নেই পওয়ার
সনিয়ার ভোজে হাজির ১২ জন তৃণমূল সাংসদ
তাঁর দাবি মেনে ইউপিএ-র আট বছরের জীবনকালে এই প্রথম সমন্বয় কমিটি গড়ল কংগ্রেস। তবু কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর দেওয়া ভোজসভায় এলেন না এনসিপি নেতা তথা কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ার।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগের দিন সনিয়ার ভোজসভায় দলের ১২ জন সাংসদকে পাঠালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু আজই দলের নেতা তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে একলাই লড়তে পারে তৃণমূল।
সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর মুখে এমনই ‘নরম-গরম’ পরিস্থিতি কেন্দ্রের শাসক জোটে।
রাষ্ট্রপতি ভোটে শেষ পর্যন্ত প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন করলেও সেই উপলক্ষে সনিয়ার ভোজসভায় কোনও প্রতিনিধি পাঠাননি মমতা। (দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সুখেন্দুশেখর রায় ভোজসভায় যাওয়ায় মমতা ক্ষুব্ধ বলেই তৃণমূল সূত্রের খবর) কিন্তু উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির সমর্থনে আজ সনিয়ার দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে দলের ১২ জন সাংসদকে পাঠিয়ে তিনি ‘ইতিবাচক’ বার্তা দিলেন বলেই কংগ্রেস সূত্রের মত। আনসারিকে সমর্থন করার কথাও আজ ঘোষণা করে দিয়েছেন মমতা।
কিন্তু তিক্ততা মোছার এই চেষ্টার পাশাপাশি রাজ্য কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক এবং নীতিগত প্রশ্নে যে তিনি অনড়ই রয়েছেন, সেই বার্তাও আজ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। মধ্যাহ্নভোজের ঠিক আগেই লোকসভার স্পিকারের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে সুদীপবাবু কংগ্রেস নেতৃত্বকে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তাঁদের আপত্তি রয়েছে এমন কোনও বিল যেন বাদল অধিবেশনে আনা না হয়। সেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, আগামী লোকসভা ভোটে রাজ্যে একলা চলার কথা ভাবছে তৃণমূল। উল্লেখ্য, প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের প্রতি ঘোরতর অসন্তুষ্ট মমতা ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত ভোটে একলা লড়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন।
মমতার এই ‘দ্বিমুখী রাজনৈতিক কৌশল’ অবলম্বন করছে ইউপিএ-র আর এক শরিক এনসিপি-ও। যথেষ্ট গুরুত্ব না পাওয়ার অভিযোগ তুলে ক’দিন আগেই মন্ত্রিসভা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন শরদ পওয়ার। মন্ত্রিসভার বৈঠকেও যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি এবং দলের অন্য পূর্ণমন্ত্রী প্রফুল্ল পটেল। তার পর যৌথ সিদ্ধান্ত নেওয়ার লক্ষ্যে ইউপিএ-র সমন্বয় কমিটি গড়ার তোড়জোড় শুরু হলেও কংগ্রেস-এনসিপি দূরত্ব বেড়েছে বই কমেনি। কারণ, মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে পওয়ারের প্রবল প্রতিপক্ষ সুশীল কুমার শিন্দেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং লোকসভার নেতার পদে বসিয়েছেন সনিয়া।
তাই আজ মধ্যাহ্নভোজে আসেননি পওয়ার-পটেল। তবে সমঝোতার পথ বন্ধ না করে পওয়ার-কন্যা সুপ্রিয়া সুলে এবং দলীয় নেতা ডি পি ত্রিপাঠীকে পাঠিয়েছিল এনসিপি। চাপ বজায় রেখে রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেসের কাছ থেকে কতটা কী আদায় করা যায়, তাই আপাতত দেখতে চাইছেন পওয়ার।
এনসিপি প্রধানের প্রাথমিক দাবি মেনে সমন্বয় কমিটি গড়ার পথে অবশ্য অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে কংগ্রেস। সংবাদ সংস্থার দেওয়া খবর অনুযায়ী, সনিয়ার নেতৃত্বে এই কমিটিতে কংগ্রেসের তরফে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্দে, অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি থাকবেন। শরিকদের কাছ থেকে তাদের প্রতিনিধিদের নাম চেয়ে পাঠানো হয়েছে। আট তারিখ, সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনে সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক হতে পারে।
তবে শরিকদের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সমর্থক দলগুলিকে পাশে টেনে ‘দ্বিমুখী কৌশল’ নিচ্ছে কংগ্রেসও। আজ মধ্যাহ্নভোজে সমাজবাদী পার্টির প্রধান মুলায়ম সিংহ যাদবের সঙ্গে এক টেবিলে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, আর বহুজন সমাজবাদী পার্টির প্রধান মায়াবতীকে নিয়ে সনিয়া। কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, সমর্থনের ভিত্তি বাড়িয়ে শরিক ও সমর্থক সব দলকেই সভানেত্রী এই বার্তা দিতে চান যে, কেউই ‘অপরিহার্য’ নন। মুলায়ম-তাসে মমতার ‘বিদ্রোহ’ সামাল দেওয়া গিয়েছে। আবার মুলায়ম এখন খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির প্রশ্নে বেঁকে বসেছেন। তাই মায়াবতী সম্পর্কে নরম অবস্থান নেওয়া হচ্ছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.