ইসিএল এবং বিসিসিএল-এর বিরুদ্ধে নিম্মমানের কয়লা সরবরাহের অভিযোগ আগেই তুলেছিলেন সাঁওতালডিহি তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এ বার ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করে একই অভিযোগ করলেন বিধানসভার বিদ্যুৎ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রতিনিধিরাও। বুধবার কমিটির সদস্যেরা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ঘুরে দেখেন। পরে তাঁরা অযোধ্যা পাহাড়ের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও দেখতে যান।
কমিটির চেয়ারম্যান তথা পুরুলিয়ার তৃণমূল বিধায়ক কেপি সিংহদেও সদস্যদের নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘কোল হ্যান্ডেলিং প্ল্যান্ট’ এলাকায় গিয়ে কয়লা বোঝাই মালগাড়ি থেকে কয়লা নামিয়ে মান যাচাই করেন। পরে তিনি অভিযোগ করেন, “ইসিএল ও বিসিসিএল-এর যে মানের কয়লা সাঁওতালডিহি বিদ্যুৎকেন্দ্রে পাঠানোর কথা, ওরা তার থেকে নিম্নমানের কয়লা পাঠাচ্ছে। কয়লার মধ্যে প্রচুর পাথর রয়েছে। একটি মালগাড়িতে যে পরিমান কয়লা আসে, তার প্রায় ২৫ শতাংশই খারাপ কয়লা। ফলে রাজ্য সরকারের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।” তিনি জানান, রাজ্যের অন্যান্য তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রেও একই সমস্যা রয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁরা ওই দুই সংস্থার সঙ্গে কথা বলবেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মীরাও উন্নতমানের কয়লা সরবরাহ করা নিশ্চিত করার জন্য কমিটির সদস্যদের কাছে আর্জি জানান।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমস্যা নিয়ে বুধবার দুপুরে পিডিসিএলের গেষ্ট হাউসে কমিটির সদস্যদের কাছে স্মারকলিপি দেন তৃণমূল, কংগ্রেস ও সিপিএমের শ্রমিক সংদঠনগুলির নেতৃত্ব। প্রতিটি সংগঠনের তরফে বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা ও লোহা চুরির চলছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা নিয়ে আসার পথে মালগাড়ি থেকে ব্যাপক পরিমাণে কয়লা চুরির ঘটনা ঘটছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের লোহা এমন কী বাতিল হওয়া যন্ত্রাংশ চুরির ক্ষেত্রেও চুরির ঘটনা ঘটছে। কেপি সিংহদেও স্বীকার করেন, সাঁওতালডিহি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেন, “বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে পারছে না। বিকল্প ব্যবস্থা করার ব্যাপারে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।” তবে তাঁর কাছে কী প্রস্তাব দেওয়া হবে তা এ দিন জানাতে পারেননি কমিটির সদস্যেরা।
প্রসঙ্গত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে চুরি বন্ধের জন্য কেন্দ্রীয় শিল্প সুরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করার দাবি আগেই উঠেছিল। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি। এ বার তৃণমূল সরকারের কাছে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে চুরি বন্ধে দ্রুত এবং কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মী ও শ্রমিক সংগঠনগুলি। কেপি সিংহদেও-র আশ্বাস, রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীর কাছে তাঁরা সাঁওতালডিহিতে ৫০০ মোগাওয়াটের আরও দু’টি ইউনিট দ্রুত নির্মাণের সুপারিশ করবেন। ওই কমিটির সঙ্গে স্থানীয় কংগ্রেসের বিধায়ক উমাপদ বাউরিও ছিলেন। |