বীরভূমের লালমাটির পরতে পরতে ইতিহাস। মথুরা-বৃন্দাবন যখন জন্মাষ্টমীতে উৎসব মুখর হয়ে ওঠে, সেই সময় ময়নাডালও মেতে ওঠে এক অনাবিল আনন্দোৎসবে। হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় মহাপ্রভুর মন্দির প্রাঙ্গণে। প্রসাদ পান তাঁরা। সারারাত চলে কীর্তনগান। পর দিন অনুষ্ঠিত হয় নন্দোৎসব। সারা বছরই এখানে মহাপ্রভুর অন্নভোগ হয় ষোল সের চালের। সঙ্গে থাকে পঞ্চব্যঞ্জন। শেষ পাতে গুড়ের পায়েস। মন্দির চত্বরের পুরাতন তমাল গাছটি যেন শ্রীকৃষ্ণকে মনে পড়িয়ে দেয়। জনশ্রুতি, প্রায় চারশো বছরের পুরনো এখানকার দারুমূর্তি। মহাপ্রভুর স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে নাকি এক ভক্ত প্রায়ান্ধ এক বৃদ্ধ সূত্রধরকে অনুরোধ করে এই দারুমূর্তি নির্মাণ করান। ওই শিল্পী মহাপ্রভুর কৃপায় দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়ে মূর্তিটি নির্মাণ করেন, যা আজও ময়নাডালের মন্দিরে আসীন। পাঁচ বছর অন্তর শ্রীবিগ্রহের অঙ্গরাগ হয়। মন্দিরটিতে একশো আটটি শালগ্রাম শিলা আছে। মূলত মিত্র ঠাকুররাই পালা করে মহাপ্রভুর সেবার দায়িত্ব পালন করেন। পাঁচরা খয়রাশোল রোডের গোপালপুর বাসস্টপ থেকে বাম হাতের জরাজীর্ণ পাকা রাস্তাটি ময়নাডাল মন্দিরের পূর্বদুয়ারে গিয়ে শেষ হয়েছে। রাস্তাটি মেরামত করা হলে ভক্তদের যাতায়াতের পথ সুগম হয়। সরকার উদ্যোগী হলে এটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠতে পারে। |
ট্রাকে করে আখ নিয়ে কলকাতার নতুন বাজারে বিক্রি করতে যাই। কিন্তু আখ নিয়ে যেতে প্রতি দিনই পুলিশি জুলুমের মুখোমুখি হতে হয়। রাতের কলকাতার টহলদারি পুলিশভ্যান ট্রাক চালকদের কাছে এক মূর্তিমান বিভীষিকা। পুলিশকে তোলা না দেওয়ার জন্য অনেক ট্রাকচালক বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনার মুখোমুখি হন।
আখ এমনই একটি পণ্য যা ট্রাকে করে নিয়ে যেতে পেছনের ডালা খুলে নিতে হয়। ডালা না খুলে নিতে হলে আখ ছোট করে কেটে নিতে হয়। সেই আখ বাজারে পৌঁছে বিক্রির অযোগ্য হয়ে যায়। এই ডালা খোলাকে কেন্দ্র করেই রাতের কলকাতার টহলদারি পুলিশ বাবুদের দরকষাকষি শুরু হয়ে যায়। প্রথমে গাড়ির ভেতর থেকে পুলিশের কোনও বাবু বলে দেন, ট্রাকের ডালা খুলে মাল তুলেছিস, ২,০০০ টাকা লাগবে। নইলে ৫,০০০ টাকার কেস দেব। ট্রাকের চালক দরকষাকষি করে একটা রফা করে। সেটি দেওয়ার পর ট্রাক যাওয়ার অনুমতি মেলে। যে টাকা দেওয়া হল তার পুরোটাই আখ চাষির পকেট থেকে যায়। অনেক ট্রাকচালক যা টাকা পুলিশকে দেয়, চাষি বা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তার থেকে বেশি টাকা নেয়। এই পেশার সঙ্গে কয়েক হাজার চাষি ও ব্যবসায়ী জড়িত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমার বিনীত প্রার্থনা, আখের ট্রাকের ওপর থেকে এই পুলিশি জুলুম বন্ধ করুন। অবস্থার পরিবর্তন না হলে আখ চাষি ও ব্যবসায়ীরা বাঁচবেন না।
|
কাজের প্রয়োজনে প্রতি দিন সকাল ৮-১৫-র বাগনান লোকাল বা পরের ট্রেনগুলির একটি ধরে মহিলা কামরায় উঠে হাওড়ায় আসি। মাঝপথে বাউরিয়া থেকে দাশনগরের মধ্যে বিভিন্ন স্টেশন থেকে এক দল উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র ওঠে। বয়স ১৩ থেকে ২০ বছর। তারা মহিলা কামরায় উঠে হিন্দিতে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং অসভ্যতা শুরু করে। মহিলা যাত্রীদের প্রতি নানা রকম কুরুচিকর মন্তব্য ও ইঙ্গিত করে। ইউনিফর্ম দেখে মনে হয় এরা হাওড়ার একটি বিখ্যাত স্কুলের ছাত্র। বিকেলের দিকেও তিনটে-সাড়ে তিনটের সময় এই ছাত্ররা ফিরতি ট্রেনে ওঠে এবং একই ব্যবহার শুরু করে। রেল প্রশাসনকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। |
বর্ষায় তেঁপুল মির্জাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বাওড় সংলগ্ন নিচু বসতিতে জলবন্দি হন কয়েক হাজার মানুষ। এঁদের অনেকে মেদিয়া বাস্তুহারা উচ্চ বিদ্যালয় এবং মেদিয়া গার্লস স্কুলে আশ্রয় নেন। ফলে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠন পাঠন বন্ধ হয়ে যায়। এঁরা শিক্ষার সরঞ্জামকে রান্নার কাজে ব্যবহার করেন। মুশকিলে পড়েন শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা। স্থানীয় পঞ্চায়েতে আবেদন করে ফল না মেলায় কর্তৃপক্ষের কাছে এই সমস্যা সমাধানের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। |