|
|
|
|
প্রবন্ধ ২... |
দয়া করে রবীন্দ্রনাথকে ‘বিজ্ঞানী’ বানাবেন না,
সেটা তাঁর প্রতি অবিচার হবে |
তাঁর বিজ্ঞান মিশে আছে তাঁর সৃষ্টির অণুতে অণুতে। রবীন্দ্রনাথ কোয়ান্টাম ফিজিক্সের ঠিক
কোন কোন
তত্ত্বের ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছিলেন, তার মধ্যে তাঁর মহত্ত্ব খোঁজা পণ্ডশ্রম। লিখছেন
আশীষ লাহিড়ী |
রবীন্দ্রনাথকে তাঁর নিজের ‘টার্মস’-এই বুঝতে হবে এই সরল কথাটা কি রবীন্দ্রনাথের রচনায় বিজ্ঞান-খননের উৎসাহে আমরা ভুলে যাচ্ছি? তাঁর উপনিষদ-পুষ্ট ভাবজগতের বিবর্তনের সঙ্গে আধুনিক বিজ্ঞানের নিজস্ব বিবর্তনকে কী ভাবে তিনি খাপ খাইয়ে নিলেন, কী ভাবে ‘অব্যবসায়ী’ হয়েও আধুনিক বিজ্ঞানের ‘মোকাবিলা’ করলেন অনুসন্ধানের বিষয় তো আসলে সেটাই। নইলে, কবি রবীন্দ্রনাথকে পুরোদস্তুর বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞান-দার্শনিক ধরে নিয়ে বিচার করলে ফেনায়-ফাঁপানো পল্লবগ্রাহিতার ফাঁদে পড়ার একটা বিপদ থাকে। ইদানীং কিছু বাঙালি বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদ সে ফাঁদে পা দিয়েছেন বলে মনে হয়। এতে রবীন্দ্রনাথের প্রতি অবিচার হওয়ার আশঙ্কা, হয়তো বিজ্ঞানের প্রতিও।
আধুনিক-অনাধুনিক নির্বিশেষে অধিকাংশ কবিই বিজ্ঞান-ভীত। এই ভীতি দীন করে তাঁদের অনুভব আর উপলব্ধির জগৎকে। ১৯৬৭ সালে পদার্থবিজ্ঞানী সতীশরঞ্জন খাস্তগীর রবীন্দ্রনাথকে বলেছিলেন সর্বভুক। বলেছিলেন, এমন বিশ্বগ্রাহী যাঁর ক্ষুধা, সেই কবি বিজ্ঞানকে ভয় করবেন কেন? রবীন্দ্রনাথ ভয় পাননি। আধুনিক বিজ্ঞানের বহু তত্ত্ব ও তথ্যকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গ্রহণ করে তাঁর ‘সৃষ্টিভঙ্গি’র অঙ্গীভূত করে নিয়েছিলেন। অন্য অনেক কিছুর মতো এখানেও তিনি স্বভাবত স্বতন্ত্র। কিন্তু কাজটা তিনি করলেন কী ভাবে? তিনি তো কোনও দিন হাতে-কলমে বিজ্ঞান শেখেননি, অঙ্কও জানতেন না। আসলে বিজ্ঞানের খুঁটিনাটির মধ্যে না গিয়ে তাঁর সারদর্শনটিকে তিনি আত্মস্থ করতে জানতেন। কবি হিসেবে সে কাজে তিনি সিদ্ধহস্ত। যেমন, তিনি বুঝেছিলেন, বিজ্ঞান এক দিন সরল কার্যকারণের নিয়ম ও নির্দেশবাদ মেনে নিয়েছিল। কিন্তু অতঃপর বিংশ শতকে বিজ্ঞানে এল গতিতত্ত্ব। অণু-পরমাণুর জগৎ নিয়ত-চলমান। আবার নক্ষত্রজগৎও কেবলই ছুটে চলেছে প্রবল থেকে প্রবলতর গতিতে। আগেকার কার্যকারণের নিয়মে সব সময় এর হদিশ মেলে না। এক সময়কার একমাত্রিক, যান্ত্রিক, সরল ডিটারমিনিজম থেকে এই দ্বান্দ্বিক বহুমাত্রিকতায় আরোহণ, সেই পর্বান্তরের তাৎপর্য, তিনি কিন্তু তাঁর মতো করে বুঝে নিয়েছিলেন। এখানেই তাঁর প্রতিভার অসামান্যতা।
