ব্রিটেনের সোনার দিন
নিজস্ব প্রতিবেদন |
গ্রেট ব্রিটেন বুঝিয়ে দিল, সোনা ফলানো কাকে বলে! এক ঘণ্টায় তিনটে সোনা তুলে নিলেন তিন ইংরেজ অ্যাথলিট। শুরুটা করলেন ব্রিটিশ অ্যাথলেটিক্সের তারকা জেসিকা এনিস। হেপটাথলন জিতে। মধুরেণ সমাপয়েৎ হল দশ হাজারে মো ফারা-র সোনা দিয়ে। এই দুই কৃতিত্বের মাঝে লং জাম্পে সোনা জিতলেন গ্রেগ রাদারফোর্ড।
চোটের জন্য ২০০৮ বেজিং অলিম্পিকে নামতে পারেননি এনিস। সেই হতাশা সুদে-আসলে মিটিয়ে নিলেন চার বছর পরে, তাঁর নিজের দেশের মাটিতে। ফারা-র উৎসবের ছবিটা একটু অন্য। দশ হাজার মিটারে ধারাবাহিক সাফল্য পাওয়া ইথিওপিয়ান ও কিনিয়ান অ্যাথলিটদের হারিয়ে সোনা জয়ের আনন্দ তিনি ভাগ করে নিলেন তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী-র সঙ্গে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই যমজ সন্তান আশা করছেন তাঁরা। সোমালিয়ান বংশোদ্ভূত ফারার কৃতিত্ব আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রথম ব্রিটিশ প্রতিনিধি হিসেবে দশ হাজার মিটারে সোনা জিতলেন। শুধু তাই নয়, শনিবার ফারা-র অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইথিওপিয়ার তারকা কেনেনিসা বেকেলে যিনি নেমেছিলেন পরপর তিনটে অলিম্পিক সোনা জেতার ইতিহাস গড়ার সম্ভাবনা নিয়ে।
|
বেকহ্যামের দেশ ছিটকে গেল
সংবাদসংস্থা • লন্ডন |
অলিম্পিকে ব্রিটেনের সোনালি দিনে ফুটবলে হতাশা। শনিবার অ্যাথলেটিক্সে এখ ঘণ্টার মধ্যে তিন সোনা দিয়ে দিন শুরু হলে কী হবে, ফুটবলে সেই পরিচিত লাঞ্ছনাই জুটল। অলিম্পিক ফুটবলের কোর্য়াটার ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে পেনাল্টি শুটআউটে ছিটকে গেল ব্রিটেন। টাইব্রেকারে ব্রিটেন হারল ৪-৫।বিশ্বকাপ ফুটবল হোক বা ইউরো, পেনাল্টি শুটআউট বরাবরের শক্ত গাঁট হয়ে দেখা দিয়েছে ইংল্যান্ডের। ব্রিটেনেরও একই দশা হল অলিম্পিকে। বাহান্ন বছর পরে অলিম্পিকে এই প্রথম নেমেছিল ব্রিটেন। বর্ষীয়ান রায়ান গিগসের নেতৃত্বে। শনিবার গভীর রাতে অতিরিক্ত সময় পেরনোর পরেও দু’দলের সময় ছিল ১-১। প্রথমে জি ড্রোভের গোলে এগিয়ে যায় কোরিয়া। ৩৬ মিনিটে তা শোধ দেন রায়ান বার্টান্ড। পেনাল্টি শুটআউটেও একটা সময় ছিল স্কোর ছিল ৪-৪। কিন্তু ড্যানিয়েল স্টারিজের শট শেষ পর্যন্ত আটকে দেন কোরিয়ান গোলকিপার। দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে শেষ শট নিতে এসে কি সুং ইয়েং কোনও ভুল করেননি। জাপানের পর দ্বিতীয় এশীয় শক্তি হিসেবে অলিম্পিক সেমিফাইনালে চলে গেল দক্ষিণ কোরিয়া। ব্রিটেন এই ম্যাচ জিতলে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে নামতে হত তাদের।
