অলিম্পিকের অতিমানব
রেকর্ড পদক জিতে
বিদায় ফেল্পসের

তিনটি অলিম্পিকে তাঁর মোট পদক ২২টা। তার মধ্যে ১৮টাই সোনা। এত দিন অলিম্পিকে যোগ দিয়ে ভারতের সব মিলিয়ে সোনার সংখ্যা তার অর্ধেক, ৯টা!
অবিশ্বাস্য শোনালেও এটাই মাইকেল ফেল্পস। আজ যিনি অবসর ঘোষণা করেছেন এবং যাঁর হাতে এ দিনই তুলে দেওয়া হল অলিম্পিকে সেরা ক্রীড়াবিদের শিরোপা। তার আগে শনিবার রাতে ৪x১০০ মিটার মেডলি রিলেতে শেষ ইভেন্টেও তুলে নিয়েছেন সোনা। তার পর থেকেই লন্ডনের অ্যাকোয়াটিক্স সেন্টার জুড়ে একটাই জল্পনা। সর্বকালের সেরা অলিম্পিয়ানের মুকুট কি উঠতে চলেছে এই মার্কিন সাঁতারুর মাথায়? তাঁর কৃতিত্বের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো তো আর কেউ রইলেন না!
অথচ লন্ডনে শুরুটা ভাল হয়নি। ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মেডলিতে চতুর্থ। যে ইভেন্টে তিনি বিশেষজ্ঞ, সেই ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে রুপো। লন্ডন জুড়ে প্রশ্ন, এই অলিম্পিকে কি সোনা পাবেন ফেল্পস?
কিন্তু চ্যাম্পিয়নরা হারার আগে হারতে জানেন না। তাই সাঁতার পর্ব শেষ হওয়ার পরে দেখা গেল, ফেল্পস এ বারও তুলেছেন ৪টি সোনা। রুপো ২টি। তাঁকে ঘিরে আবেগের বিস্ফোরণ এতটাই যে, রেস শেষে নিয়মবর্হিভূত ভাবে ফেল্পসের হাতে বিশেষ ট্রফি তুলে দিল বিশ্ব সাঁতার সংস্থা ‘ফিনা’। শেষ দিকে ফেল্পস ঠিক করে কথাও বলতে পারছিলেন না। টুকরো আবেগ জমছিল গলায় “ভীষণ কঠিন কিছু বলা। যে ভাবে কেরিয়ার শেষ করতে চেয়েছিলাম সে ভাবেই করেছি।”
জীবনকে যে ভাবে দেখতে চেয়েছিলেন, সে ভাবেই ধরা দিয়েছে। তিনটে জিনিস মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন ফেল্পস। অসম্ভব বলে কোনও শব্দ নেই। জীবনে সব সম্ভব। মাইকেল ফেল্পস নামটা তিনি এমন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন, যেখানে কেউ পৌঁছতে পারবে না। খেলা হিসেবে সাঁতারকে অন্য মাত্রায় নিয়ে চলে যাবেন। ২০০৪-এ আথেন্স, ২০০৮-এ বেজিং এবং ২০১২-এর লন্ডনের পরে এর সবটাই বাস্তব। তাঁর গলাতেও সেই ‘সব পেরেছি’র সুরই ধরা পড়েছে “পেরেছি তা হলে!” বলছিলেন, “যে সব স্বপ্ন দেখতাম, অনেক ওঠা-পড়ার মধ্যে দিয়েও সেই সবই পেয়েছি। আর এমন জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি, যা আগে কেউ কখনও পারেনি।”
ছোটবেলায় বড্ড দুরন্ত ছিলেন ফেল্পস। তাঁর শক্তিকে সুনির্দিষ্ট দিশা দিতে সাঁতারে পাঠান বাবা-মা। দশ বছরেই জাতীয় রেকর্ড। ১৫ বছর বয়সে অলিম্পিক দলে। পদক পাননি। কিন্তু ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে পঞ্চম হন। সেই অলিম্পিকে তিনটি সোনা ও দু’টি রুপো জিতে সেরা অ্যাথলিট হন আর এক সাঁতারু অস্ট্রেলীয় ইয়ান থর্প। ফেল্পসের সাঁতার-জীবনকে থর্প ভাগ করেছেন তিনটি পর্যায়ে। তরুণ ফেল্পস যিনি ছ’টি সোনা পান আথেন্সে। রোবট ফেল্পস বেজিং থেকে যিনি তুলে নেন আটটি সোনা। আর ২০১২-র মানবিক ফেল্পস, যাঁর কিছু ভুলচুক হতে পারে। একেবারে ‘পারফেক্ট’ নন। থর্পের কথায়, “ফেল্পস লন্ডনে খুব রিল্যাক্সড ছিল। যেটা দেখতে খুব ভাল লেগেছে।”
এখনই অবসর কেন? ফেল্পসের জবাব, “ঠিক সময় সরছি। খেলাটা বাইরে থেকে দেখতেও দারুণ লাগে।” আজ উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টে যখন তারুণ্যের কাছে হারছেন ফেডেরার, মনে হচ্ছিল, ফেল্পসের কথা কতটা সত্যি। অবসরের সময়টা বাছতেও ভুল করেননি ২৭ বছরের এই মার্কিন।

ফেল্পসের সোনালি সাঁতার
২০০৪
আথেন্স অলিম্পিক সোনা-৬, ব্রোঞ্জ-২
২০০৮
বেজিং অলিম্পিক সোনা-৮
২০১২
লন্ডন অলিম্পিক সোনা-৪ রুপো-২




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.