কোর্টের বারণই সার
ভিক্টোরিয়ার কাছে উনুন জ্বেলে রান্নাবান্না অবাধেই
হাইকোর্টের নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভিক্টোরিয়ার কাছেই কয়লা এবং কাঠের উনুন জ্বেলে অবাধে চলছে ফুটপাথের হোটেল। কলকাতায় বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে খোলা জায়গায় উনুন জ্বালানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের তিন কিলোমিটারের মধ্যে খোলা জায়গায় কোনও রকম উনুন জ্বালা যাবে না।
শিশির মঞ্চের উল্টো দিকে গোখেল রোড। ওই রাস্তায় ঢোকার মুখেই ফুটপাথে পরপর খাবারের দোকান। ভাত, ডাল, তরকারি, মাছ, মাংস পাওয়া যায় সব কিছুই। পাশে ডাঁই করা ভাঙা বাঁশ, পুরনো আসবাবের কাঠ। ডিজেল স্টোভ, কয়লার উনুনের পাশাপাশি কাঠ জ্বেলেও রান্না হয়। ফুটপাথের এই সব হোটেল খোলা থাকে দুপুর আড়াইটে-তিনটে পর্যন্ত। কেবল গোখেল রোডই নয়, হেস্টিংস এবং খিদিরপুরের দিকেও এ ভাবে কয়লার উনুন জ্বেলে চায়ের দোকান এবং হোটেল চলছে অবাধে।
হাইকোর্টের নির্দেশে শীতকালে ময়দানে ঝরে পড়া গাছের পাতা জ্বালানোর উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। বাতাসে অত্যধিক কার্বন ডাই-অক্সাইডের জন্য ভিক্টোরিয়ার সাদা মার্বেলে কালো ছোপ পড়ছে এই অভিযোগ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তার প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ভিক্টোরিয়ার চারপাশে গাড়ি পার্কিং বন্ধ করা এবং ভিক্টোরিয়ার পূর্ব দিকে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে হো চি মিন সরণি পর্যন্ত বাধাহীন যান চলাচলের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। পার্কিং বন্ধ হলেও দূষণ কমানোর জন্য অবাধ ট্রাফিক ব্যবস্থা এখনও চালু করতে পারেনি কলকাতা পুলিশ।
গোখেল রোডে সেনা আবাসন, পুলিশ আবাসনের পাশাপাশি রয়েছে কয়েকটি বহুতলও। সেখানকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের তিন কিলোমিটারের মধ্যে খোলা জায়গায় ডিজেল, কয়লা বা কাঠের আগুন জ্বালানোয় নিষেধাজ্ঞা কার্যত উড়িয়ে দিয়ে কয়লা আর কাঠের উনুন জ্বেলে অবাধে চলছে ফুটপাথের হোটেল। সকালে ধোঁয়ায় কার্যত ওই রাস্তার আশপাশ ভরে থাকে। এই দূষণ বন্ধ করার দায়িত্ব পুলিশের উপরে থাকলেও এই বিষয়ে তাঁরা যে বিশেষ কিছু করে উঠতে পেরেছেন, তেমন কোনও ইঙ্গিত লালবাজারের কর্তাদের কথায় মেলেনি। শুধু কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম জানান, এ নিয়ে তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গোখেল রোডের ওই মোড় থেকে মিনিটখানেক দূরেই ময়দান থানা, ট্রাফিক গার্ড। পুলিশের এক সূত্র জানান, কয়েক মাস আগে এক্সাইড মোড় থেকে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত ফুটপাথে ৩৫-৪০টি দোকান হটিয়ে দেওয়া হয়। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেই সময়েও গোখেল রোডে ‘অভিযানের’ প্রভাব পড়েনি। খাবারের দোকানগুলি থেকেই গিয়েছে।
এ বিষয়ে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বললেন, “আমাদের ধারণা, কলকাতার বাতাসে সব চেয়ে বেশি কার্বন যানবাহন থেকে আসে। তার পরেই ফুটপাথের খোলা উনুনকে দায়ী করা যায়। অথচ, এই নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।” তাঁর কথায়, “এটা কেবল হাইকোর্টের নির্দেশ মানার প্রশ্ন নয়, আমাদের স্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যতের প্রশ্নও এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.