|
|
|
|
গয়না পালিশের নামে কেপমারি, ধরা পড়ল দু’জন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
বাপের বাড়িতে এসেছিলেন আলপনা। হঠাৎই বাইকে চড়ে এলেন দুই যুবক। পরিচয় দিলেন, একটি বিদেশি মার্কেটিং কোম্পানির লোক হিসাবে। বললেন, সোনার ঔজ্জ্বল্য বাড়ানোর ‘পাউডার’ আছে তাঁদের কাছে। সামান্য টাকার বিনিময়ে এই কাজই করে থাকেন তাঁরা। অবিশ্বাস করার কোনও সঙ্গত কারণ খুঁজে পাননি আরামবাগের দক্ষিণ নারায়ণপুরের বাসিন্দা আলপনা ঘোষ। গলা থেকে সোনার চেনটি খুলে তুলে দেন ওই দুই যুবককে।
নানা রকম পাউডার দিয়ে চেন ঘষাঘষি শুরু করে দু’জন। খানিক ক্ষণ পরে একটি প্লাস্টিকের প্যাকেটে মুড়ে চেনটি তুলে দেয় ওই বধূর হাতে। বলে, এখন মোড়ক খোলা যাবে না। ‘কাজ’ নষ্ট হয়ে যাবে। মিনিট পনেরো বাদে প্যাকেট খুলে ‘নতুনের মতো দেখতে’ গয়না পেয়ে যাবেন তিনি। শ’খানেক টাকা দিয়ে দু’জনকে বিদেয় করেন আলপনা।
দুই যুবক বাড়ি থেকে সবে বেরিয়ে গিয়েছেন, ইতিমধ্যে বাড়ি ফেরেন আলপনার বাবা শিশিরবাবু। আগ্রহ নিয়ে বাবাকে গয়না ‘নতুন’ করার গল্প বলতে থাকেন মেয়ে। শুনেই প্রৌঢ়ের মাথায় হাত। হায় হায় করে ওঠেন তিনি। বলেন, সবে মাত্র শুনে এসেছেন প্রতারণার এক নতুন উপায়। পাশের গ্রাম ভবানীপুর, রাধাবল্লভপুরে এমন একটি প্রতারণা চক্র কাজ করছে। তারা সোনা উজ্জ্বল করে দেওয়ার নাম করে আসল গয়না হাপিস করে গিল্টি সোনা ধরিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। শিশিরবাবুদের দাবি, আলপনার হার এনে তাঁরা দেখেন, সেটির ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছে।
চিৎকার করতে করতে বাড়ি থেকে ছুটে বেরোন শিশিরবাবু। জুটে যায় আশপাশের লোকজন। তখনও মোটর বাইকে চেপে গ্রাম ছাড়তে পারেননি ওই দুই যুবক। এক জনকে ধরে ফেলে জনতা। আরও এক জনকে ধাওয়া করে ধরে ফেলা হয়। শুরু হয় গণপিটুনি। পরে তাঁদের তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। অভিজিৎ কুমার সোনি এবং পঙ্কজ সাউ নামে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, প্রথম জনের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের দুমকায়। অন্য জন বিহারের কাটিহারের সালোনির বাসিন্দা। তাদের মোটর বাইকটিও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ধোঁকা দিয়ে সোনার গয়না সরিয়েছেন তাঁরাই। সেটি ওই দুই যুবকের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বলে স্থানীয় মানুষের দাবি। যদিও ধৃতদের কাছ থেকে কোনও কেমিক্যাল পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা। কয়েক মাস ধরেই আরামবাগের কিছু প্রত্যন্ত গ্রামের বাড়িতে এই প্রতারণা চক্রটি হানা দিচ্ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এ দিন খবর জানাজানি হওয়ায় আরও অনেকে এসে থানায় অভিযোগ করেন। |
|
|
|
|
|