভারপ্রাপ্ত সুপার-সহ তিনজন চিকিৎসকও নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ। ঘটনার পরেও বিক্ষিপ্তভাবে বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ঘটনার জেরে একজন চিকিৎসক ইস্তফা দেন। ছুটিতে যান ১১ জন চিকিসক। এছাড়াও আরও কয়েকজন গরহাজির থাকায় গত রবিবার মাত্র ৪ জন চিকিৎসক হাসপাতালে ছিলেন। সোমবার অবশ্য ৬ জন চিকিৎসক কাজ করেন। চিকিৎসকেরা হাসপাতালে না আসার পরিষেবা নিয়ে সমস্যা বাড়ছে। এ দিন সমস্যা মেটাতে বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন, পুরসভা, পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন মহকুমা শাসক। মাথাভাঙার মহকুমা শাসক ছিয়ং পালজর বলেন, “আতঙ্কিত চিকিৎসকদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে ফিরিয়ে আনা হবে। পাশাপাশি, হাসপাতালে পরিষেবা বজায় রাখতে কর্মরত চিকিৎসকদের কেউ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না।”

অক্টোবরে এসএনসিইউর চেষ্টা
সদ্যোজাতদের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ) চালুর চেষ্টা করছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সোমবার বিকেলে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকের পর এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরী। বৈঠকে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা ছাড়াও জনপ্রতিনিধিরাও ছিলেন। গ্রন্থাগারমন্ত্রী বলেন, “এসএনসিইউ তৈরির কাজ প্রায় শেষ। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসার বেশ কিছু সামগ্রীর অভাবে তা চালু করতে সাময়িক দেরি হচ্ছে। অক্টোবর মাসের মধ্যেই এসএনসিইউ চালু করার চেষ্টা হচ্ছে।” হাসপাতাল সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “চিকিৎসকেরা যাতে সরকারি নিয়ম মেনে বহির্বিভাগে হাজির হন ও ওয়ার্ডে নিয়মিত রাউন্ডে যান সেই বিষয়ে মন্ত্রী বৈঠকে সতর্ক করেছেন। এ ছাড়াও হাসপাতাল চত্বরে বেআইনি ভাবে গজিয়ে ওঠা অস্থায়ী দোকান উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ দিনের বৈঠকে সমিতির সদস্যদের একাংশ হাসপাতালের একটি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সরব হন। হাসপাতালের সুপার বলেন, “ডিসেম্বর মাসে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা খরচে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ওই যন্ত্রটি বরাদ্দ করেছিল। রোগীদের চিকিৎসার কাজে সেটিকে কাজে লাগানো হচ্ছে না বলে সমিতির সদস্যদের একাংশ অভিযোগ তুলেছেন। সমিতি ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে।”

বিষক্রিয়া, অসুস্থ ২০
প্রসাদে বিষক্রিয়ার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ২০ জন। এদের মধ্যে ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় কালিয়াগঞ্জ ব্লকের অনন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জোরাং গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই গ্রামের এক যুবকের বিয়ে উপলক্ষ্যে এদিন ওই বিয়ে বাড়িতে একটি পুজো হয়। সন্ধ্যায় বাসিন্দাদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। প্রসাদ খাওয়ার পরেও একে একে অসুস্থ হওয়ার খবর আসতে থাকে। পেটে ব্যথা এবং বমি শুরু হয় অসুস্থদের। যে ১০ জনকে কালিয়াগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাদের মধ্যে ৮টি শিশু এবং ২ জন মহিলা। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলাই চন্দ্র রায় বলেন, “এলাকায় মেডিক্যাল টিম গিয়েছে। অসুস্থদের চিকিৎসা চলছে। ভয়ের কোনও কারণ নেই। প্রসাদের বিষক্রিয়ার জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে।”

স্বাস্থ্যপরীক্ষা শিবির
নিউ আপার চেলিডাঙা ক্লাব আয়োজিত স্বাস্থ্যশিবির ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হল আসানসোলে। শনিবার সঙ্গীত পরিবেশন করেন দুর্গা রানা, তপন পাঁজা ও তিমির বিশ্বাস-সহ অনেকে। রবিবার ক্লাব প্রাঙ্গণে আয়োজিত স্বাস্থ্যশিবিরে ১১ জন চিকিৎসক প্রায় দু’শো জনকে পরীক্ষা করেন বলে ক্লাব সূত্রে জানা যায়।

পরিষেবা স্বাভাবিক করতে বৈঠক
হাসপাতালে গরহাজির চিকিৎসকদের ফিরিয়ে এনে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালের পরিষেবা স্বাভাবিক করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। সোমবার মাথাভাঙা মহকুমা শাসকের দফতরে আয়োজিত বৈঠকে ওই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.