ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে। সেই সঙ্গে দায়িত্বেরও।
এর আগে বাম নিয়ন্ত্রিত দুর্গাপুর পুরবোর্ডে যাঁরা বিভিন্ন বিভাগের নিয়ন্তা ছিলেন, এখন তাঁরা ক্ষমতাচ্যুত। আবার নতুন যে মেয়র পারিষদেরা নির্বাচিত হয়ে এসেছেন, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা তাঁদের ততটা নেই।
আগের মেয়র যে ভাবে ভাবতেন, নতুন মেয়র সমস্যাকে একই চোখে দেখেন না। দু’জনের কাজ করার পদ্ধতিও ভিন্ন। আগের মেয়র পারিষদেরা নিজের নিজের দফতরের সমস্যার জায়গাগুলিকে অনেকটা চিনে গিয়েছিলেন। যদিও কতটা কাজ হয়েছে, তার খতিয়ান এখনও নেওয়া হয়নি। নতুন মেয়র পারিষদেরা এখনও জলের গভীরতা বুঝে উঠতে পারেননি হয়তো, কিন্তু তাঁদের প্রধান সম্বল কিছু করে দেখানোর ইচ্ছা। |
দুর্গাপুরের নতুন মেয়র, তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের মতে, “এত দিন উন্নয়ন হয়েছে সিটি সেন্টার ও বিধাননগর-কেন্দ্রিক। আমরা সেই ধারা থেকে বেরিয়ে পুর এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করতে চাই।” প্রাক্তন মেয়র, সিপিএমের রথীন রায় অবশ্য মনে করেন, “এই অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। বামফ্রন্ট যখন প্রথম পুরবোর্ড দখল করেছিল, তখনকার দুর্গাপুরের সঙ্গে আজকের শহরের তুলনা করলেই সেটা স্পষ্ট বোঝা যায়।”
রথীনবাবুদের পুরবোর্ডের অন্য অনেক কুশীলবও দাবি করছেন, তাঁরা যথেষ্ট কাজ করেছেন। যেমন ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতানের দাবি, “গত কয়েক বছরে বিশেষত জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে শহরের সর্বত্র ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে।” প্রাক্তন মেয়র পারিষদ (পূর্ত) প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুরসভার হাতে থাকা প্রায় সমস্ত রাস্তার যথাযথ সংস্কার করা হয়েছে। বস্তির রাস্তাঘাট পাকা করা হয়েছে। নতুন নতুন নিকাশি নর্দমা করা হয়েছে।”
প্রাক্তন মেয়র পারিষদ (জল সরবরাহ) শ্যামাপ্রসাদ কুণ্ডুর বক্তব্য, “বিগত পুরবোর্ড শহরের প্রতিটি এলাকায় পানীয় জলের সরবরাহে উদ্যোগী হয়েছিল। নতুন জলপ্রকল্পের কাজও প্রায় শেষ করে ফেলে। যে সমস্ত জায়গায় পানীয় জল পৌঁছয়নি, সেখানে কুয়ো, নলকূপ এবং ট্যাঙ্কে করে পানীয় জল পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিল। পুর এলাকার বাইরে হওয়া সত্ত্বেও অন্ডাল বিমাননগরীতে পানীয় জল পাঠানোর সংস্থানও রাখা হয়েছিল নতুন জলপ্রকল্পে।” প্রাক্তন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) তারাশঙ্কর সুকুলের দাবি, “স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল যথাযথ। পুর এলাকার সব প্রসবই হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই হয়েছে।”
এই সব দাবির কতটা সত্য, তা জানেন পুরবাসী। নির্বাচনে তাঁরা তাঁদের মতামতও দিয়েছেন। নতুনেরা শোনাচ্ছেন আশার বাণী। তাঁরা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন কি না, তার হিসেব মিলবে বছর কয়েক পরে।
|
প্রথম প্রতিশ্রুতি |
অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
ডেপুটি মেয়র
পুর এলাকার সামগ্রিক
মানোন্নয়ন করাই প্রধান লক্ষ্য। |
মণি সোরেন
তফসিলি ও শিক্ষা
শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে
অনগ্রসরদের উন্নয়ন করব। |
প্রমোদ সরকার
জল সরবরাহ
জল সরবরাহ ও সংরক্ষণে
সমান গুরুত্ব দেওয়া হবে। |
মধুসূদন মণ্ডল
অচিরাচরিত শক্তি
অচিরাচরিত শক্তি ব্যবহারের চেষ্টাই
তেমন হয়নি। এ বার সেটা হবে। |
প্রভাত চট্টোপাধ্যায়
পূর্ত
বেহাল রাস্তা সংস্কার ও সেই
সঙ্গে নতুন রাস্তা তৈরি করা হবে। |
সুস্মিতা ভুঁই
সামাজিক উন্নয়ন, খাদ্য
সরকারি সুবিধা প্রকৃত প্রাপকেরা
পাচ্ছেন কি না তা দেখা হবে। |
লাভলি রায়
জনস্বাস্থ্য
পুরসভার বেহাল স্বাস্থ্যকেন্দ্রের
উন্নয়ন করাই সবচেয়ে জরুরি। |
মণি দাশগুপ্ত
সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও পরিবেশ
খেলাধূলা ও সংস্কৃতির
সার্বিক প্রসারে উদ্যোগী হব। |
|