আবার উত্তপ্ত নমনি অসম। গত বারো ঘণ্টার মধ্যে শিবিরে বোমা উদ্ধার, রাস্তায় বোমা বিস্ফোরণ ও দুই জেলা মিলিয়ে পাঁচটি মৃতদেহ মেলার পরে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ফের জারি হয়েছে কার্ফু।
গত কাল, ধুবুরির দলসিংঘের-আলগা নিম্ন প্রাথমিক ও মধ্য ইংরাজি স্কুলে থাকা ত্রাণ শিবিরে, বিস্কুটের প্যাকেট থেকে বোমা বের হয়। তারপর থেকেই জেলা জুড়ে উত্তেজনা বাড়ছিল। রাতে চিরাং-এ সেংনালা এলাকার বেশ কিছু বাড়িতে
লাগানো হয় আগুন। কোকরাঝাড়ের চক্রশিলায় নিখোঁজ এক ব্যক্তির দেহও উদ্ধার হয়।
এ সবের মধ্যেই কাল বিকেলে চিরাং ও বঙ্গাইগাঁওয়ের সীমানায় বরপথার গ্রামে এক অটোভ্যান-মালিক ও তাঁর চালক গাড়ি-সহ নিখোঁজ হয়ে যান। দুইজনই সংখ্যালঘু। আজ সকালে তাঁদের মৃতদেহ চম্পা নদীর পাড় থেকে উদ্ধার হয়। তাঁদের পরিবারের বক্তব্য, পরিচিত কয়েকজন বড়ো যুবক কাল গোসাইগাঁও যাওয়ার জন্য গাড়িটি ভাড়া করেছিল। প্রথমে যেতে রাজি হননি তাঁরা। কিন্তু বড়ো যুবকরা কাকুতি-মিনতি করায় তাঁদের পৌঁছে দেওয়ার জন্য গোসাইগাঁওয়ের উদ্দেশে রওনা হন চালক। মালিকও সঙ্গে যান। কিন্তু বিকেল তিনটে থেকে
তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। বিকেল চারটে নাগাদ তাদের গাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় কারিগাঁওয়ের কাছে মেলে। আজ সকালে,মালিক ও চালকের দেহ চম্পাবতী নদীর পাড় থেকে উদ্ধার করা হয়।
অন্য দিকে, আজ সকালে চিরাং জেলার বিজনিতে পিতা ও দুই পুত্রের দেহ মেলে। এখানে আরও একজন নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পরে একটি গোষ্ঠীর লোকজন জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। বড়োল্যান্ড বাস পরিষেবার একটি বাস উদালগুড়ি থেকে কোকরাঝাড় আসছিল। ঢালিগাঁও এলাকায় বাসে পাথর ছোড়া হয়। পাথরের ঘায়ে ও অবরোধকারীদের আক্রমণে পাঁচ বাসযাত্রী গুরুতর
জখম হন। চালককে কোপানোও হয়েছে। খবর পেয়ে নিরাপত্তারক্ষীরা ঘটনাস্থলে এসে শূন্যে গুলি চালিয়ে অবরোধ হঠান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে, চিরাং-এ ফের কার্ফু জারি করা হয়েছে। এর মধ্যেই, গোরেশ্বরের বাঘডোবায় একটি বিস্ফোরণ হয়। রাস্তায় গাছের নীচে বোমাটি রাখা ছিল। বিস্ফোরণে এক মহিলা ও এক শিশু-সহ তিনজন জখম হয়েছেন। মহিলার অবস্থা গুরুতর।
পরিস্থিতি সামলাতে রাজ্য সরকার, পৃথ্বী মাঝির নেতৃত্বে, মন্ত্রিসভার
বিশেষ প্রতিনিধিদল গড়ে বিটিএডি এলাকায় পাঠায়। দলে রয়েছেন টংকবাহাদুর রাই, গৌতম রায়, নজরুল ইসলাম, রকিবুল হুসেন, হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও চন্দন ব্রহ্ম। সঙ্গে সদস্য সচিব হিসাবে থাকছেন কৃষিমন্ত্রী নীলমণিসেন ডেকা।
ফের উত্তেজনা ছড়ানোয়, ত্রাণ শিবির থেকে ঘরে ফেরার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বেঁধে দেওয়া ১৫ অগস্টের সময়সীমা মানা যাবে কী না তা নিয়ে জেলা প্রশাসন ধন্দে রয়েছে। এ দিকে, অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানান, এই অবধি ত্রাণ শিবিরে থাকা ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচ জন শিশু। |