নাগরির জমি-অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারে বিশেষ কমিটির দু’দিনের বৈঠকেও কোনও মীমাংসা সূত্র বেরোল না। হাইকোটের নির্দেশ অনুযায়ী, ওই বৈঠকের সবিস্তার রিপোর্ট ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রাজ্য সরকারের তরফে আদালতে পেশ করার কথা।
সম্প্রতি নাগরির জমি আন্দোলনের জেরে রাজ্য সরকারের হাতে নেওয়া তিনটি শিক্ষা প্রকল্পে অচলাবস্থা দেখা দেয়। গত ৪ জুলাই আন্দোলনকারীরা নাগরির অধিগহীত জমির নির্মীয়মান প্রাচীর ভেঙে দিলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ড যুদ্ধ বেধে যায়। লড়াইয়ে পুলিশ এবং গ্রামবাসী দু’পক্ষেরই বেশ ক’জন জখম হয়। প্রাচীর ভাঙা এবং পুলিশের উপর আক্রমণ চালানোর অভিযোগে চার মহিলা-সহ ১০ আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি ‘জুলুম বন্ধ’ এবং ধৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে টানা তিন দিন ধরে নাগরিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ চালায় গ্রামবাসীরা। যার জেরে নাগরির অধিগৃহীত জমিতে সরকারি প্রকল্পের নির্মাণ কার্যত বন্ধ হয় যায়।
বিষয়টি আদালতের গোচরে আনা হলে রাজ্য সরকারকে নির্মীয়মান প্রকল্পের ‘স্ট্যাটাস রিপোর্ট’ পেশ করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন গড়েন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা। স্থির হয়, নাগরির জমিন বাঁচাও সংঘর্ষ সমিতির সঙ্গে এই কমিটি আলোচনা করে মীমাংসা সূত্র খোঁজার চেষ্টা করবে। কমিটির বিস্তারিত রিপোর্ট ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আদালতে পেশ করা হবে। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার-সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষকে রীতিমতো অবাক করে দিয়ে অধিগৃহীত জমিতে কৃষকদের অধিকার কায়েম করার পক্ষে সওয়াল করে জোট সরকারের শরিক জেএমএম। দলের প্রধান, শিবু সোরেন গত ১৫ জুলাই নাগরির আন্দোলনকারীদের জনসভায় হাজির হয়ে বক্তৃতা দেন। ভাষণে অধিগৃহীত জমিতে চাষ-আবাদ শুরু করতে পরামর্শ দেন তিনি। এতে রাজ্য সরকারের বিড়ম্বনা বাড়ে। কিন্তু আন্দোলনে নতুন গতি পায়।
পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রথম বৈঠককে (১৪ জুলাই) কার্যত বয়কট করেছিল নাগরির আন্দোলনকারীরা। ফের ১৬ জুলাই বিরসা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকে নাগরির আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা যোগ দেন। বৈঠকে এসে তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন: “অধিগ্রহণ নয়, সরকার কৃষকদের জমি কেড়ে নিয়েছে। কৃষকরা তাদের এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বে না।” নাগরির জমি-জট খুলতে শেষ চেষ্টা হিসেবে গত কাল ফের বৈঠকের আয়োজন করা হয়। রাঁচির জেলা কালেক্টরেটে বৈঠক বসে। শেষ চেষ্টা হিসেবে সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু তাতেও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। |