শুনলে একটু স্ববিরোধী মনে হতে পারে, কিন্তু কবি রবীন্দ্রনাথ যে ঔপনিবেশিক বাংলার সন্তান, তাঁকে যে ইউরোপের আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্মিলিত প্রসবযন্ত্রণা স্বচক্ষে দেখতে হয়নি, তাতে শাপে বর হয়েছিল। ইংরেজ রোম্যান্টিক কবিদের কালটি ছিল আধুনিক যন্ত্রসভ্যতার এক আলো-আঁধারি অধ্যায়। এক দিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতি, অন্য দিকে মানুষের অভাবনীয় দুর্গতি প্রত্যক্ষ করেছিলেন তাঁরা। ফলে, বিজ্ঞান সম্বন্ধে এই রোম্যান্টিক কবিদের মনে একটা দ্বিধা কাজ করত। কেউ কেউ তো নিউটনীয় বিজ্ঞানের ‘একচক্ষু দৃষ্টি’ নিয়ে খোলাখুলিই আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথ আধুনিক বিজ্ঞানকে বরণ করেছিলেন সেই মল্লভূমি থেকে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে। বিজ্ঞানের আলোই তিনি পেয়েছিলেন, আঁচটা তাঁর গায়ে লাগেনি। রবীন্দ্রনাথের শৈশবেই বিদেশি শাসক নিজের গরজে আধুনিক মুদ্রাযন্ত্র, রেলপথ, টেলিগ্রাফ ইত্যাদির প্রবর্তন ঘটালেও, কলকারখানার ব্যাপক বিস্তার ও তার আনুষঙ্গিক সুফল-কুফল স্পষ্ট হয়ে উঠতে তখনও অনেক দেরি। সেটা যত দিনে প্রকট হয়ে উঠল, তত দিনে রবীন্দ্রনাথ ত্রিশোর্ধ্ব যুবক। তত দিনে এই বাঙালি কবি বিজ্ঞানের তত্ত্বগত দিকের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক স্থাপন করে ফেলেছেন। সে প্রণয়ে অবশ্য কিছুটা চিড় ধরবে আরও পরিণত বয়সে, ‘মুক্তধারা’য় (১৯২২)। |
|
কবিতায় রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান-আত্মীকরণের কয়েকটি সুস্পষ্ট পর্যায় দেখা যায়। সতেরো বছরের ছেলেটি কাঁচা হাতে লিখেছিল: সমস্ত জগৎ/নিয়মের যন্ত্রচক্রে ঘুরিছে ঘর্ঘর। (‘কবিকাহিনী, ১৮৭৮) কিছুটা পরিণতি অর্জন করার পর লিখেছেন: ‘...কত শত বর্ষ ধরি/ দূর পথ অতিক্রম করি/ পাঠাইছে বিদেশ হইতে/ তারাগুলি আলোকের দূত/ ক্ষুদ্র ঐ দূর দেশবাসী/ পৃথিবীর বারতা লইতে।/ রবি ধায় রবির চৌদিকে,/ গ্রহ ধায় রবিরে ঘেরিয়া।’ (‘প্রভাত-সংগীত’, ১৮৮৩) এ ছবি টলেমির ভূ-কেন্দ্রিক জগৎ নয়। নয় কোপার্নিকাসের চলন্ত পৃথিবী আর সূর্যের ধারণাও। এ দৃশ্য নিউটনের প্রদক্ষিণরত সূর্য-চন্দ্র-গ্রহ-উপগ্রহের এক চলচ্চিত্র, যার পরিচালক নিউটন। আবার এই ছবির পাশেই রাখছেন পৌরাণিক প্রলয়তত্ত্বকে: ‘জাগিয়া উঠিলা মহেশ্বর,/ তিন কাল, ত্রিনয়ন মেলি.../ মহা অগ্নি উঠিল জ্বলিয়া/ জগতের মহা চিতানল।’
রবীন্দ্রনাথের জন্মের দু’বছর আগেই বেরোয় ডারউইনের ‘অরিজিন’। কিন্তু বিবর্তনবাদের সুস্পষ্ট স্বাক্ষর রবীন্দ্রনাথের সৃজনধর্মী রচনায় পাওয়ার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হয় ‘মানসী’ (১৮৯০) ও ‘সোনার তরী’-র (১৮৯৪) যুগ পর্যন্ত। রবীন্দ্রনাথের বাল্য ও কৈশোরকাল যদি কেটে থাকে নিউটনের আলোয়, তাঁর যৌবনকাল আরম্ভ হয়েছিল ডারউইনের ছায়ায়। যার প্রসিদ্ধ পরিণতি ‘বসুন্ধরা’ কবিতা। পাশাপাশি, সোশ্যাল ডারউইনিজমের প্রভাব প্রবল ভাবে প্রকাশ পায় ‘বিসর্জন’-এর (১৮৯০) রঘুপতির মুখে হত্যা-প্রশস্তিতে: রক্তের অক্ষরে/ অবিশ্রাম লিখিতেছে বৃদ্ধ মহাকাল/ বিশ্বপত্রে জীবের ক্ষণিক ইতিহাস।
