ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বহু আসন খালি
তলানি থেকে ভর্তি করে
মান জলে দিতে আপত্তি
‘পরিকল্পনা’র সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতি মিলছে না। এখন অবস্থা সামাল দিতে যে-ব্যবস্থা নিতে বলা হচ্ছে, তাতেও উঠছে আপত্তি। সব মিলিয়ে এ বছরেও ঘোরালো হয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আসন পূরণের সমস্যা।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কোনও আসন যাতে ফাঁকা না-থাকে, সেই জন্য সব পরীক্ষার্থীরই ‘র্যাঙ্ক’ (মেধা-তালিকায় অবস্থান) ঘোষণা করে দিয়েছিল জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। বোর্ডকর্তারা বলেছিলেন, ওই মেধা-তালিকার ভিত্তিতেই সব আসন পূরণ হয়ে যাবে। উচ্চ মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে ছাত্র ভর্তি করতে হবে না কোনও কলেজকেই।
কিন্তু বোর্ডকর্তাদের ওই ‘পরিকল্পনা’র সঙ্গে মেলেনি বাস্তব পরিস্থিতি। ৩১ জুলাই তিন দফায় রাজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাউন্সেলিং শেষ হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ৩৩ হাজার আসনের মধ্যে ফাঁকা রয়ে গিয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি। যাদবপুর এবং শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি বা বেসু-র মতো প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ১৮০টি আসন ফাঁকা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, জয়েন্টের মেধা-তালিকায় নাম থাকা যে-সব ছাত্রছাত্রী এখনও কোথাও ভর্তির সুযোগ পাননি, ফাঁকা আসনগুলিতে তাঁদের মধ্য থেকেই পড়ুয়া নিতে হবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। একই সঙ্গে সরকার জানিয়ে দিয়েছে, গত বছরের মতো এ বারেও উচ্চ মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতেও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে ছাত্র ভর্তি করতে হবে।
কিন্তু রাজ্যের ভর্তি-বিজ্ঞপ্তিতে যাদবপুর ও বেসু, দুই বিশ্ববিদ্যালয়ই ক্ষুব্ধ। অভিজ্ঞ শিক্ষকদের বক্তব্য, জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধা-তালিকায় নীচের সারিতে থাকা ছাত্রছাত্রীরাই এখনও পর্যন্ত কোথাও ভর্তি সুযোগ পাননি। তাঁদের ভর্তি নিলে নিজেদের মানের সঙ্গে আপস করা হবে বলে আশঙ্কা করছেন নামী ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। আইনি জটিলতার আশঙ্কাও করছেন অনেকে। উদাহরণ দিয়ে তাঁরা বলছেন, মেধা-তালিকায় ১৫০০তম স্থানে থাকা পড়ুয়াটিকে হয়তো কোনও বেসরকারি কলেজে ভর্তি হতে হয়েছে। নতুন সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী ৫০০০তম স্থানে থাকা প্রার্থীটি যদি যাদবপুর বা বেসু-র মতো নামী প্রতিষ্ঠানে ঠাঁই পেয়ে যান, ১৫০০তম স্থানাধিকারী পড়ুয়াটি তখন আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। সেই আইনি জটিলতার মোকাবিলা করা হবে কী ভাবে?
