অসুস্থ হয়ে মৃত্যু নয়, তাঁর ভাইকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হলেন রায়নার বাধগাছা গ্রামের বাসিন্দা কায়েম আলি। সোমবার বাড়ির লোকজন ও গ্রামের কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তাঁদের অভিযোগ, রায়না থানার পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করছে না। পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “ময়না-তদন্ত রিপোর্টে ওই মৃত্যুকে ‘স্বাভাবিক’ বলা হয়েছে। তবুও স্থানীয় মানুষজন ও পরিবারের দাবি মতো গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করা হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই বাদশাহী রোডের পাশে বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় আজেম আলি নামে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ। তার আগের দিন বিকেলে খণ্ডঘোষের কেঁউদিয়ায় গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী মমতাজ বেগম। সকালে ফিরে এসে তিনিই প্রথম দেহ দেখতে পান। ঘটনার খবর পেয়ে বাড়িতে জড়ো হন এলাকার মানুষজন। উপযুক্ত তদন্তের দাবিতে তাঁরা দেহ তুলতে বাধা দেন। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) অম্লানকুসুম ঘোষ তদন্তের আশ্বাস দেওয়ার পরে দেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। |
মৃতের দাদা কায়েম আলি পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেন, তখন আশ্বাস দিলেও পরে পুলিশ এই ঘটনার ব্যাপারে কাউকে জেরা পর্যন্ত করছে না। তাঁর দাবি, রায়না থানার ওসি রাকেশ সিংহ এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না। তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানতে গেলে উল্টে তাঁদের অপমান করে থানা থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ।
আজেম আলির বাড়ির লোকজনের আরও অভিযোগ, মৃতদেহের যে ছবি তাঁরা দেখেছেন, তাতে গলায় কালো দাগ, হাঁটুতে লুঙ্গি জড়ানো। ডান হাতেও চোটের চিহ্ন ছিল। কিন্তু পুলিশ তাঁদের জানিয়েছে, স্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হয়েছে আজেমের। কিন্তু সেক্ষেত্রে মৃতদেহে ওই সব চিহ্ন কী ভাবে হল, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কায়েম আলিরা। তাঁদের আরও দাবি, সেই রাতে বাড়ির গ্রিলের দরজা, জানালা খোলা ছিল। বাড়ি থেকে মদের বোতল ও তিনটি গ্লাস উদ্ধার হয়। বারবার রায়না থানায় গিয়ে সন্দেহভাজনদের নামের তালিকা দিয়ে অভিযোগ করতে চাইলে পুলিশ তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে বলে তাঁদের দাবি।
রায়না থানার ওসি এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুলিশ সুপার বলেন, “মৃতদেহ দেখে আমাদের প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ হয়েছিল। কিন্তু ময়না-তদন্তের রিপোর্ট ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ জানানোয় তদন্তের কিছু ছিল না। তবে নতুন করে অভিযোগ মেলার পরে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।” |