গীতাখ্য পর্যায়ের নম্র অন্তর্মুখ আধ্যাত্মিকতা পেরিয়ে ‘বলাকা’য় (১৯১৬) পৌঁছে অন্য এক রবীন্দ্রনাথ। তিনি গতির মহিমায় অভিভূত। বিংশ শতকের পদার্থবিজ্ঞান বলে, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বস্তুকণা থেকে সুদূরতম নক্ষত্রজগৎ পর্যন্ত বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কেবল চলা আর চলার আবেগ। যাকে দেখে স্থির মনে হয়, সেও আসলে দুরন্ত গতিতে চলমান: স্পন্দনে শিহরে শূন্য তব রুদ্র কায়াহীন বেগে;/ বস্তুহীন প্রবাহের প্রচণ্ড আঘাত লেগে/ পুঞ্জ পুঞ্জ বস্তুফেনা উঠে জেগে;/ ক্রন্দসী কাঁদিয়া ওঠে বহ্নিভরা মেঘে। গতিবন্দনা চলেছে অবিরাম: ‘পূরবী’র (১৯২৫) সাবিত্রী থেকে বনবাণীর (১৯৩১) বৃক্ষবন্দনায়, এমনকী ‘বিচিত্রিতা’য় (১৯৩৩) নরনারীর সৃষ্টিলীলার পুষ্পায়নে: ‘তোমার আমার দেহে আদিছন্দ আছে অনাবিল/ আমাদের মিল। তোমার আমার মর্মতলে/ একটি সে মূল সুর চলে,/ প্রবাহ তাহার অন্তহীন।’
‘নবজাতক’-এ (১৯৪০) ওঠে অন্য প্রশ্ন: প্রাণরূপ রাতের রেলগাড়ির চালক কে? কেউ বলে, যন্ত্র সে। যারা তা বলে, উনিশ শতকে বলত, তারা ডিটারমিনিস্ট। কিন্তু তিরিশের দশক-পেরোনো কবি ‘বলে, সে অনিশ্চিত, তবু জানে অতি/ নিশ্চিত তার গতি।’ অনিশ্চিত, তবু এতটাই নিশ্চিত যে চোখ বুজে সেই ইঞ্জিন-চালকের হাতে প্রাণ সঁপে দেওয়া যায়! এ যেন তাঁর অতিপ্রিয় ঈশোপনিষদের সেই তদেজতি তন্নৈজতি তদ্দুরে তদ্বন্তিক-এর আধুনিক বঙ্গানুবাদ! তত দিনে অনিশ্চয়তা তত্ত্ব আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের মর্মমূলে গেঁথে গেছে। রবীন্দ্রনাথের কাব্য-অ্যান্টেনায় তার ঢেউ ঠিকই সাড়া জাগিয়েছে।
পদার্থবিজ্ঞানে অনিশ্চয়তাবাদের অভ্যুত্থানের পর অন্য অনেকের মতো রবীন্দ্রনাথ কিন্তু নিজের অধ্যাত্মচেতনার সমর্থনে আধুনিক বিজ্ঞানের সংশয় বা সংকটকে কাজে লাগাতে উৎসুক হননি। অধ্যাত্মচেতনা আর বিজ্ঞানের সংশয়কে রেখেছেন পাশাপাশি। তিনি সুবিধাবাদী অধ্যাত্মবাদীদের দলে নন। যাঁরা মনে করেন, বিজ্ঞান ও ধর্মে কোনও বিরোধ নেই, তাঁরা কিন্তু ওই সুবিধাবাদী কাজটিই করেছিলেন: মেঘনাদ সাহা-অনিলবরণ রায় বিতর্কে তার স্পষ্ট ইতিহাস লেখা আছে।