যাদবপুর ও বেসু মিলিয়ে ফাঁকা আসনের সংখ্যা মোট ১৮০। তার মধ্যে যাদবপুরেই সিভিলে ১৩টি, ফার্মাসিউটিক্যালে ১১, মেকানিক্যালে ১০ এবং ইলেকট্রিক্যালে ১২টি আসন শূন্য। অন্যান্য বিভাগে আরও বহু আসন খালি আছে। একই ভাবে বেসু-র আইটিতে ১২, কম্পিউটার সায়েন্সে সাত, মেকানিক্যাল ও ইলেকট্রক্যালে সাতটি করে, মেটালার্জিতে পাঁচটি আসন খালি। অনেক আসন শূন্য আছে অন্যান্য বিভাগেও। বেসু সূত্রের খবর, অন্য কলেজে ভর্তি হওয়া কোনও পড়ুয়া যদি তাদের ফাঁকা আসনে ভর্তি হতে চান, তাঁদের নেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হতে পারে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ রবিবার এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অ্যাডমিশন কমিটি’ আজ, সোমবার বৈঠকে বসছে।
কিন্তু এ ভাবে শূন্য আসন ভর্তি করার নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল কেন? সরকারি ব্যাখ্যা হল, কোনও একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছেড়ে যাওয়া পড়ুয়াকে অন্য কলেজে ভর্তি নিলে আগের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি আসন খালি হয়ে যাবে। এই প্রক্রিয়া ক্রমাগত চলতে থাকলে সমস্যা হতে পারে। সে-দিকে তাকিয়েই এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
ফল ঘোষণার আগে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান ভাস্কর গুপ্ত জানিয়েছিলেন, এ বছর মেধা-তালিকায় সব পরীক্ষার্থীরই ‘র্যাঙ্ক’ ঘোষণা করা হবে। ওই ‘নজিরবিহীন’ ঘটনার কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, “ছাত্রছাত্রীরা যাতে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মাধ্যমেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হতে পারে, সে-দিকে তাকিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” তিনি সেই সময় আশা প্রকাশ করেছিলেন, এতে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বেশির ভাগ আসনেই পড়ুয়ারা ভর্তি হতে পারবেন। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড সূত্রের খবর, গত বছরের তুলনায় ফাঁকা আসনের সংখ্যা কম। তবে এতগুলি আসন কেন পূরণ হল না, সেটাও দেখতে হবে বলে ওই সূত্রে মন্তব্য করা হয়।
যদিও তথ্য বলছে, গত বছর ছ’হাজারের কিছু বেশি আসন ফাঁকা ছিল। এ বার সেটা ১০ হাজারেরও বেশি।
এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হল কেন?
শিক্ষকমহলের একাংশের বক্তব্য, চলতি বছরে চালু হওয়া ‘অনলাইন’ কাউন্সেলিং ব্যবস্থায় কিছু সমস্যার জেরেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিয়েছে। বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে প্রায় সব আসন ভর্তি হলেও সরকারি নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পরিস্থিতি ঠিক উল্টো। এত দিন ‘ম্যানুয়াল’ কাউন্সেলিং থাকায় ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পছন্দসই পাঠ্যক্রম আরও সহজে বাছতে পারতেন। অনলাইনে বিষয়টি বুঝতে অনেকেরই অসুবিধা হয়েছে। বিশেষত জেলার পড়ুয়ারা যে-সব রিপোর্টিং সেন্টারে পছন্দের বিষয় বাছতে গিয়েছিলেন, সেখানে অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে।
অনলাইন কাউন্সেলিংয়ে পদ্ধতিগত ত্রুটির বিষয়ে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের কর্তারা অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

শিবির খুলে ‘মুক্তি’ কার্ড

শ্রম-শিবির খুলে এ বার অসংগঠিত শ্রমিকদের হাতে সামাজিক মুক্তি কার্ড তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য সরকার। শ্রম দফতরের ইএল এবং এমডব্লিউ শাখার উদ্যোগে দমদমের ১১এ বাসস্ট্যান্ডে শনিবার শিবির করে ১০ জন অসংগঠিত শ্রমিককে ওই কার্ড দেওয়া হল। একই সঙ্গে ২৭ জন পরিবহণ শ্রমিকের হাতে চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি খাতে আর্থিক সহায়তার জন্য চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। শিবিরে উপস্থিত ছিলেন কাশীপুর-বেলগাছিয়ার তৃণমূল বিধায়ক মালা সাহা এবং যুগ্ম শ্রম কমিশনার রিনা টারগেন। শিবির পরিচালনায় ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট শ্রম কমিশনার বিতান দে। ওই শিবিরেই ৭০ জন পরিবহণ শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত করানো হয়েছে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.