নয়া সফর
বিস্তীর্ণ দুপারে...
সার দিয়ে দাঁড় করানো ট্রাক। শুকোচ্ছে জলে ধুয়ে পরিষ্কার করা প্লাস্টিক। কোথাও কলকারখানা, খাটাল। নোংরা বর্জ্য সরাসরি পড়ছে জলে। পরিত্যক্ত অনেক গুদাম ঢেকে গিয়েছে ঝোপঝাড় আর জঙ্গলে। উত্তরে বাগবাজার সার্কুলার খাল ও বালি খালের ময়লা জল, দক্ষিণে আদিগঙ্গার নরক দশা। ডক এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজ। আর, নিয়মিত স্নানে আসা মানুষের জীবনযাত্রার টুকরো ছবি, যেন এক খণ্ড পুরনো কলকাতা।
বিস্তীর্ণ দুপারের এমন দৃশ্য দেখাতেই গঙ্গাবক্ষে ‘ক্যাটামারান’-ভ্রমণের আয়োজন করেছে এক বেসরকারি সংস্থা।
তামিল ভাষায় এর নাম ‘কাট্টুুমারাম’। বোটটির বিশেষত্ব, এর দু’টি হাল। ফলে ঢেউয়ের দুলুনি টের পাওয়া যায় না। দক্ষিণ ভারতে এ ধরনের বোট মূলত জেলেরা ব্যবহার করতেন। আধুনিক ‘কাট্টুমারাম’ বা ‘ক্যাটামারান, সিলভার জেট’টি অবশ্য তৈরি অস্ট্রেলিয়ায়। হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিদের যাতায়াতের জন্য একদা ব্যবহার হত বিলাসবহুল শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত জলযানটি। পরে চড়া ভাড়ায় মিলত পার্টির জন্যও।
ছবি: সুমন বল্লভ
মুখ্যমন্ত্রী শহরকে লন্ডন আর গঙ্গাকে টেমস বানানোর যে-প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই পশ্চিমবঙ্গের জল-পর্যটনকে চাঙ্গা করার এই নয়া উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন সংস্থার কর্তৃপক্ষ। সংস্থাটি নির্দিষ্ট ভাড়ায় রবিবার বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টো পর্যটকদের দু’ঘণ্টার সফরে নিয়ে যাবে। শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত এই যানে থাকবে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মানস সেনগুপ্ত বলছেন, “গঙ্গাপারের ঐতিহ্য বিরাট। কলকাতার পর্যটকদের দূষণহীন পরিবেশে সেই ঐতিহ্য নিয়মিত পরখ করার সুযোগ করে দিতে এই উপহার। মিলেনিয়াম পার্ক-সংলগ্ন জেটি থেকে যাত্রা শুরু হবে। উত্তরে দক্ষিণেশ্বর থেকে দক্ষিণে গার্ডেনরিচ পর্যন্ত সফর করে ফের মিলেনিয়ামে এসে থামবে।” এর উদ্বোধনে এসে এমন আরও পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসতে ডাক দিলেন রাজ্যের কৃষি-বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায় ও অভ্যন্তরীণ জল পরিবহণমন্ত্রী হায়দর আজিজ সফি।
সরকারি উদ্যোগে খুব ধীরে হলেও সেজে উঠছে গঙ্গাতীর। জলপথে পর্যটক টানার প্রতিযোগিতায় সে কাজে আরও গতি আসবে, মনে করছেন অনেকেই।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.