চাই সর্বক্ষণের ব্লাড ব্যাঙ্ক
রক্ত জোগাতে হিমশিম হাসপাতাল
হরে তিনটি ব্লাড ব্যাঙ্ক থাকলেও রক্তের যোগান দিতে হিমশিম অবস্থা তাদের। কারণ সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালের রোগী বা জাতীয় সড়ক, কারখানাগুলিতে লেগে থাকা দুর্ঘটনায় জখমদের রক্তের প্রয়োজন লেগেই রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই শহরের নানা সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল বহুদিন থেকেই তাই একটি ২৪ ঘণ্টার ব্লাড ব্যাঙ্কের দাবি জানাচ্ছে। এবার এই চাহিদা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছেন দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
দুর্গাপুরের মাঝ বরাবর রয়েছে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক। দুর্ঘটনা সেখানে নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। পানাগড়েই গড়ে বছরে ২০ জনের মৃত্যু ঘটে। জখমও হন অনেকে। এছাড়া দুর্গাপুর ও সংলগ্ন অঞ্চলে যে সমস্ত মোড়গুলি রয়েছে সেগুলিও অত্যন্ত বিপজ্জনক। মাস তিনেক আগে এবিএল মোড়ে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বাইক আরোহী এক তরুণী ও তাঁর পরিচিত জনের। শুক্রবার রাতে গাঁধী মোড়ে লরির সঙ্গে ধাক্কায় মারা যান একটি গাড়ির তিন যাত্রী। জখম হন ৭ জন। এছাড়া পানাগড়-মোড়গ্রাম রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনা ঘটলেও জখমদের আনা হয় দুর্গাপুরেই। এর বাইরে এলাকায় কয়েকশো কারখানা রয়েছে। মাঝে মাঝেই সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে। আবার ইসিএলের খনি এলাকার একাংশ দুর্গাপুর ঘেঁষা। সেই সব খনিতে দুর্ঘটনা ঘটলেও জখমদের আনা হয় দুর্গাপুরে। ফলে সব মিলিয়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে রক্তের চাহিদাও।
দীর্ঘদিন ধরে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল ও দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালেই শুধু ব্লাড ব্যাঙ্ক ছিল। কিন্তু সব সময় সব গ্রুপের রক্ত মেলে না সেখানে। তাছাড়া হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের রক্ত সরবরাহ করার পরে বাইরের কোনও হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে রক্তের প্রয়োজন হলে অনেক সময়ই ইচ্ছা থাকলেও তা দিতে পারেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস জানান, বছরে গড়ে ৬ হাজার ইউনিট রক্ত সরবরাহ করেন তাঁরা। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ঠ নয়। দুর্গাপুরের আর একটি সরকারি হাসপাতাল ইএসআই। কিন্তু তার কোনও নিজস্ব ব্লাড ব্যাঙ্ক নেই। পরিস্থিতি দেখে সেখানকার সুপার শোভন পান্ডা জানান, দ্রুত দুর্গাপুরে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ২৪ ঘন্টার ব্লাড ব্যাঙ্ক প্রয়োজন।
সমস্যা মেটাতে বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল সম্প্রতি নিজস্ব আধুনিক ব্লাড ব্যাঙ্ক গড়ে তুলেছে। সেখানে সাধারণ গ্রুপের পাশাপাশি দুষ্প্রাপ্য গ্রুপের রক্তেরও জোগান রয়েছে। কিন্তু তাতেও পুরোপুরি সমাধান হচ্ছে না। হাসপাতালের চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বসু জানান, তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অধিকাংশ জখম ব্যক্তিরই রক্তের প্রয়োজন হয়। কারণ, দুর্ঘটনায় অল্পস্বল্প জখম হলে তাঁদের সাধারণত অন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। একেবারে মরণাপন্ন হলে তবেই এই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আনা হয়। ফলে সবসময় রক্তের জোগান না থাকলে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান তিনি। তাঁরও দাবি, দুর্গাপুরে অবিলম্বে একটি ২৪ ঘন্টার ব্লাড ব্যাঙ্ক গড়ে তুলতে হবে। সিটি সেন্টারের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের অন্যতম কর্ণধার জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, “সম্প্রতি এ ব্যাপারে একটি আলোচনাচক্রের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বক্তারা প্রত্যেকেই শহরে একটি ২৪ ঘন্টার ব্লাড ব্যাঙ্ক গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা জানান।” নতুন বোর্ড কাজ শুরু করলে এই প্রস্তাব তাঁরা পুরসভায় জমা দেবেন বলেও জানান জয়দীপবাবু।
নিখিলবাবু নিজে চিকিৎসক। জাতীয় সড়কের ধারে একটি নার্সিংহোমও রয়েছে তাঁর। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনায় জখমদের এনে ভর্তি করানো হয় এই নার্সিংহোমে। ফলে সর্বক্ষণের ব্লাড ব্যাঙ্কের প্রয়োজনীয়তা জানেন তিনিও। তিনি জানান, মাসখানেক আগে বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে এ সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দিতে বলেছেন তিনি। নিখিলবাবু বলেন, “স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.