সিপিএম-কংগ্রেস যৌথ অনাস্থায় হারল তৃণমূল
ত শনিবার ধর্মতলায় শহিদ সমাবেশ থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে একলা লড়ার কথা। ঘটনাচক্রে, তার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার টাকি পুরসভায় কংগ্রেস-সিপিএম একজোট হয়ে তৃণমূল পুরপ্রধানকে ‘অপসারণ’ করল।
পঞ্চায়েত বা পুরসভায় স্থানীয় স্তরে এই ধরনের ঘটনা ঘটেই থাকে। কিন্তু মমতার সাম্প্রতিক ঘোষণার নিরিখে বিষয়টি অন্য ‘মাত্রা’ পেয়ে গিয়েছে।
কংগ্রেস-তৃণমূল জোট বেঁধেই ওই বোর্ড গড়েছিল। পুরপ্রধান ছিলেন তৃণমূলের। তাঁর বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ তুলে অনাস্থা আনে সিপিএম। কংগ্রেস তাদের সমর্থন করে। ফলে অপসারিত হন পুরপ্রধান সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। এদিন অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটিতে ৯-৭ ব্যবধানে হেরে যান তিনি। সোমনাথবাবু বলেন, “আমার বিরুদ্ধে লিখিত ভাবে কোনও কাউন্সিলার কখনও দুর্নীতির অভিযোগ করেননি। আসলে কংগ্রেস কাউন্সিলাররা তাঁদের এলাকার জন্য বাড়িতি টাকা চেয়ে বার বার চাপ দিচ্ছিলেন। আমরা বসিরহাট ও বাদুড়িয়ায় কংগ্রেসকে সমর্থন করেছি। আর ওরা এখানে ব্যক্তিস্বার্থে সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওদের আসল চেহারা প্রকাশ করল!”
মমতা পঞ্চায়েতে একলা লড়ার কথা ঘোষণা করার পর প্রদেশ কংগ্রেস পাল্টা জানিয়েছিল, তারাও একলা লড়তে তৈরি। বস্তুত, কয়েকমাস ধরেই অধীর চৌধুরীর মতো কংগ্রেসের নেতারা তাঁদের জেলায় পঞ্চায়েতে একলা লড়ার কথা বলেছিলেন। এদিন টাকি পুরসভার ঘটনার পর স্বভাবতই তৃণমূলের তরফে জোটশরিক কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়বে। মমতা আপাতত যে রাস্তায় হাঁটছেন, তা হল দিল্লির কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখা এবং রাজ্যে কংগ্রেসকে আরও ‘কোনঠাসা’ করা। এই ঘটনায় সেদিক দিয়ে তৃণমূলের আরও ‘সুবিধা’ হবে বলেই দলের নেতাদের অভিমত।
২০১০-এ টাকি পুরসভার নির্বাচনে ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ছ’টি, সিপিএম ছ’টি, কংগ্রেস দু’টি, সিপিআই ও নির্দল প্রার্থী একটি করে আসন পেয়েছিল। কংগ্রেস ও নির্দলের সমর্থনে পুরবোর্ড গঠন করে তৃণমূল। প্রধানও তাদেরই। কংগ্রেসের অভিযোগ, পুরসভার কাজের ‘স্বচ্ছতা’ নষ্ট করছে তৃণমূল। স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, জোটের শরিক হয়েও হেনস্থা হতে হচ্ছিল তাঁদের। কিন্তু তবুও সিপিএমকে সরাতে তাঁরা জোটবদ্ধ ছিলেন। কিন্তু দিনের পর দিন যে ভাবে প্রধানের ‘দুর্নীতি’ বাড়ছিল, তাতে বাধ্য হয়ে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নেন। ৩ জুলাই সিপিএম পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। প্রস্তাব কংগ্রেস সমর্থন করলে যে পুরবোর্ড ভেঙে যাবে, তা জেনে গত কয়েকদিন দু’দলের নেতাদের বৈঠক হয়। কিন্তু কাজ হয়নি। যদিও এদিন সিপিএমকে সমর্থনের পরও কংগ্রেস নেতা অসিত পাত্র বলেন, “জোটেই আছি। থাকব। আমাদের অভিযোগ ছিল পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে। বার বার তাঁর দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছি। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করি। সিপিএমই আমাদের সমর্থন করে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষ বলেন, “কংগ্রেস যে আসলে সিপিএমের বন্ধু, এই ঘটনায় তা ফের প্রমাণিত। আসলে কংগ্রেস চাইছে সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে উন্নয়ন স্তব্ধ করতে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষই এর জবাব দেবে।” সিপিএমের জেলা কমিটিরি সদস্য শ্রীদীপ রায়চৌধুরী বলেন, “তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অনাস্থা এসেছিলাম। সেই প্রস্তাব সমর্থন করা কংগ্রেসের নিজস্ব বিষয়। এতে পঞ্চায়েতে ভুল বার্তা পৌঁছবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.