গুরুদ্বারে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি, নিহত ৭
মার্কিন মুলুকে ফের বন্দুকবাজের হামলার চেনা ছবি।
এ বার উইসকিনসনের ওক ক্রিক গুরুদ্বারে। যে ঘটনায় রাত পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা অন্তত সাত। আহত অন্তত ৩০ জন। গুরুদ্বারের ভিতরেই বন্দুকবাজেরা পণবন্দি করে রেখেছে বেশ কয়েক জনকে। সেই সংখ্যাটা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না কেউই। যেমন বলতে পারছেন না, কত জন বন্দুকবাজ মিলে এই হামলা চালিয়েছে।
সব মিলিয়ে চূড়ান্ত বিভ্রান্তি।
উইসকনসিনের গুরুদ্বারে তখন চলছে আততায়ীদের খোঁজ। ছবি: এপি
মাত্র হপ্তা তিনেক আগেই, গত ২০ জুলাই ‘ব্যাটমান’ সিনেমার প্রিমিয়ারে বন্দুকবাজের হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ১৪ জনের। তার রেশ পুরোপুরি কাটার আগেই শিখদের ধর্মস্থানে এ ভাবে দিনেদুপুরে একাধিক বন্দুকবাজের হামলা তুলে দিল একটা গুরুতর প্রশ্ন আমজনতার নিরাপত্তার প্রশ্নটা কি ক্রমশই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে সে দেশে?
অথচ প্রতি রবিবারের মতো এ দিনও আমেরিকার এই গুরুদ্বারের দিনটা শুরু হয়েছিল শান্ত ভাবেই। প্রার্থনা করতে আশপাশের অঞ্চল থেকে জড়ো হয়েছিলেন অন্তত চারশো শিখ প্রার্থনাকারী। প্রার্থনা চলাকালীন হঠাৎই গুলির শব্দ। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে চালাতে গুরুদ্বারের ভিতরে ঢুকে পড়ল দুই (কারও কারও কথায় সংখ্যাটা অন্তত তিন) শ্বেতাঙ্গ যুবক। গুলির আঘাতে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়লেন বেশ কয়েক জন।
আতঙ্কিত মানুষদের হুড়োহুড়ির মধ্যেই কেউ কেউ মাথা ঠান্ডা রেখে ফোন করে দেন আপৎকালীন ৯১১ নম্বরে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পৌঁছে যায় পুলিশ।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ গুরুদ্বারের বিতরে ঢোকার চেষ্টা করতেই শুরু যুদ্ধ! পুলিশকে লক্ষ করে এলোপাথারি গুলি ছুড়তে থাকে বন্দুকবাজেরা। আচমকা আক্রমণে হকচকিয়ে গেলেও পাল্টা জবাব দিতে শুরু করে পুলিশও। এক বন্দুকবাজ ঘটনাস্থলেই মারা যায়। শরীরে একাধিক গুলির আঘাত নিয়ে গুরুতর আহত এক পুলিশকর্মীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময়ের ফাঁকেই এক সময় গুরুদ্বারের ভিতরে ঢুকে পড়ে বন্দুকবাজেরা। সেখানেই আশ্রয় নেয় তারা। সেই সঙ্গে পণবন্দি করে নেয় গুরুদ্বারের ভিতরে আটকে থাকা বেশ কয়েক জন প্রার্থনাকারীকে। বিষয়টি বোঝার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে পুলিশ। চলে আসেন এফবিআইয়ের একটি বিশেষ দল। পণবন্দিদের উদ্ধারে শুরু হয় তৎপরতা। এ কাজে নামানো হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সোয়াট টিম-কে।
এর মধ্যেই ঘটনা নিয়ে গুজব রটতে থাকে নানা মহলে। পরিস্থিতি বুঝে ঘটনার সরাসরি টিভি সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। গ্রিন ফিল্ডের পুলিশ প্রধান ব্র্যাডলি ওয়েটল্যান্ড জানিয়েছেন, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। চার জনের দেহ গুরুদ্বারের ভিতর থেকে আর তিন জনের দেহ গুরুদ্বারের বাইরে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে এক জন আততায়ী বলে নিশ্চিত পুলিশ। অন্তত তিন জন প্রার্থনাকারীকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অন্তত ১০০ জনকে পণবন্দি করেছে বন্দুকবাজেরা। এঁদের বেশিরভাগই মহিলা ও শিশু। কয়েক জন গর্ভবতীও রয়েছেন। পণবন্দিদের গুরুদ্বারের বেসমেন্টে আটকে রাখা হয়েছে বলেও শোনা যায়। আততায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। তবে সরকারি ভাবে এ কথা স্বীকার করা হয়নি।
ঘটনার খবর পেয়ে বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ আমেরিকার ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগ করা হয় হোয়াইট হাউসের সঙ্গেও। আমেরিকায় ভারতীয় দূত নিরুপমা রাও জানিয়েছেন, কৃষ্ণর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
এ দিকে যত সময় যাচ্ছে, তত ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে বাইরে ভিড় করে থাকা আতঙ্কিত আত্মীয়দের। বছর পঞ্চাশের পরমিন্দর কালেকা জানালেন তাঁর এক আত্মীয় ওই গুরুদ্বারের পুরোহিত। ঘটনার খবর পেয়ে পরমিন্দর তাঁকে ফোন করলে তিনি পণবন্দি হওয়ার খবর জানান। আর এক যুবক জানালেন, তাঁর স্ত্রী ও দেড় বছরের ছেলে আটকে রয়েছেন গুরুদ্বারে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.