তারস্বরে তাসা, পিছনে রিকশায় চড়া সুরে ব্যাঞ্জো, এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু আচমকা তার সঙ্গে বিউগ্লে ফুঁ পড়তেই হকচকিয়ে গিয়েছিল তারা।
রাস্তার পাশে নির্বিকার মুখে বসে থাকা খান দশেক হনুমান এ-ওকে টপকে বাড়ির ছাদে চড়তে গিয়েই হল বিপত্তি। পুরনো সেই তিনতলা বাড়িটার ছাদ থেকে খসে পড়ল কার্নিশের চাঙড়। বিয়ের জল সইতে বহরমপুরের গঙ্গা-ঘাট ফেরত দুই মহিলার মাথায় পড়ল কংক্রিটের টুকরো। পড়শিরা তড়িঘড়ি তাঁদের নিয়ে ছুটে ছিলেন নিউ জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান মধ্য চল্লিশের ডলি সাহা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেখানেই ভর্তি ওই মহিলার মেয়ে সুপ্রিয়া বর্ধন। চিকিৎসকেরা জানান, মহিলার মাথায় চোট রয়েছে। বৃহস্পতিবার বহরমপুরের খাগড়ায় বান্ধব প্রেসের মোড়ে ওই ঘটনায় সাহা বাড়ির বিয়েটাই ম্লান হয়ে গিয়েছে।
ঘটনার সময়ে রাস্তার পাশে পানের দোকানে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস মজুমদার। তাঁর কথায়, “একেই বোধহয় বেঘোরে প্রাণ যাওয়া বলে। এলাকায় হনুমানের দাপাদাপি নতুন নয়। ওই পুরনো বাড়িটা দিনের পর দিন হনুমানের অত্যাচার সইছে। কিন্তু বিয়ে বাড়ির লোকেদের উপরেই এ ভাবে চাঙর খসে পড়বে কে জানত!” খাগড়ার ৩৩ নম্বর নূতনপাড়া লেনের ওই বাড়িটা বেশ পুরনো। বাড়ির মালিকানা স্থানীয় দত্ত পরিবারের। তবে সংস্কারের অভাবে বাড়িটির যে বেশ কাহিল অবস্থা, দেখলেই তা মালুম হয়। প্রতিবেশীদের কথায়, দীর্ঘ দিন ধরেই প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সেটি। বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুরসভার প্রতিনিধি দল যাবে। কিন্তু হনুমানের ‘অত্যাচারে’ চাঙড় কেন খসে পড়ল তার উত্তর কে দেবে? |