|
|
|
|
বৃষ্টির অভাবে আমন ধান চাষে সঙ্কট পূর্বের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
খাতায়কলমে বর্ষা এসেছে অনেক দিন। কিন্তু সে ভাবে বৃষ্টির দেখা নেই। ধান রোওয়ার জন্য বীজতলা তৈরি হলেও জলাভাবে তৈরি হয়নি চাষজমি। তাই ভরা বর্ষাতেও হাত গুটিয়ে থাকতে হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের কৃষকদের।
আমন চাষে রীতিমতো সঙ্কট দেখা দিয়েছে জেলায়। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত জেলায় (জানুয়ারি থেকে ২৩ জুলাই) বৃষ্টি হয়েছে ৩৫০ মিলিমিটার। অথচ গত বছর এই সময়কালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৭৪০ মিলিমিটার। এ বার অর্ধেকেরও কম বৃষ্টি হয়েছে। জেলার তমলুক ও হলদিয়া মহকুমার কয়েকটি ব্লকে সামান্য এলাকায় আমন ধান রোওয়া হলেও কাঁথি ও এগরায় ধান রোওয়া সে ভাবে শুরুই হয়নি। এগরা মহকুমার কিছু এলাকায় অবশ্য অগভীর নলকূপের সাহায্যে জল তুলে আউশ ধান চাষ হয়েছে।
কিন্তু জেলা কৃষি-দফতরের হিসেব অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত জেলায় মোট চাষজমির মাত্র ২ শতাংশে আমন ধান রোওয়া হয়েছে। আর ৫৫ শতাংশ জমিতে আউশ চাষ হয়েছে। ফলে, ধান-চাষে সঙ্কট থাকছেই। জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, “বৃষ্টি কম হওয়ায় জেলার অধিকাংশ এলাকায় আমন ধান রোওয়ার জন্য জমি তৈরিই করতে পারেননি কৃষকেরা। জেলায় ৮৩ শতাংশ বীজতলা তৈরি হলেও মাত্র ২ শতাংশ জমিতে আমন ধান রোওয়া হয়েছে। তুলনায় আউশ ধান রোওয়ার কাজ হয়েছে বেশি। বৃষ্টির অভাবে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় বীজতলা নষ্ট হয়েও যাচ্ছে।
জেলা কৃষি দফতরের হিসেব অনুযায়ী, পূর্ব মেদিনীপুরে জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত গড়ে বৃষ্টিপাত হয় ৬৭৯ মিলিমিটার। গত বছর এই সময়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৭৪০ মিলিমিটার। অথচ এ বছর বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৩৫০ মিলিমিটার। পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে জেলার অধিকাংশ এলাকায় আমন ধান রোওয়াই যায়নি। কাঁথি, এগরা, নন্দীগ্রামে আমন ধান রোওয়ার কাজ হয়নি বললেই চলে। তমলুক মহকুমার তমলুক ও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক, হলদিয়া মহকুমার মহিষাদল ব্লকের কিছু এলাকায় আমন ধান রোওয়া হয়েছে। কৃষি দফতরের হিসেব অনুযায়ী জেলায় আমন চাষ হয় ২ লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে। এ বছর এখনও পর্যন্ত আমন ধান রোওয়া হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। অন্য দিকে, জেলায় আউশ চাষ হয় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে। এ বার এখনও পর্যন্ত আউশ ধান রোওয়া হয়েছে ১১ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে। জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা বলেন, “এখনও ২০-২৫ দিন ধান রোওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। সামনের ক’দিনে ভাল বৃষ্টি না হলে কৃষকদের আরও সমস্যায় পড়তে হবে।” |
|
|
|
|
|