পানাগড়ে রাস্তার সমস্যা না-কাটায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বর্ধমানে ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার প্রকল্প অধিকর্তাকে ডেকে পাঠিয়ে কৈফিয়তও তলব করেন। তবে আশু সমাধানের আশ্বাস মেলেনি।
ডানকুনি থেকে দুর্গাপুর-আসানসোল হয়ে ধানবাদ পর্যন্ত চলে যাওয়া দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের গতি কার্যত রুদ্ধ করে রেখেছে কিলোমিটার তিনেকের পানাগড় বাজার এলাকা। কেন্দ্রীয় স্বর্ণ চতুষ্টয় প্রকল্পে গোটা রাস্তা যখন চার লেনের হয়েছিল, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বাধায় ওইটুকু জায়গায় রাস্তা চওড়া করা যায়নি। যানজট লেগেই থাকে। রাস্তার অবস্থাও ভাল নয়। কিন্তু তা সারানো হচ্ছে না। জট কাটাতে বাইপাস গড়া হবে বলে জানিয়েছে এনএইচএআই। কিন্তু কবে হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
মুখ্যমন্ত্রী নির্দিষ্ট করে বাইপাস গড়ার প্রসঙ্গ না তুলে বলেন, “পানাগড়ে একটা ‘টেকনিক্যাল ফল্ট’ রয়েছে। কিন্তু সে ব্যাপারে রাজ্যের কিছু করার নেই।” তাঁর দাবি, “যে সমস্ত রাস্তা এনএইচএআই-এর হাতে রয়েছে, যে সমস্ত সেতু ডিভিসি-র হাতে রয়েছে, সেগুলি ওরা সারাচ্ছে না। আমাদেরও সারাতে দিচ্ছে না। বারবার কেন্দ্রকে জানিয়েছি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকেও বহু অনুরোধ করেছি। আমাদের সাংসদেরা প্রধানমন্ত্রীর কাছেও গিয়েছিলেন।” |
প্রকাশ্য সভায় মুখ্যমন্ত্রী পানাগড় নিয়ে এ ভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করার পরেই বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা মেমারির কৃষ্টি প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক বৈঠকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প অধিকর্তা কৃষ্ণ মুরারীকে ডেকে পাঠান। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কাছে জানতে চান, কেন রাস্তা সারানো হচ্ছে না? কৃষ্ণ মুরারী জানান, তাঁদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে মাত্র ২.৭৪ কোটি টাকা পেয়েছি। দরকার অন্তত ১০ কোটি টাকার। বর্ষার পরে রাস্তা সারানোর কাজ শুরু হবে।”
এনএইচএআই সূত্রের খবর, পানাগড় রোড ওভারব্রিজ থেকে ডানকুনি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের দায়িত্বে রয়েছে একটি ঠিকাদারি সংস্থা। সম্প্রতি তাদের পানাগড়ের রাস্তা মেরামতের জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু সামান্য টাকায় ওই কাজ সম্ভব নয় বলে তারা জানিয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে বস্তুত খুব জোরও দিচ্ছেন না জাতীয় সড়ক কতৃর্র্পক্ষ। সংস্থার চিফ জেনারেল ম্যানেজার অজয় অহলুওয়ালিয়া আগেই জানিয়েছেন, বাইপাস নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ায় রাস্তা সংস্কার ও চওড়া করার কাজে বেশি অর্থবরাদ্দ করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, শুধু পানাগড় নয়, বহু জায়গাতেই জাতীয় সড়ক বেহাল। তিনি বলেন, “এনএইচএআই বাংলার অনেক জায়গাতেই রাস্তা সারাচ্ছে না। আমি মুকুলকে (রেলমন্ত্রী মুকুল রায়) বলেছি, সংসদের পরবর্তী অধিবেশনের সময়ে দলের সাংসদদের নিয়ে ফের প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে।” |