অন্তঃসত্ত্বা হলেই পরিবার থেকে চাপ আসত লিঙ্গ নির্ধারণ পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। পরীক্ষা দিতে রাজি না হলে মারধরও করা হত বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত ওই বধূ ও তাঁর স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেওরকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
রবিবার ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার বালি থানা এলাকার শান্তিরাম রাস্তা এলাকায়। পুলিশ জানায়, রঞ্জনা প্রসাদ ও তাঁর স্বামী রবীন্দ্র প্রসাদের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে রঞ্জনার শ্বশুর গোবিন্দ প্রসাদ, শাশুড়ি সাবিত্রী প্রসাদ ও দেওর রামযতন প্রসাদকে।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানিয়েছেন, সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে ওই মহিলাকে লিঙ্গ নির্ধারণের পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে অভিযোগ, সেটির ঠিকানা জানার জন্য ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রঞ্জনা ও রবীন্দ্রর বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। রবীন্দ্র প্রসাদের পারিবারিক লোহার ব্যবসা। ২০০৯ সালে তাদের একটি মেয়ে হয়। ২০১০ সালে ফের অন্তঃসত্ত্বা হন রঞ্জনা। অভিযোগ, এর পরেই রঞ্জনাকে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ পরীক্ষার জন্য চাপ দিতে থাকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সেই সময় অবশ্য ব্যবসার কাজে বাইরে গিয়েছিলেন রবীন্দ্র। একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে লিঙ্গ নির্ধারণ পরীক্ষায় জানা যায়, রঞ্জনার গর্ভে কন্যাসন্তান রয়েছে। তার পরেই জোর করে গর্ভপাত করা হয় বলে অভিযোগ। এর পরে ফের এ বছর অন্তঃসত্ত্বা হন রঞ্জনা। অভিযোগ, ফের লিঙ্গ নির্ধারণের পরীক্ষার জন্য চাপ দেওয়া হয়। প্রতিবাদ করায় রঞ্জনার শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেওর মিলে তাঁকে মারধর করে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গুরুতর জখম অবস্থায় রঞ্জনাকে হাওড়ার টি এস জয়সোয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় তাঁর শ্বশুর, শাশুড়ি, দেওরকে। রবিবার ধৃতদের হাওড়া জেলা আদালতে তোলা হলে আট দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও ওই বধূর শ্বশুর গোবিন্দ প্রসাদ বলেন, “সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমার ছেলে ও পুত্রবধূ চক্রান্ত করে আমাদের ফাঁসিয়েছে।” |