মনোজ তিওয়ারির জন্য আমার খুব আনন্দ হচ্ছে। যখনই সুযোগ পেয়েছে, মনোজ দেখিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যুদ্ধের জন্য মানসিক ভাবে ও ভীষণ ভাবে যোগ্য। আমার দেখে খারাপই লাগে যে, এখন পর্যন্ত যতটুকু সুযোগ ওকে দেওয়া হয়েছে সবই বদলি হিসেবে। এটা এ বার বন্ধ হওয়া দরকার। এখন থেকে ওকে প্রথম একাদশের নিয়মিত প্লেয়ার হিসেবে ভাবা উচিত।
আর আমি নিয়মিত বলতে শুধু ওয়ান ডে-র জন্য বলছি না। সমস্ত ধরনের ক্রিকেটেই মনোজকে নিয়মিত ভাবে খেলানো হোক এ বার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তুমি কত রান করলে বা ক’টা উইকেট পেলে, শুধু সেটা দিয়ে একজন প্লেয়ারের জাত বিচার হয় না। সবার আগে দেখতে হয় তার মানসিক কাঠিন্য কতটা। মনোজ সেটা দারুণ ভাবে প্রমাণ করে দিয়েছে। আমি ওকে খুব তাড়াতাড়ি টেস্ট টিমেও দেখতে চাই।
এই সিরিজে ভারতের আবিষ্কার অবশ্য দু’জন। ইরফান পাঠান আর অশোক দিন্দা। অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তানে ওর অভিষেক সিরিজের পর ইরফানকে আমি এত ভাল বোলিং করতে আর দেখিনি। ওর ছন্দটা ফিরে এসেছে। সুইং পাচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছিল পুরনো সেই ইরফান। সাত নম্বরে ওর ব্যাটিং সাফল্যও দলের শক্তি বাড়াচ্ছে। এখন আবার ইরফান টিমের খুব গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেছে। এই প্রত্যাবর্তনকে কাজে লাগিয়ে ওর কেরিয়ারকে আবার চাঙ্গা করে তোলা যাবে কি না সেটা একমাত্র ইরফানই বুঝতে পারবে। ওকে দেখতে হবে সেই ধকল নেওয়ার জন্য ওর মধ্যে আর কতটা জেদ আর শক্তি বেঁচে আছে।
অশোক দিন্দা কিন্তু ধোনির সম্পদ হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে। ওর সবথেকে বড় গুণ হচ্ছে, ভয়ডরহীন এবং ফিট। ভাল পেস আছে আর সারা দিন ধরে বোলিং করে যেতে পারে। আর একটা ভাল দিক হচ্ছে, দ্রুত শিখে নেওয়ার ইচ্ছাটা ওর মধ্যে আছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার একটা ব্যাপার থাকে। দিন্দা দেখিয়ে দিয়েছে সেটা ও খুব ভাল ভাবেই করতে পারে। যদি সমস্ত ধরনের ক্রিকেটে ওকে ঠিক মতো সুযোগ দেওয়া হয় তা হলে কিন্তু ধোনির নকশায় খুব বড় অস্ত্র হয়ে উঠবে দিন্দা।
এমনিতে অলিম্পিকের জন্য এই সিরিজটা নিয়ে খুব বেশি আগ্রহ ছিল না। কিন্তু বলতেই হবে ভারতীয় ক্রিকেট প্রায় নিঃশব্দে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। সামনের লম্বা মরসুম শুরুর আগে এই সিরিজ জয় ধোনির টিমের আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দেবে। শেষ ম্যাচটাও দুর্দান্ত জিতে দারুণ কর্তৃত্ব নিয়েই সিরিজ শেষ করেছে ধোনিরা। উপমহাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে ভারতীয় ব্যাটিংকে থামানোর উত্তর মাহেলাদের জানা ছিল না। দু’টো দলের যখনই দেখা হয়েছে, ভারত শাসন করেছে আর মনে হচ্ছে, এটাই চলতে থাকবে।
শ্রীলঙ্কাকে দ্রুত বোলিং নিয়ে ভাবতে হবে। মালিঙ্গা ছাড়া ওদের বোলিং খুবই সাধারণ মানের। যদিও ওদের জন্য একটা উজ্জ্বল দিক হচ্ছে নুয়ান প্রদীপ। ওর গতি আছে কিন্তু ওকে ভবিষ্যতের জন্য ভাল করে গড়ে তুলতেও হবে। শ্রীলঙ্কার সবথেকে বড় সমস্যা হচ্ছে স্লগ ওভার বোলিং। না হলে প্রত্যেকটা টিম একই স্ট্র্যাটেজিতে ওদের হারিয়ে দিয়ে যাবে। উইকেট হাতে রেখে এগোও, তার পর দুর্বল স্লগ ওভার বোলিংয়ের ফায়দা তোলো। যত তাড়াতাড়ি শ্রীলঙ্কা এই জায়গাটা মেরামত করতে পারবে ততই ওদের মঙ্গল।
এ বার সিরিজের একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা খেলবে ভারত। আশা করব জিতেই শেষ করবে ধোনিরা। |