কিন্তু বিজ্ঞানের তথ্যের দিকটায় যাকে বলে হার্ড ফ্যাক্টস কবির উৎসাহ কম। প্রয়োগ-বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ আরও কম। বিজ্ঞান বলতে যাঁরা শুধুই বিজ্ঞানের তথ্য বা ফলিত প্রয়োগ বোঝেন, তাঁরা ওই কারণেই রবীন্দ্রনাথকে বুঝতে ভুল করেন। তিনি একটি নির্দিষ্ট জগৎ ছেড়ে অন্য একটি নির্দিষ্ট জগতে ঔপনিষদিক জগৎ ছেড়ে বৈজ্ঞানিক তথ্যের জগতে প্রবেশ করছেন না। সতীশরঞ্জনের মূল্যবান চেতাবনী: রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গানে বিজ্ঞানের প্রভাব রয়েছে ঠিকই, কিন্তু ইন্দ্রিয় বা যন্ত্র-লব্ধ অভিজ্ঞতা বা জ্ঞানকে অতিক্রম করে তাঁর কবিতা ও গানে বিশ্বানুভূতি এবং ভূমার আনন্দ স্বতই উৎসারিত, এ কথা আরও বেশি করে সত্য। এই দুটো দিককে এক সঙ্গে না বুঝলে রবীন্দ্রনাথকে বোঝা হয় না: আমাদের বিজ্ঞান-বোঝাটাকে রবীন্দ্রনাথের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় মাত্র। আকাশভরা সূর্যতারা-র বিখ্যাত ‘বিস্ময়’ ঋগ্বেদের ঋষি-কবির বিস্ময়বোধ নয়। আধুনিক কবির বিপন্ন বিস্ময়ও নয়। এ বিস্ময় নিউটন থেকে আইনস্টাইন-এডিংটন-জিন্স পর্যন্ত জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিপুল রহস্যোদ্ঘাটনের সঙ্গে পরিচিত এক আধুনিক মনের আনন্দবিহ্বলতা। এটা একটা দিক। অপর দিকে যখন তিনি বলেন, ‘তার অন্ত নাই গো যে আনন্দে ভরা আমার অঙ্গ’, তখন বিশুদ্ধ ঔপনিষদিক আনন্দ-উপলব্ধিই ব্যক্ত হয়। কিন্তু ওই গানেরই দ্বিতীয় লাইনে জানান, সেই অঙ্গের অণু-পরমাণু কত যে আলোর সঙ্গ পেল, তারও অন্ত নেই। উনিশ শতকের আগে মানুষ তো জানতই না যে, নিখিল বস্তু-ব্রহ্মাণ্ড গঠিত যে উপাদানে, সেই একই উপাদানে গঠিত জীবদেহও। তাই অঙ্গের এই অণু-পরমাণুগুলি যে অজস্র আলোর সঙ্গ পেয়েছে, পাবে, এ যেন অতি সাধারণ কথা; সাধারণ বলেই সেই বিস্ময়ের অন্ত নেই! একই জাদুর খেলা ‘আমি কেমন করিয়া জানাব আমার জুড়ালো হৃদয় জুড়ালো’-তেও। সেখানে ‘গগনভরা প্রভাত’ তাঁর ‘অণুতে অণুতে’ প্রবেশ করে। অন্যত্র শুনি, আলো এসে গান করে যায় কবির প্রাণে। বিজ্ঞানের নিজস্ব অন্তরায়ণেই রবীন্দ্রনাথ স্বরাট। তাঁর উপনিষদও থাকছে, তাঁর বিজ্ঞানও থাকছে। যেন কলয়েড পাশাপাশিই থাকছে, কিন্তু মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে না।
তাই অঙ্ক বা বিজ্ঞান, কোনওটারই সনিষ্ঠ চর্চা না করেও রবীন্দ্রনাথ কোয়ান্টাম ফিজিক্সের ঠিক কোন কোন তত্ত্বের অভ্রান্ত ভবিষ্যৎবাণী করে গিয়েছিলেন, তার মধ্যে তাঁর মহত্ত্ব খোঁজা পণ্ডশ্রম। তাঁর বিজ্ঞান মিশে আছে তাঁর সৃষ্টির অণুতে অণুতে। বিজ্ঞানও, অন্য অনেক কিছুর মতো, তাঁর পাকপ্রণালীর রসদ। কখনও প্রচ্ছন্ন, কখনও আলোড়িত সে মিশ্রণ। রবীন্দ্রকানন খুঁড়ে বিজ্ঞানের তত্ত্ব খোঁজার চেয়ে সে মিশ্রণের প্রকৃতি অনুধাবনের কাজটা ঢের বেশি ফলপ্রদ।
|
কৃতজ্ঞতা: স্বর্ণকমল ভট্টাচার্য, রবীন্দ্রকাব্যে আধুনিক বিজ্ঞান, (রচনাকাল ১৯৬১), কথারূপ, ২০১১; ভূমিকা: সতীশরঞ্জন খাস্তগীর, ১৯৬৭ |
|
|
|
|
|