নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
মিটারে কারচুপি ধরায় গোঘাটে বিদ্যুৎ দফতরের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে হুলুস্থুল বাধানোর অভিযোগ উঠল চঞ্চল রায় নামে এক তৃণমূল নেতা ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। গোঘাট থানায় এফআইআর করেছে বিদ্যুৎ দফতর।
বণ্টন কোম্পানি সূত্রের খবর, সেখানকার কুলতলা গ্রামে মিটারে কারচুপি করে একটি মিনি ডিপ-টিউবওয়েল চালানো হচ্ছিল। কয়েক দিন আগে সেখানে গিয়ে দফতরের অফিসারেরা ওই কারচুপি ধরে ফেলেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগও করা হয়। অভিযোগ, ওই কারচুপি ধরে ফেলাতেই চঞ্চল রায়ের নেতৃত্বে প্রায় ৪০ জন অফিসারদের ‘শায়েস্তা’ করতে শনিবার দুপুরে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে হানা দেন। তাঁরা দাবি করতে থাকেন মিটারে কারচুপি ধরা যাবে না। কেউ কারচুপি করলে জরিমানা বা অন্য ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। কারও বিলের টাকা বকেয়া থাকলেও বিদ্যুৎ সংযোগ কাটা যাবে না। অভিযোগ, অফিসার-কর্মীদের গালিগালাজ করা হয়।
পুলিশ আসার আগেই হামলাকারীরা পালায়। গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের তরফে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। সেখানকার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সজীব মণ্ডল পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেন। চঞ্চল রায় ছাড়াও সুশান্ত ঘোষ, মোক্তার আলি, সৌমেন ঘোষ, বিশ্বজিৎ রায়-সহ কয়েকজনের নামে ওই অভিযোগ করা হয়।
বিদ্যুৎ দফতরের আরামবাগের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার চন্দন মণ্ডল বলেন, “ওই এলাকায় সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেন। কিছু লোক কেন এমনটা করল, বুঝতে পারছি না।” পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর, হামলাকারীদের মধ্যে অধিকাংশই দলের স্থানীয় নেতা-কর্মী। এঁদের অনেকে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। গোঘাট ২ ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি চঞ্চলবাবু অবশ্য বলেন, “কেউ চুরি করে মিনি চালালে ওরা ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করছে। এত দিন বৃষ্টি হয়নি। জল না পেলে চাষিদের আত্মহত্যা করতে হবে। আমি বলেছিলাম, অত টাকা জরিমানা না করে ৪০-৫০ হাজার টাকা করা হোক।” ওই তৃণমূল নেতার দাবি, “ওরা কথা না শোনাতেই লোক ডাকি। তবে, কেউ গোলমাল করেনি। ধাক্কাধাক্কির প্রশ্নই নেই। ওরা মিথ্যে অভিযোগ করছে। গ্রাহকদের সমস্যা-সহ যাবতীয় বিষয় তিনি দলের জেলা নেতৃত্বকে জানান বলে দাবি করেছেন।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত অবশ্য বলেন, “ওই নেতা জেলা নেতৃত্বকে কিছু জানাননি। তবে বিষয়টি আমি শুনেছি। কেউ ইচ্ছে করলেই সরকারি দফতরে গিয়ে অভব্য আচরণ করতে পারেন না। আমরা দলীয় স্তরে বিষয়টা নিয়ে তদন্ত করছি।” |