|
|
|
|
শংসাপত্রে দেরি, ক্ষুব্ধ তফসিলিরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
‘অনলাইন’ হওয়ার পরেও শংসাপত্র পেতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন তফসিলিরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনিক গাফিলতিতেই দেরি হচ্ছে। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, দ্রুত শংসাপত্র দিতেই অনলাইন ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। কিন্তু বেশিরভার সার্ভার ডাউন থাকায় বিলম্ব হচ্ছে। এর বাইরেও কয়েকটি কারণ রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “কেন বিলম্বের অভিযোগ উঠছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের কাছে জাতিগত শংসাপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চাকরি থেকে চিকিৎসা, সরকারি অনুদান থেকে গণবন্টন ব্যবস্থার সুযোগসব ক্ষেত্রেই শংসাপত্রের প্রয়োজন হয়। তাই, তফসিলিভুক্ত সব মানুষই শংসাপত্র চান। কিন্তু এই শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে ঢিলেমির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। বার বার প্রশাসনের দফতরে ঘুরেও শংসাপত্র মিলত না, এমন অভিযোগ বারেবারেই উঠেছে। আবার যাঁরা ‘প্রভাবশালী’ তাঁরা সহজেই শংসাপত্র পেয়ে যান। এমনকী অনেকে ভুয়ো ভূয়ো নথি দিয়েও শংসাপত্র পেয়েছেন বলে অভিযোগ। সাধারণ তফসিলি মানুষের ক্ষেত্রেই বার বার ঢিলেমির অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তী সময়ে সমস্যা দূর করার ব্যাপারে প্রশাসন তৎপর হওয়ার কথা ঘোষণা করে।
আবেদনের এক সপ্তাহ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই তফসিলিদের জাতিগত শংসাপত্র দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। সে জন্যেই অনলাইন প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়। যার মাধ্যমে স্বল্প সময়েই শংসাপত্র মেলার কথা। কিন্তু এই ব্যবস্থাতেও শংসাপত্র পেতে মাসের পর মাস কেটে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গড়ে প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ শংসাপত্র চেয়ে আবেদন জানান। কিন্তু মাসে অর্ধেক আবেদনকারীর হাতেও শংসাপত্র তুলে দেওয়া যায় না। বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার আবেদনপত্র পড়ে রয়েছে, তাঁদের শংসাপত্র দেওয়া যায়নি বলে প্রশাসন সূত্রেই স্বীকার করা হয়েছে। যার মধ্যে ঝাড়গ্রাম মহকুমাতে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার, মেদিনীপুর ও ঘাটাল মহকুমায় রয়েছে দেড় হাজার করে ৩ হাজার। খড়্গপুর মহকুমায় রয়েছে প্রায় ৫০০। কেন এ ভাবে পড়ে থাকছে? প্রশাসনিক কর্তাদের ব্যাখ্যা, সার্ভার ডাউন থাকার কারণে কিছু ক্ষেত্রে দেরি হচ্ছে। তাই অনলাইন হওয়ার পরেও প্রযুক্তির সুবিধে নেওয়ার পাশাপাশি হাতে লিখেও শংসাপত্র দেওয়ার কাজ চলছে। কিন্তু তাতেও সমস্যা মিটছে না কেন? প্রশাসনিক সূত্রের ব্যাখ্যা, এর পিছনে রয়েছে কর্মী-সঙ্কট। যদিও মাঝি-মাডওয়া জুয়ান গাঁওতার সম্পাদক প্রবীর মুর্মুর মতো অনেকের অভিযোগ, “প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণেই জাতিগত শংসাপত্র পেতে দেরি হচ্ছে। সাধারণ গরিব মানুষ চরম সমস্যায় পড়ছেন।” লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির জেলা সম্পাদক বলাই নায়েকেরও অভিযোগ, “যদি আগের মতোই দেরি হবে তা হলে অনলাইন করে কী লাভ হল! এখনও তো শংসাপত্র চেয়ে প্রশাসনের দোরে দোরে ঘুরে বেড়াতেই হচ্ছে। সাধারণ গরিব মানুষের হয়রানি তো কমছে না।” যদিও প্রশাসন জানিয়েছে, এ বার প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটানো হবে। যাতে দ্রুত সকলের হাতেই শংসাপত্র তুলে দেওয়া যায়। |
|
|
|
|
|