|
|
ব্রিটেনের জেসিকা। হেপ্টাথলনে সোনা জিতে
নিজেকে মুড়ে ফেললেন জাতীয় পতাকায়। রবিবার। ছবি: এএফপি |
|
‘সুপার স্যাটার্ডে’-র অন্যান্য স্মরণীয় মুহূর্তের মধ্যে অবশ্যই থাকবে মেয়েদের একশো মিটারে শেলি-অ্যান ফ্রেজার-প্রাইসের সোনা। গত আঠারো বছরে উসেইন বোল্টের স্বদেশী শেলি-অ্যানই একমাত্র মেয়ে স্প্রিন্টার যিনি পরপর দুটো অলিম্পিকে একশো মিটারে সোনা জিতলেন। এর আগে এই কৃতিত্ব ছিল গেইল ডেভার্সের। এ ছাড়া পুরুষদের কুড়ি কিলোমিটার হাঁটায় প্রথম পদক পেল চিন। চেন ডিং এবং ওয়াং জেন যথাক্রমে সোনা ও ব্রোঞ্জ জিতলেন। দারিদ্র-বিধ্বস্ত গুয়াতেমালাকে প্রথম অলিম্পিক পদক এনে দিলেন হাঁটায় রুপোজয়ী এরিক বারোন্দো। |
সোমবার (ভারতীয় সময় রাত সাড়ে এগারোটা) অলিম্পিক অভিযান শুরু করতে চলেছেন কিংবদন্তি পোল ভল্টার ইয়েলেনা ইসিনবায়েভা। বিশ্বরেকর্ডের মালিক রাশিয়ান অ্যাথলিটের লক্ষ্য, তৃতীয় বার অলিম্পিক সোনা জেতা। শেষ তিনটে মরসুম খুব একটা ভাল যায়নি তিরিশ বছরের ইয়েলেনার। অবশ্য লন্ডন অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জন পর্ব খুব সহজেই টপকে গিয়েছেন তিনি। “ভাল লাফিয়েছিলাম। কিন্তু আবহাওয়া পোল ভল্টিংয়ের জন্য একেবারেই ভাল ছিল না। আমাদের মুখে ঝোড়ো হাওয়া ধাক্কা মারছিল। কিন্তু ফাইনাল নিয়ে আমি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী,” বক্তব্য ইয়েলেনার। তাঁর জন্য সুখবর, ফাইনালে উঠতে পারেননি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের ফাবিয়ানা মুরার ও চার বারের অলিম্পিয়ান পোল্যান্ডের মোনিকা পাইরেক। |
কেনিয়ার সাম্রাজ্যে কেউ ধাক্কা দিতে পারবেন ভাবা যায়নি। গত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও মেয়েদের ম্যারাথনে তিনটে পদক তুলে নিয়েছিল কেনিয়া। কিন্তু লন্ডন অলিম্পিকে কেনিয়ার দৌড় থেমে গেল ইথিওপিয়ার টিকি গেলানার সামনে। এই তরুণী সোনা জিতলেন দু’ ঘণ্টা ২৩ মিনিট সাত সেকেন্ডে রেকর্ড সময় করে। রুপো এবং ব্রোঞ্জ জিতেছেন যথাক্রমে কেনিয়ার প্রিসকা জেপটো এবং রাশিয়ার তাতিয়ানা পেত্রোভা। |
প্রথম ডাবল অ্যাম্পিউটি হিসেবে অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার ইতিহাস গড়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই ব্যক্তিগত পদকের লড়াই থেকে ছিটকে গেলেন অস্কার পিস্টোরিয়াস। পুরুষদের ৪০০ মিটার দৌড়ের সেমিফাইনালে রবিবার সবার পিছনে শেষ করলেন দক্ষিণ আফ্রিকান। তবে তাঁর অলিম্পিক লড়াই এখনও শেষ হয়নি। বৃহস্পতিবার ১৬০০ মিটার রিলেতে নামবেন তিনি।
|