বৈঠক চায় যাদবপুরও
আসন ভরাতে ফের কাউন্সেলিং চেয়ে রাজ্যের দ্বারস্থ হচ্ছে বেসু
ঞ্জিনিয়ারিংয়ে খালি আসন পূরণের জন্য রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর যে-উপায় বাতলেছে, যাদবপুর বা বেসু-র তাতে আপত্তি আছে।
এই অবস্থায় ফের এক দফা কাউন্সেলিং করে ফাঁকা আসনে ছাত্র ভর্তির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাবে শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি বা বেসু। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, এই আবেদন পেলে সব দিক খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ দিন ভর্তি কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, কোন পদ্ধতিতে ফাঁকা আসন পূরণ করা যায়, সেই ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন উপাচার্য।
তিন দফায় কাউন্সেলিংয়ের পরেও রাজ্যে ৩৩ হাজারের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১০ হাজারের বেশি আসন ফাঁকা রয়েছে। এর মধ্যে যাদবপুর এবং বেসু-তেই ১৮০টি আসন খালি। জয়েন্ট অথবা এআইইইই-র মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মেধা-তালিকার ভিত্তিতে ভর্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পরে শূন্য আসন পূরণের জন্য এ বারেও উচ্চ মাধ্যমিকে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও গণিতে (বা প্রাণিবিদ্যা) ন্যূনতম ৪৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া ছেলেমেয়েদের সরাসরি ভর্তি করা যাবে বলে জানায় উচ্চশিক্ষা দফতর। তাদের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, মেধা-তালিকা থেকে সেই সব পড়ুয়াকেই ভর্তি করা যাবে, যাঁরা অন্য কোনও ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হননি।
কিন্তু এই ‘দাওয়াই’ আদৌ মনঃপূত নয় যাদবপুর বা বেসু-র। এর পিছনে কয়েকটি যুক্তিও দেখাচ্ছেন দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ শিক্ষকেরা। যাদবপুরের তরফে জানানো হয়েছে, জয়েন্টের মেধা-তালিকার বাইরে থেকে কোনও ছাত্র ভর্তির নিয়মই নেই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে। তা ছাড়া, কয়েকটি আসনে জয়েন্টের মেধা-তালিকা থেকে ছাত্র ভর্তির পরে উচ্চ মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে আসন পূরণ করা হলে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সাযুজ্য থাকবে না। কোনও প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ না-পাওয়া ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করতেও আপত্তি আছে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাদের মতে, এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের সঙ্গে আপস করা হবে।
বেসু-র উপাচার্য অজয় রায় এ দিন বলেন, “চতুর্থ দফায় ই-কাউন্সেলিং করে ছাত্র ভর্তির আবেদন জানিয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি লেখা হবে।” যাদবপুরের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই আবেদনপত্র পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছে বলেও জানান তিনি। অজয়বাবু বলেন, “জয়েন্টের মেধা-তালিকা থেকেই ফাঁকা আসনে ছাত্র ভর্তি করা হবে। উচ্চ মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে নয়।” যে-সব পড়ুয়া ইতিমধ্যেই কোনও প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন, তাঁদেরও ফের ই-কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ দেওয়ার পক্ষপাতী বেসু।
যাদবপুরের উপাচার্য শৌভিক ভট্টাচার্যও জানান, বেসু-র সঙ্গে যৌথ ভাবে রাজ্যের কাছে কোনও আবেদন জানানো যায় কি না, সেই ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে। তবে তিনি বলেন, “এটা তো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। সরকারের নির্দেশ একেবারে অমান্য করা সম্ভব নয়!” ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষকদের একাংশ অবশ্য মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। তাই সরকারের মত মানতে তাঁরা বাধ্য নন।
এ বছর জয়েন্ট এন্ট্রান্সের এক লক্ষ ১৪ হাজার পরীক্ষার্থীরই ‘র্যাঙ্ক’ (মেধা-তালিকায় স্থান) ঘোষণা করেছিল জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। সকলেই কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ পান। কিন্তু তার পরেও অনেক আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে। অনেক অভিজ্ঞ শিক্ষক আবার এত আসন ফাঁকা থাকার পিছনে এ বছর থেকে শুরু হওয়া অনলাইন কাউন্সেলিংকে দায়ী করেছেন। তাঁদের মতে, গত বছর পর্যন্ত যে-‘ম্যানুয়াল কাউন্সেলিং’ চলেছে, তাতে এক জন ছাত্রের কাছে কতগুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন কোন বিষয় পড়ার সুযোগ রয়েছে, সেটা বোঝা অনেক সহজ ছিল। কারণ তখন কাউন্সেলিংয়ের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের সাহায্যও মিলত। কিন্তু অনলাইন কাউন্সেলিংয়ে সেই সহযোগিতার উপায় নেই। অনভিজ্ঞতার ফলে ছাত্রছাত্রীদের একটা বড় অংশ বুঝতেই পারেননি, ক’টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আসন বাছাই করতে পারেন তাঁরা।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান ভাস্কর গুপ্ত অবশ্য এই যুক্তি মানতে চাননি। তিনি বলেন, “গোটা দেশেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আসন ফাঁকা থাকছে। সব পরীক্ষার্থীর র্যাঙ্ক ঘোষণা করে সকলকেই কাউন্সেলিংয়ে সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও কেন সব আসন ভরল না, সেটা ভেবে দেখতে হবে! এ ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিকাঠামোর অভাবও আসন শুন্য থাকার একটা বড় কারণ!” তিনি জানান, অনেক পড়ুয়াই কাউন্সেলিং মারফত ভর্তি হয়ে পরে ক্লাসে আসেন না, অন্যত্র চলে যান। ফলে অনেক আসন ফাঁকা থাকে। অথচ অন্য পড়ুয়া সেই আসনে ভর্তির সুযোগও পান না। ভাস্করবাবু বলেন, “এ ব্যাপারে ছাত্র এবং অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.