ইম্ফল জুড়ে আনন্দের ফটফট শব্দ
ম্ফল জুড়ে কেবল ফটফট শব্দ। তবে, অন্য দিনের মতো, গুলির লড়াই নয়, বহুদিন পরে, আনন্দের পটকার আওয়াজ। আজ সন্ধ্যায়, কোয়ার্টার ফাইনালে মেরি কমের দাপুটে জয়ের পরে, আম দিনের আতঙ্ক ভুলে রাস্তায় নেমে এলেন মানুষ। এক কুকি মহিলার জন্য মেইতেই, বিষ্ণুপুরী, টাংখুল, পাঙ্গাল, কাবুই সকলেই একজোটে উচ্ছসিত। বাবা কাছে নেই। দিদিমা মায়ের সঙ্গে লন্ডনে। লাঙোলে, মাসির তদারকিতে থাকা মেরির দুই যমজ শিশু, টিভির সামনে একদৃষ্টে বসে মায়ের লড়াই দেখল। গতকাল, তাদের পাঁচ বছরের জন্মদিনে কোয়ার্টার ফাইনালের জয় উপহার দিয়েছিলেন মা। আজ ফের জয়। মেরিকে কাছে না পেয়ে রেচুংভার ও খুপনেইভারান্দকে নিয়েই চলল বিজয়োৎসব।
সেমিফাইনালে ওঠার পাঞ্চ। সোমবার মেরি কম। ছবি: উৎপল সরকার।
মেরির বক্সিং অ্যাকাডেমিতে গরমের ছুটি চলছে। অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী নিজের বাড়িতে। তবে আশপাশে থাকা ভবিষ্যতের ‘মেরি’রা আজ অ্যাকাদেমির টিভির সামনে একজোট হয়ে দিদির জয়ের সাক্ষী থাকল। ২০১০ সালে, পঞ্চমবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে মেরিকে বক্সিং অ্যাকাদেমির জন্য জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ। ডিএসপি মেরিকে এএসপি হিসাবে উন্নীত করার কথাও ঘোষণা করেছিলেন ইবোবি। কিন্তু দুই বছর কেটে গেল। ফের সাধারণ নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় এলেন ইবোবি। মেরি অলিম্পিকেও গেলেন। কিন্তু, একটি দাবিও পূরণ হল না। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ মেরির অনুগামী ও ছাত্রছাত্রীরা। এখনও লাঙোলে গেম্স ভিলেজের কাছে অস্থায়ী শিবির খাটিয়ে মেরির অ্যাকাদেমি চলছে। সেনাবাহিনীর উপহার দেওয়া মূল্যবান বিদেশি সরঞ্জাম বৃষ্টি হলেই জলে ভেজে। কিন্তু সরকারের ঘুম ভাঙে না। মাঝেমধ্যে মেরিকে সংবর্ধনা দিয়েই ফের নিদ্রা যায় রাজ্য সরকার।
আশার কথা, উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রক মেরির বক্সিং অ্যাকাডেমি সম্প্রসারণের জন্য ব্যয়ভার বহনে রাজি হয়েছে। কিন্তু, সরকারি জমিই মিলছে না। অবস্থা দেখে মেরির স্বামী ওনলারের গ্রাম সামু লামানের বাসিন্দারা মেরিকে বিনামূল্যে জমি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দূরত্ব ও পরিকাঠামোগত কারণে মেরি চূড়চাঁদপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে অ্যাকাডেমি সরিয়ে নিয়ে যেতে চান না বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে।
বক্সিং অ্যাকাডেমিতে যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, তারা দূর-দূরান্ত থেকে আসে। অ্যাকাডেমিতে যে মেয়েরা শিখছে, তাদের নিজের আবাসে রেখেছেন মেরি। ছেলেদের জন্য পাশেই বাড়ি ভাড়া করেছেন। নিজের বেতনের পুরোটাই ছেলেমেয়েদের খাওয়াদাওয়ার জন্য খরচ হয়। এর বাইরেও আরও হাজার বিশেক টাকার বন্দোবস্ত করতে হয় প্রতি মাসে। ছাত্রছাত্রীরাও অবশ্য মেরির মুখ রেখেছেন। এই বছর রাজ্য বক্সিং-এ মেরির ২১ জন ছাত্রছাত্রী অংশ নেয়। তাদের মধ্যে দু’জন সোনা, সাতজন রুপো ও ছয়জন ব্রোঞ্জ পেয়েছে। আজকের জয়ের পরে, সোনা থেকে দূরত্ব আর মাত্র দুই লড়াইয়ের। অ্যাকাডেমির ছাত্রছাত্রী, মেরির সচিব জিমি লেভিয়ন ও মেরির পরিবারের আশা, অলিম্পিক ফেরত মেরির জন্য কেবল সংবর্ধনা নয়, প্রতিশ্রুতি পালনেরও ব্যবস্থা করবে মণিপুর প্রশাসন।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.