আর্থিক লোকসানে ধুঁকতে থাকা সংস্থাকে লাভজনক করে তুলতে পরিষেবার মান বাড়ানোর উপরে জোর দিতে চান ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটিডের (বিএসএনএল) বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকরা। সোমবার থেকে শিলিগুড়িতে ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেডের (বিএসএনএল) অফিসারদের সংগঠন সঞ্চার নিগম এক্সিকিউটিভস অ্যাশোসিয়েশনের (ইন্ডিয়া) রাজ্য কমিটির দুদিনের সভার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান নানা স্তরের অফিসাররা। যেখানে সংস্থার শীর্ষ কর্তা থেকে শুরু করে সব স্তরের অফিসাররা খোলামেলা মত বিনিময় করেন। একইসঙ্গে উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের বাড়তি দায়িত্ব পালনের কথা যেমন আলোচনায় উঠে এসেছে, তেমনই নানা স্তরের আধিকারিকদের পরিষেবার মান বাড়ানোর জন্যও শীর্ষ কর্তারা পরামর্শ দিয়েছেন।
যেমন, বিদ্যুতের অপচয়, বিভিন্ন মেরামতি, রক্ষণাবেক্ষণ, পুরানো তারের সংস্কার, কাজের আগ্রহ বাড়ানো, নতুন গ্রাহক বাড়ানোর জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরির মত বিষয়গুলি সামনে এসেছে।আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সংস্থার ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেলের চিফ জেনারেল ম্যানেজার গোপাল চন্দ্র বসু, কলকাতা টেলিফোন্স-এর চিফ জেনারেল ম্যানেজার সোমনাথ মাইতি-রত উচ্চ পদস্থ কর্তারা।
গোপালবাবু বলেন, “সংস্থা লোকসানে চলছে। অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে ঠিকই। কিন্তু পরিষেবা বাড়িয়ে আর খরচ কমিয়ে তার মোকাবিলা করতে হবে। এরজন্য রক্ষণাবেক্ষণ, মোবাইল, ইন্টারনেট পরিষেবার পরিধি আরও বাড়াতে হবে। প্রতিদিন সকালে শুনি বহু বিটিএস বা মোবাইল টাওয়ারের ত্রুটির কথা। এটা কমাতে হবে। ব্রডব্যান্ড সার্ভিস আরও জোরদার করতে হবে। সবাইকে একজোট হয়েই কাজ করতে হবে।”
আরও এক ধাপ এগিয়ে সোমনাথবাবু বললেন, “আমাদের প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং প্রচেষ্টার। সর্বত্র নতুন নতুন বহুতল, নগরী গড়ে উঠছে। প্রতিটি রিজিওনে সেখানে সবার আগে পৌঁছাতে হবে। নতুন সংযোগ হলেও তার থেকে বেশি সংযোগ কমে যাচ্ছে। এতে আমরা আরও পিছিয়ে যাচ্ছি। এরজন্য রক্ষণাবেক্ষণে আরও জোর দিতে হবে। পুরানো মাটির নিচের অনেক তার সংস্কার হচ্ছে না। কর্মীদের এখনই এই কাজে হাত দিতে হবে।”
সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের একটি সংগঠনের সম্পাদক এসএ আজমি বললেন, “সংস্থার কর্মীদের কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনেকটাই কমতি রয়েছে। কর্তব্য, দায়দায়িত্বের অনেক কিছুই নথিবদ্ধ করার ব্যবস্থা থাকছে না। অবিলম্বে উচ্চ পদস্থ কর্তাদের বিষয়টি দেখা দরকার।”
আবার সংস্থার এক কর্মী সংগঠনের নেতা পরিমল সরকার বললেন, “বিদ্যুতের অপচয় এখনই বন্ধ করা দরকার। কোটি টাকার বিল আসছে। সংস্থা মেটাচ্ছে। মাটির নিচের তারের অবস্থা খুবই খারাপ। তার কিছু বদল দরকার। অফিসার বিষয়টি দেখতে হবে। সংস্থার প্রয়োজনে অনেকে লাইম্যান নিজের টাকায় সহায়ক রাখেন। এদের জন্যও কোনও ব্যবস্থা নেই।” আরেক কর্মী সংগঠনের নেতা পুলক গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “সংস্থার একাংশ আধিকারিক ‘ইন্ডিয়ান টেলিকম সার্ভিস’ বা আইটিএস। তাঁরা আর কতদিন সংস্থার কাজ করবেন তা ঠিক নেই। এই অবস্থায় তাঁরা ভাল অফিসার হলেও নতুন কাজের প্রেরণা কী ভাবে দেবেন?” অফিসারদের সংগঠনের এক নেতা বিজয় কুমার ভট্টাচার্য যেমন বললেন, “রাজস্ব, সংযোগ বাড়ানোর লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে। ভাল কথা। কিন্তু আরও অন্যভাবে কীভাবে আয় বাড়ানো যায় তাও দেখা দরকার। যেমন, প্রত্যেক অঞ্চলের গুদামে পরিষেবা বর্হিভূত অনেক মালপত্র পড়ে রয়েছে। সেগুলি বিক্রি করলেও কম টাকা আসবে না। যৌথভাবে সবাইকে বসে এই ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।” যে সংগঠনের উদ্যোগে এদিনের সভা সেই সঞ্চার নিগম এক্সিকিউটিভস অ্যাশোসিয়েশনের (ইন্ডিয়া) রাজ্য সম্পাদক দিলীপ সাহা এদিন বলেছেন, “টেন্ডার প্রক্রিয়া, কাজের পরিবেশ ঠিকঠাক করা প্রয়োজন। কর্মীদের চাকরির নিয়মকানুন নিয়ে সুষ্ঠু পরিকল্পনা বা নীতি নেই। তা তৈরি করা দরকার।”
|
বিমা প্রকল্প আনার আগে সমীক্ষা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বিভিন্ন ধরনের মানুষকে নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে তার পর বিমা প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা করেছে এইচডিএফসি লাইফ। সম্প্রতি বিশেষ করে শহরাঞ্চলের মহিলাদের নিয়ে এক সমীক্ষা করেছে সংস্থা। তার উপর ভিত্তি করেই ‘স্মার্ট ওম্যান’ শীর্ষক একটি জীবন বিমা প্রকল্প বাজারে ছাড়ল সংস্থা। এইচডিএফসি লাইফের এগ্জিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় ত্রিপাঠী জানান, “৪৫ বছর এবং তার বেশি বয়স্ক এবং তরুণদের নিয়ে আরও ২টি সমীক্ষাও শেষ করেছি। তার ভিত্তিতে চলতি অর্থবর্ষেই প্রকল্প ছাড়ার পরিকল্পনা করছি।” তিন ধরনের স্মার্ট ওম্যান প্রকল্প ছেড়েছে সংস্থা: ক্ল্যাসিক, প্রিমিয়ার এবং এলিট। ওই সব প্রকল্পে গর্ভধারণের সময়ে সমস্যা এবং দৈহিক অসুবিধা নিয়ে জন্মানো শিশুর জন্য আর্থিক সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। সুবিধা মিলবে বিভিন্ন স্ত্রী অঙ্গের ক্যানসারের ক্ষেত্রেও। এলিট প্রকল্পে স্বামী মারা গেলে ৩ বছর ধরে প্রিমিয়াম মকুবের পাশাপাশি একই অঙ্কের অতিরিক্ত অর্থও হাতেপাবেন গ্রাহক।
|