মন্দার বাজারে দেশের বিভিন্ন শহরে ‘অফিস স্পেস’ বা অফিস তৈরির জন্য জায়গার চাহিদা কমছে। ব্যতিক্রম নয় কলকাতাও। বরং অন্যদের তুলনায় এ শহরে সেই ছাপ আরও স্পষ্ট।
বিশেষজ্ঞ সংস্থা কুশম্যান অ্যান্ড ওয়েকফিল্ড জানাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় এ বছরের প্রথম ছ’মাসে চাহিদা কমেছে অনেকটাই। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী অফিস তৈরির জায়গা ব্যবহার ২১% কমে গিয়েছে। গত বছরের প্রথম ছ’মাসে দেড় কোটির বেশি বর্গ ফুট জায়গা নেওয়া হয়। এ বছর তা কমে হয়েছে ১ কোটি ৩০ লক্ষ বর্গ ফুটের মতো।
কলকাতায় সমস্যাটা আরও প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে বলেই সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। পরিকাঠামো তৈরি হয়ে ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ক্রেতা নেই। সমীক্ষার হিসেবে কলকাতায় ২৫ শতাংশ জায়গা ফাঁকা পড়ে আছে। যা অন্যান্য শহরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় এই অঙ্ক ২২ শতাংশের কাছাকাছি। ২০ শতাংশ নিয়ে পুণে তিন নম্বরে।
কলকাতায় অফিস তৈরির জন্য জায়গার সিংহভাগই নিয়ে নেয় তথ্যপ্রযুক্তি ও সংশ্লিষ্ট সংস্থা। মূলত রাজারহাট ও সল্টলেকের পরিকাঠামো এ ক্ষেত্রে বিবেচ্য। কারণ শহরের প্রাণকেন্দ্রে নব নির্মিত বাণিজ্যিক জায়গার পরিমাণ নেহাতই কম। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের চাহিদার টানেই রাজারহাট ও সল্টলেকে জোগান বেশি। মোট চাহিদার ৭৩% এই অঞ্চলেই।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, কলকাতায় ‘অফিস স্পেস’-এর কম চাহিদার অন্যতম কারণ অবশ্যই মন্দা। তবে পরিকাঠামোর আকাশছোঁয়া দরকেও দায়ী করছে তারা। বিশেষজ্ঞ সংস্থা লেমন গ্রাসের প্রধান অভিজিৎ দাসের মতে ছোট-মাঝারি সংস্থার লগ্নি না-টানতে পারলে পরিস্থিতির উন্নতি করা কঠিন। তিনি বলেন, “কলকাতায় নেওয়া অফিস স্পেসের অধিকাংশই বড় সংস্থাগুলির পূর্ব পরিকল্পনার ফল। ছোট-মাঝারি সংস্থা না-এলে চাহিদা-জোগানের ফারাক থেকেই যাবে।” প্রসঙ্গত তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টিসিএস রাজারহাটে ইকোস্পেসে বিশাল জায়গা নিয়েছে। কিন্তু সাধারণত বড় সংস্থা নিজস্ব ক্যাম্পাস তৈরির উপরেই নজর দেয়। সে ক্ষেত্রে ছোট-মাঝারি সংস্থার হাত ধরেই ছবিটা বদলে যায়।
কুশম্যান অ্যান্ড ওয়েকফিল্ড-এর প্রধান সঞ্জয় দত্তের দাবি, যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের চাহিদার উপর নির্ভর করছে পরিস্থিতি, সেখানে ছবিটা ফিকেই থাকবে। কলকাতা, বেঙ্গালুরু তার প্রমাণ।
রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞ সংস্থা জোনস লাং লাসেল-এর মতেও কলকাতায় চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি। যে-সব জায়গা রয়েছে, তাদের গুণগত মান ও দামের বহরও চাহিদার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। চাহিদা-জোগানের অঙ্ক মেনে দাম কমাতে নারাজ নির্মাণ সংস্থাগুলি। অথচ পূর্বাঞ্চলে ব্যবসার তুলনায় অফিসের লিজ ভাড়া অনেকটাই বেশি।
অফিস স্পেস-এর চাহিদা তলানিতে ঠেকলেও ‘কমার্শিয়াল স্পেস’ বা বাণিজ্যিক কাজকর্মের জন্য জায়গার চাহিদা কলকাতায় বেড়েছে। দেশ জুড়ে মলে ভাড়ার হার সামান্য বেড়েছে। কিন্তু কলকাতায় তা বেড়েছে প্রায় ১৩%। মল ফাঁকা পড়ে থাকার প্রবণতাও দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু বা পুণের তুলনায় কম কলকাতায়। সংশ্লিষ্ট মহলের অবশ্য দাবি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়াও এর অন্যতম কারণ।
|
উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ করছে বার্জার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রং উৎপাদনে বিশ্বের প্রথম ২৫টি সংস্থার মধ্যে স্থান করে নিতে চায় বার্জার পেন্টস। এ জন্য বিপণন পরিকাঠামো সস্প্রসারণের পাশাপাশি উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে বার্জার-এর স্থান বিশ্বে ৩৩ তম। বার্ষিক সভা শেষে সংস্থার এমডি অভিজিৎ রায় বলেন, “পরিকল্পনা রূপায়ণে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনা করেছি। প্রযুক্তির জন্য বিদেশি রং সংস্থাকেও হাতে নিতে পারি।” এ দিকে অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে সংস্থার আয় আগের বারের থেকে ১৬% বেড়ে হয়েছে ৮০৩ কোটি টাকা। নিট মুনাফা ১৯% বেড়ে ৪৪ কোটি টাকা। এমডি জানান, রিষড়া ও গোয়া কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা মাসে ৫ হাজার টন করে বাড়িয়ে ৮ হাজার টন করা হবে। অন্ধ্রপ্রদেশের হিন্দুপুরে ৮০ হাজার কোটি টাকায় গড়া হচ্ছে নতুন কারখানা। |