সূচক ঘোরাফেরা করবে
নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যেই
সুদ কমেনি। ঝেঁপে আসেনি বর্ষাও। অর্থাৎ কোনও টনিকই জোটেনি বাজারের ভাগ্যে। সেনসেক্স কোনও ক্রমে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ১৭ হাজারের উপরে থাকার জন্য।
২০১২-’১৩ আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসের আর্থিক ফলাফলের অনেকটাই জানা গিয়েছে এর মধ্যে। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত ফলাফল বড় কোনও আশা জাগায়নি বাজারে। বর্ষায় যে এ বার ঘাটতি থাকবে, তা মেনে নেওয়া হয়েছে সরকারি তরফে। শিল্প ও কৃষি দুই-ই ঝিমিয়ে পড়ায় জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির হার যে কমবে, তাও স্বীকার করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সদর্থক কোনও রাস্তা দেখায়নি আন্তর্জাতিক বাজারও। এই পরিস্থিতিতে সূচক নিয়ে বড় কোনও আশা কেউ করছেন না। অর্থাৎ সেনসেক্স ও নিফ্টি ঘোরাফেরা করবে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে। অনেকের মতে, সেনসেক্সের ক্ষেত্রে এই গণ্ডি মাঝারি মেয়াদে হতে পারে ১৬ হাজার থেকে ১৮ হাজার।
সামগ্রিক ভাবে পণ্যমূল্য কমেনি। বর্ষায় ঘাটতি থাকায় কৃষিজ পণ্যের দাম কমার আশা অত্যন্ত ক্ষীণ। বরং আশঙ্কা, দাম আরও বাড়তে পারে। গ্রামীণ অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়লে চাহিদা কমবে শিল্পপণ্যের। ফলে কমতে পারে মানুষের আয় ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ।
এমনই এক পরিস্থিতিতে নিজের পুরনো আসনে ফেরত এসেছেন পি চিদম্বরম। সময়টা আদৌ সুখের নয়। বিশ্ব বাজারের মন্দার প্রভাব ঠিক মতো সামাল দিতে না-পারায় তাঁকে সরতে হয়েছিল। এ বার ধাক্কা আসছে দেশের ভিতর থেকেই। এই পরিস্থিতি অর্থমন্ত্রী কী করে সামাল দেন, তাই এখন দেখার। তবে অনেকের আশা, চিদম্বরমের হাতে আর্থিক সংস্কারের কাজ ত্বরান্বিত হবে। পরিস্থিতি কিন্তু তাঁর অনুকূলে নয়।
সুদের হারে এ বারও হাত দেয়নি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ব্যবসা ঠিক রাখার লক্ষ্যে ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক এই পরিস্থিতিতে এক নতুন পন্থা নিয়েছে। বাড়ি এবং গাড়িঋণ, উভয় ক্ষেত্রেই সুদ কমিয়েছে তারা। এর ফলে লাভবান হবেন ঋণগ্রহীতারা এবং এই দুই শিল্প। ব্যয় ও আয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখার জন্য মেয়াদি জমার উপরেও সুদ কমানোর কথা ঘোষণা করেছে এসবিআই। গাড়ি ও গৃহঋণের উপর সুদ কমানো হয়েছে ৫০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত । জুলাই মাসে গাড়ি বিক্রির পরিসংখ্যান মন্দের ভাল। মন্দার বাজারে বাড়ি এবং ফ্ল্যাটের চাহিদা কিন্তু কমেছে সর্বত্র। কম সংখ্যায় বাজারে আসছে নতুন আবাসন প্রকল্প।
বিনিয়োগের বাজারে বড় কোনও পরিবর্তন হয়নি গত কয়েক সপ্তাহে। শেয়ারে লগ্নি করতে হলে বাছতে হবে সেই সব শেয়ার, যেগুলির পতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ বেশ শক্ত। যেমন আইটিসি, ক্যাস্ট্রল, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার ইত্যাদি। ফলাফলের ভিত্তিতে অন্য কিছু ভাল শেয়ারেও লগ্নি করা যায়। যে-সব কোম্পানি থেকে ডিভিডেন্ড বাবদ প্রকৃত আয় বা ‘ইল্ড’ বেশ ভাল, তালিকায় রাখা যেতে পারে সেই সব শেয়ারকেও। মাঝারি পতনে অর্থাৎ সেনসেক্স ৫০০ পয়েন্ট বা তার বেশি নামলে ধরতে শুরু করা যেতে পারে এই সব শেয়ার।
শেয়ার বাজার বহু দিন একই জায়গায় ঘোরাফেরা করার কারণে চাকচিক্য হারিয়েছে ইক্যুইটি-নির্ভর মিউচুয়াল ফান্ড। এই ক্ষেত্র থেকে আয় বা বৃদ্ধি কোনওটাই আকর্ষণ করে না সাধারণ লগ্নিকারীদের। বিশেষ করে ব্যাঙ্ক সুদ যখন ভাল জায়গায় দাঁড়িয়ে। একই কারণে ভাল লাভের সন্ধান দিতে পারছে না ইউলিপ প্রকল্পগুলি। নানা রকমের খরচ এবং মাসুল বাবদ অনেকটা টাকা কেটে নেওয়ার পর লগ্নিকারীর ভাগ্যে জুটছে সামান্যই। কোনও কোনও ইউলিপ প্রকল্পের লগ্নিকারীদের অভিযোগ, তিন বছর লগ্নি করার পরেও তাঁদের লগ্নির মোট বর্তমান মূল্য এখনও মূল লগ্নির অনেকটাই নীচে। প্রকল্প বিক্রেতারা যে সব মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার ধারেকাছেও যায়নি সংশ্লিষ্ট ইউলিপের ‘ন্যাভ’। ফলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। এঁরা বুঝতে পারছেন না, এই অবস্থায় লগ্নি চালিয়ে যাওয়া উচিত কি না।
মিউচুয়াল ফান্ডের বন্ড ফান্ডগুলি তুলনামূলক ভাবে ভাল আয়ের ব্যবস্থা করতে পেরেছে লগ্নিকারীদের জন্য। ছোট মেয়াদের বন্ড ফান্ডগুলি লগ্নির জন্য এখনও বিবেচনা করা যেতে পারে। এই বাজারে লগ্নির একটি বড় অংশ টানছে ব্যাঙ্কের মেয়াদি আমানত প্রকল্পগুলি। উঁচু হারের আয়করদাতাদের কাছে পিপিএফ এবং করমুক্ত বন্ড বিশেষ আকর্ষণীয়। নতুন করমুক্ত বন্ড বাজারে আসার জন্য অপেক্ষা করছেন এঁদের অনেকেই। যত দিন শেয়ার বাজারের উত্থান সুনিশ্চিত না হচ্ছে, তত দিন সাবধানী লগ্নিকারীরা তহবিল জমা রাখতে পারেন ছোট থেকে মাঝারি মেয়াদের ব্যাঙ্ক আমানত এবং বন্ড ফান্ডে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.